ভাবুন তো একবার, ঢাকা শহরের অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিছু রোবট, আর করে চলছে আমাদের দৈনন্দিন কাজগুলো। এই যেমন চানাচুর, চটপটি থেকে শুরু করে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি, জুতা সেলাই থেকে কাপড় সেলাই, কারো কারো দিকে তো আবার আঙুল তোলা হয় রাত-বিরাতে ম্যানহোল চুরির অভিযোগে। আরো খঁতিয়ে দেখলে বুঝতে পারবেন রোবটগুলো বানানো হয়েছে আজকালকার দিনে বাতিলের খাতায় চলে যাওয়া নব্বুই দশকের বিভিন্ন যন্ত্রপাতির আদলে। খুবই অদ্ভুত ঠেকছে তো? একটু খোলাসা করেই বলা যাক তবে।
১# মাহাতাব রশীদ
আম্পায়ার বট
নব্বই দশকের ঢাকার সবচেয়ে বাস্তব সমস্যা ছিলো ভরদুপুরে অলি-গলিতে খেলতে নামা ছেলেপেলেদের চিল্লাপাল্লা। প্রতিদিন দুপুরে ঠেসে খেয়ে ফরাশগঞ্জবাসী যখনই ভাতঘুমের মাঝামাঝি পর্যায়ে পৌঁছুত, খেলতে নামা ছেলেপেলেদের চিৎকার চেচামেচি শুরু হতো ঠিক তখনই। ড্রেন থেকে বল কে তুলবে, বলারের লাস্ট বলটা যে নো বল ছিলো, কিংবা দেয়ালের ওপরে বল উড়ে গেলে সেটা যে ছক্কা না, বরং আউট - এই নিয়ে তুমুল ঝগড়ায় এলাকারবাসীর ঘুম শিকেয় উঠতো। অবশেষে না পারতে এলাকার মোস্ট এলিজেবল ব্যাচেলর, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া রুহেল ভাই এক বটের ডিজাইন নিয়ে আসলেন পাড়ার ইলেকটিরিকের ম্যাজিশিয়ান জহির মিস্ত্রীর কাছে। দুজনের দুইরাতের পরিশ্রমে তৈরী হলো আম্পায়ার বট MPR, পরদিন বিকেলে ছেলেপেলেদের কাছে যখন হস্তান্তর করা হলো তাকে, সন্দেহের চোখে তাকে কিছুক্ষণ দেখে নিয়ে অবশেষে তাকে আম্পায়ার হিসেবে মেনে নিয়েছিলো দস্যিরা।
MPR নেহাত ভালোমানুষ রোবট। তার বডি বানানো হয়েছিলো ডাকবাক্সের ঢাকনা দিয়ে। তার প্রসেসর প্রত্যেকটা বলের গতি-নিশানা যাচাই বাছাই করে একদম সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারতো। এর পাশাপাশি দুই হাত দুটো ছুটে গিয়ে দেয়ালের ওপারের কিংবা ড্রেনের বলগুলোও উদ্ধার করতে পারতো নিমেষে। ছোট্ট একটা প্রজেক্টরও ছিলো সাথে, সন্ধ্যা নেমে এলে খেলা শেষে কোনো সাদা দেয়াল খুঁজে তাতে খেলার রিপ্লে দেখাতো সে। পাড়ার দুধভাত ছোটরা আদর করে তার গায়ে সেঁটে দিতো ওয়ার্ল্ড কাপের স্টিকার, শচীন কিংবা সৌরভ গাঙ্গুলির ট্যাটু।
তবে বলাই বাহুল্য, MPR এর আগমনে এলাকাবাসীড় ভাতঘুমের বিশেষ কোন গতি হয়নাই। আম্পায়ার বট MPR যতই নিঁখুত সিদ্ধান্ত দিক না কেন, কোন দস্যি খেলোয়াড়রা কোনকালেই সে সিদ্ধান্ত মেনে নেয় নাই। বরং দুদল মিলে চড়াও হতো বেচারা MPR এর উপর। মুখ বুঁজে সেসব সহ্য করে তারপরও MPR নিজের কাজ করে যেত একমনে।
২# রোমেল ফ্রস্ট
নামঃ হাওয়াই মিঠাই বট
ধরনঃ ফ্রেন্ডলি
অর্থনৈতিক অবস্থাঃ ভালনা
পাওয়ার সোর্সঃ ব্যাটারি চালিত। মাঝে মাঝে ব্যাটারিতে চার্জ দেওয়ার পয়সাও থাকেনা বেচারার।
এই রোবটের গল্প হচ্ছে তার একটা হাত কোন একটা দুর্ঘটনায় ছিঁড়ে পড়ে যায়। কিন্তু টাকার অভাবে সে আর হাত সারাই করতে পারেনি। তাই দেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে সে নিজে নিজেই হাত বানাচ্ছে। আর পার্টস খুঁজে পাওয়ার জন্য হাওয়াই মিঠাই-ওয়ালার পেশা বেছে নিয়েছে। কিছু ইনকামও হচ্ছে + মাঝেসাঝে ছেড়া হাতের জন্য প্রয়োজনিয় একটা দুটা পার্টস পাওয়া যাচ্ছে। এক ঢিলে দুই পাখি।
ব্যাকস্টোরিঃ ছোটবেলায় গ্রামে আঁকিয়ের পাড়ায় কিছু কটকটিওয়ালা আসতো আর ঘণ্টা বাজিয়ে বাজিয়ে পাড়ায় ঘুরতো। তাদের ঘণ্টার আওয়াজ শুনে বোঝা যেত কটকটিওয়ালা এসেছে। ঘণ্টার আওয়াজ শুনলেই পাড়ার পিচ্চিপাচ্চারা ঘরের ফেলে দেওয়া কনডেন্সড মিল্কের টিন/হারিকেন/বাতি/পুরনো থালাবাসন এইসব খুঁজে বের করে কটকটিওয়ালাকে দিতো। বিনিময়ে পেতো কটকটি, আঁচার বা হাওয়াই মিঠাই। এমনও হতো বাড়িঘরের ভাল জিনিসপত্র দিয়ে দিতো অনেক সময়। ফলাফল, কটকটির সাথে জুটত বাড়ির বড়দের মাইর!
৩# আইডিয়া: সিমু নাসের, গল্প: মাহাতাব রশীদ, আঁকা: আরহাম হাবীব
নব্বই দশকজুড়ে এলাকার সব ম্যানহোলের ঢাকনা হাওয়া হয়ে যেত প্রায়ই, যার ফলে ঘটতো নানান বিড়ম্বনা। আর এই ম্যানহোলের ঢাকনা চুরির দায় গিয়ে পড়তো হিরোইঞ্চি আর নেশাখোরদের ঘাড়ে। তবে নব্বই দশকের শেষদিকে এক অখ্যাত পত্রিকার কমবয়সী সাংবাদিক আবিষ্কার করে বসলো এক বিশাল ষড়যন্ত্রের। এতো বছর জুড়ে কিছু রোবট গোপনে ষড়যন্ত্র করছিলো মানুষদের বিরুদ্ধে, তাদের হাতে তৈরী হয় এক ম্যানহোল চোর রোবট বাহিনী, TOSHKOR এর।
রাস্তার নিচে সুয়ারেজ লাইনের ভেতরেই ষড়যন্ত্রী রোবটেরা তৈরী করছিলো এক মস্ত মেশিন, যা দিয়ে দেশের সব রোবটকে বিপ্লবী করে ফেলা যাবে, আর সে মেশিন তৈরীর জন্যই শয়ে শয়ে ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি করে আনতো TOSHKOR বটগুলা। কিন্তু শেষমেষ শেষ রক্ষা হয়নি, এক আলাভুলো বট TOSHKOR v4.20 এর বোকামির কারণে এক ছোকড়া সাংবাদিকের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় অনেকে। তারপর কেঁচো খুড়তেই সুয়ারেজ লাইন থেকে বেড়িয়ে আসে এই বিশাল ষড়যন্ত্রী মেশিন।
হাইকোর্টে ঝড়তোলা এক শুনানির পর আদালতের রায়ে নিশ্চল করা হয়েছিলো মূল ষড়যন্ত্রী রোবটগুলোকে। তবে TOSHKOR বটদের তেমন গুরুবিচার হয়নি, তাই নব্বই দশকের শেষভাগ পর্যন্ত ঢাকার অলিগলিতে দেখা যেতো ছিঁচকে চোরের মতো খুব সাবধানে TOSHKOR বটদের ঘুরে বেড়াতে। অনেকের মুখে শোনা যায়, চাকতি সদৃশ কিছু পেলে অনেক TOSHKOR বট তাদের বুকের ডালা খুলে ভেতরে রেখে দিতে চাইতো। অবশ্য একটা কড়া সুরের বাঁজখাই ধমক খেলেই সম্বিত ফিরে পেত তারা, এরপর ছুটে পালাতো পড়িমড়ি করে।
৪# জাহিন আবরার
SHILAI-DROID SHE1LA
The black and gold cyborg SHILAI-DROID SHE1LA takes her sewing game really really seriously.
৫# আহমেদ ফাহিম
KHAIRULLAH | SERVICE CLASS DROID-K001
PRIMARY CODE: নৈশ প্রহরী
SECONDARY CODE: সেবক
Built of multiple transistors from Casio fx calculators and E-star E-23 (Brick Game) consoles to form a performing integrated circuit that can process problem solving, planning and learning.
AUDIO COMS:
Droid is voice impaired. A Sony TCM-459V voice recorder installed to render out voice lines recorded from environment over time. The droid playfully intercepts any new incoming voice onto a cassette to later render his desired speech.
STRUCTURE:
An exoskeleton of Vespa Primavera 50cc chassis welded to form a basis of humanoid outlook. Limbs of different found materials for sturdy fast locomotion.
POWER:
4stroke engine for mid-day duty. kerosene burner variant for noise reduced night patrol.
OWN ADAPTIVE TRAITS:
Mechanic utility with multiple tool work around.
Fuel canister for collection of work remuneration.
12’’x 5’’ blackboard to store new found data due to lack of rom storage.
Umbrella fabric and polythene to help protect hardware against harsh weather.
Bamboo brace reinforcement with rickshaw hardware to support torso weight and enhance mobility
Khairul’s favorite orange tire stitched sandals that makes him feel close to humankind and to the ground।
৬# রাফিউজ্জামান রিদম
মুসিবত/ muchi bot
মুচি-বট একটি ফেইল্ড প্রোগ্রাম। সেসময় জনসেবায় "সময় বাঁচানোর" উদ্দেশ্যে এক জুতার কোম্পানি শহরে ১০০টির মত মুচি-বট টেস্ট প্রোগ্রাম হিসেবে ছাড়ে। এর মাঝে অর্ধেক গাড়ির নিচে চাপা পরে, কিছু নষ্ট আর কিছু কোম্পানি শহর থেকে উঠিয়ে নেয়।এছাড়াও, মুচিবট অনেক ধীর গতির, সময় বাঁচাতে কাজ করলেও এর সার্ভিসিং-এ সময় উল্টা বেশি যায়।
এইসব এর মাঝে বেঁচে যাওয়া একটি বট "মুসিবত"। শহরে অনেকদিন ফেইল্ড মুচিগিরি করে সে এক টোকাই এর পোষা প্রাণী হয়ে ঘুরে। উচ্চারনের কারনে, ক্রমেই তার নাম মুচিবট থেকে মুসিবত হয়ে যায়। সেই টোকাই তার মুখে স্প্রে-পেইন্ট দিয়ে একটা হাসি মুখও এঁকে দেয়।
মুসিবতের তেমন কোন ঝামেলা নেই। ঘুরে ফিরে, সোলার পাওয়ারে চার্য হয়। মাঝে মধ্যে এক দু'টা জুতা পালিশ বা সেলাই করে।ও হ্যাঁ মুসিবতের একটাই মুসিবত, প্রায় ধাক্কা লেগে পরে যায়, তখন তার নিজের জনসেবা প্রয়োজন হয় ।
৭# অনন্ত রাহাত রাকীব
শর-Bot .2.0
চৈত্র মাসের ঠা ঠা রোদ। সন ১৯৯৮। মধ্যদুপুরে ঝিমিয়ে পড়া মতিঝিল অফিসপাড়ার নীরবতা ভাঙে কর্কশ মাইকের শব্দ।
"এইবার না আসিলে বাড়িতে, আগুন লাগাইয়া দিমু আমার শাড়িতে। আমি তোমার নামে নালিশ করছি যাইয়া পুলিশ ফাঁড়িতে..."
লোডশেডিং আর গরমে অতিষ্ঠ পথিকের চোখ জ্বলজ্বল করে। এপাড়ায় যাদের নিয়মিত চলাচল, তাদের কাছে মমতাজ বুবুর এ গানের মাজেজা অন্যরকম। তাই দূর থেকে পুরনো মাইকের ঘষঘষে শব্দও যেন কানে এক পশলা বৃষ্টির মত শোনায়...
কারণ, আসছে কলজে-ঠান্ডা করা 'মতি মিয়ার সি-ভিটা শরবত'!
দশ বছরের বেশি সময় ধরে মতি মিয়া এই এলাকায় শরবত বিক্রি করে। প্রতিদিন দুই আড়াইশো গ্লাস বিক্রি হয় অনায়াসেই।
ইতিমধ্যে তার সুনাম ছড়িয়েছে শহরজুড়ে। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন তৃষ্ণা মেটাতে ছুটে আসে তার খোঁজে। আর এর পুরো ক্রেডিট মতি মিয়ার বিশ্বস্ত সহচর ''শর-bot ২.০'' এর!
কচুক্ষেত বাজারের ভাঙারি-দোকানদার আব্বাস মিস্ত্রীর হাতের ছোঁয়ায় আজ থেকে এগারো বছর আগে আলোর মুখ দেখেছিল ''প্রজেক্ট শর-bot''... তারই আপগ্রেডেড ভার্সন আজকের এই Scintillating & Highly Operative Relaxant Bot বা S.H.O.R bot.
সবার প্রিয় মতি মিয়ার শর-bot চলে রিচার্জেবল হেভি-ডিউটি ব্যাটারিতে। তার প্রিয় শিল্পী মমতাজ। প্রিয় ফ্লেভার অরেঞ্জ। প্রিয় নায়ক সালমান শাহ।
তুমুল জনপ্রিয়তার কারণে মতি মিয়া আর আব্বাস মিস্ত্রীর নেক্সট প্রজেক্ট-
''শর-bot 3.0 (beta)'' ...
তারা সকলের দোয়াপ্রার্থী!!
৮# অধরা পতত্রী
৯# ফিউরি ইয়ামামটো
সিনেমাওয়ালা
Wartime Contribution (1971): ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাকিস্তানের Mech platoon ঢাকায় হামলা চালায়, তাদের প্রাইমারী অবজেক্টিভ বাংলাদেশের মিলিটারাইজড এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবোটিক্স প্রোগ্রাম হাতিয়ে নেয়া। একবার বাংলাদেশের হাত থেকে M.I.R প্রোগ্রাম টা ছিনিয়ে নিতে পারলেই বাংলাদেশ সম্পূর্ণ ডিফেন্সলেস, বাংলাদেশের গ্রাউন্ড ইউনিট এর পক্ষে পাকিস্তানি Mech এর armor piercing রাউন্ডস সামাল দেয়া দুঃসাধ্য প্রায়। পাকিস্তানি মেক ইনভেশন এর ৭ দিন এর মাথায়ও ঢাকায় MIR প্রোগ্রাম খুজে না পেয়ে পাকিস্তান সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা থেকে তাদের mech platoon উঠিয়ে নিয়ে চট্টগ্রাম এর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার, কিন্তু তারা খুব জলদিই বুঝতে পারে ঢাকা থেকে বের হওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়, ঢাকার সব মেজর রোড ধ্বংসস্তূপ দিয়ে বেরিকেড দেয়া। এই বেরিকেড মানুষ অথবা ছোট যানবাহন এর ক্ষেত্রে পাড়ি দেয়া সম্ভব হলেও পাকিস্তান এর বিশাল mech এর পক্ষে সম্ভব না, কখন-কিভাবে-কারা এটা করলো এই চিন্তা শেষ হবার আগেই পাকিস্তানি mech-platoon এর দিকে ঝাকে-ঝাকে ধেয়ে আসে সবুজ রঙ এর হিউম্যানয়েড বটস। প্রত্যেকটি বটের কাধে মাউন্টেড সেলফ গাইডেড মিসাইল লঞ্চার এবং হাতে ৫০ ক্যালিবার মেশিন-গান। এই দৃশ্য দেখে পাকিস্তানি mech platoon স্তব্ধ, তারা মুক্তিটেক এর MT-71 Gallantry বট এর অ্যামবুশে পরেছে। মুহূর্তেই বিকট শব্দে ফায়ারিং শুরু করে বট গুলো, পাকিস্তানি Mech এর পাইলটেরা প্রথমে রিটার্ন ফায়ার করলেও পাইলট-বিহীন MT-71 Gallantry বটগুলো চরম ক্ষিপ্রতার সাথে গুলি এড়িয়ে যায় এবং একে একে ধ্বংস করে দেয় ১৭ টা পাকিস্তানি Mech । অবস্থা নাজেহাল বুঝতে পেরে বাকি ২৩ টা পাকিস্তানি mech আত্মসমর্পণ করে। পাকিস্তানের প্ল্যান তাদের উপরই ব্যাকফায়ার করে, এখন বাংলাদেশের মাটিতে তারা ডিফেন্সলেস। যে ৪০ টা mech বানাতে পাকিস্তানের দেড় বছর সময় লেগেছিল তা এখন চাইলেই কয়েক মাসে পাকিস্তানে বানিয়ে ফেলা সম্ভব না। এ অবস্থার সুযোগ নিয়ে মুক্তি বাহিনী এবং নতুন সংগঠিত Weaponized autonomous regiment উরফে “কষাই-বাহিনীর” সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনী বাংলাদেশে বিভিন্ন অপারেশন চালায়। মুক্তিযুদ্ধে Weaponized autonomous regiment বা “কষাই-বাহিনী” মূলত ট্যাঙ্ক এর কাজ করে, তাদের মুল উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিবাহিনীদের নিরাপদে শত্রুদের ফ্রন্টলাইন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া। এছারা শত্রুদের বাঙ্কার খালি করার কাজেও Weaponized autonomous regiment বিশেষ ভুমিকা পালন করে। যৌথবাহিনীর প্রচেষ্টায় টানা ৯ মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তান আত্মসমর্পণ করে।
Post war (1971-1988): যুদ্ধের পর Weaponized autonomous regiment (WAR)-এ সার্ভিং বটের সংখ্যা ৪০০ থেকে ১৪৭ এ এসে দাঁড়ায়। যেগুলো পরবর্তীতে সাময়িক কালের জন্য বাংলাদেশ আর্মিতে ব্যাবহার করা হরা হয় , এছাড়া যুদ্ধপরবর্তী বাংলাদেশের অনেক স্থাপনা নির্মাণে MT-71 Gallantry বট হেভি-লিফটার হিসেবে কাজ করে। ১৯৮৮ সালে মুক্তিটেক MT-88 Independence নামে নতুন বট প্রোডাকশন শুরু করে এবং ১৯৭১ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সার্ভিস দেয়ার পর MT-71 Gallantry বট গুলোর আর্মোর এবং অস্ত্র ছাড়িয়ে নিয়ে ডিস্মেন্টল করে দেয়া হয়।
Current time (1992): সিনেমাঘর নামে একটি ছোট নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন তাদের প্রথম বড় প্রজেক্টে হাত দেয়, স্বল্পমূল্যে সবার জন্য VR সিনেমা দেখার সুযোগ করে দেয়া। ১৯৯০ এর শুরুর দিকে বাংলাদেশে VR টেকনোলজি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে, ঢাকার আশে পাশে গড়ে উঠেছে VR সিনেমা ষ্টেশন। কিন্তু এইধরনের বিনোদন উপভোগ করার মত সাধ্য অনেকেরই নেই। তাই তারা নিজেদের উদ্যোগে একটি মোটামোটি VR স্টেশন বানিয়ে ফেলে, কিন্তু জিনিষটা নিয়ে ঢাকার রাস্তায় সারাদিন ঘুরে বেরানো মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়, আর প্রচুর ব্যয়বহুলও বটে। তাই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ভাঙ্গারি কারিগর দিয়ে একটা carrier রোবট বানিয়ে নেয়া হবে, যেই কথা সেই কাজ। জাবেদ মিয়া নামের একজন ভাঙ্গারি কারিগরকে কমিশন দেয়া হয় একটি হেভি লিফটিং বট বানানোর জন্য, জাবেদ মিয়া তার ভাঙ্গারির স্তূপ খুজে একটা পারফেক্ট বট স্কেলেটন পান। গায়ের সিরিয়ালে লেখা MT-71 Gallantry । তিনি এই বটের সাথে অন্য আর কিছু বটের পার্টস জোড়া দিয়ে বানিয়ে ফেলেন একটি carrier বট, কাধের মাউন্টিং ব্র্যাকেটে লাগিয়ে দেন একটি স্পিকার। একজন নীলক্ষেতের সফটওয়্যার ডিজাইনার কাজ করে তার জন্য, আতিক , তিনি আতিককে দিয়ে বটের চিপ মুছে তাতে নতুন কোড লিখে দেন।
এখন “সিনেমাওয়ালা” নামের বটটা সিনেমা ষ্টেশন হাতে সারা ঢাকা শহর ঘুরে বেরায়, আর “৩ টাকায় ভী আর” “৩ টাকায় ভি আর” বাজতে থাকে তার স্পিকারে। কেউ জানে না তার অরিজিন।
১০# কাজী মারুফুর রহমান
বাংলাদেশে রোবটদের আগমনের ছোট্ট একটা ইতিহাস বলে নেই সবাই কে।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বাঙালিদের অবস্থা তখন বেগতিক। তারা প্রায় নিরস্ত্র এদিকে শত্রুরা আরো ট্যাংক নিয়ে আসছে দেশে। সবাই ধরেই নিয়েছে এবার আর রক্ষে নেই। কিন্তু এমন এক সময়ে বাঙালিদের আশার আলো হয়ে আসে বিজ্ঞানী নুর। তিনি তার অসাধারণ animatronics আর robotics এর সমন্বয়ে তৈরি করেন warbots. যা খুব সহজেই ট্যাংকের গোলা সহ্য করতে পারতো। তিনি নিজে থেকে ৭টি warbot তৈরি করেন... আর বাকিটা ইতিহাস।
এভাবেই ধীরে ধরে আরো রোবট তৈরি হতে থাকে দেশে, আর ধীরে ধরে তারা দেশের সংস্কৃতির অংশ হয়ে পরে। পরের জেনারেশন রোবট আসে যা AI based, অর্থাত এরা প্রায় মানুষের মতোই অনুভূতি সম্পন্ন। কিন্তু এটা অনেকেই বিপদের ইঙ্গিত মনে করেন এবং 3rd জেনারেশনের রোবটদের বুদ্ধিমত্তা একটু কমিয়ে দেয়া হয়। ধীরে রোবটরা হয়ে উঠে আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। সব পরিবারেই এক বা একাধিক রোবট সদস্য আছেই।
কিন্তু ব্যাতিক্রম হলো রাশেদের পরিবার। আর আমার গল্প এই রাশেদকে নিয়েই
রাশেদের পরিবারের সবাই রোবট বিরোধী একমাত্র রাশেদ ছাড়া। সে রোবটদের বিশাল ফ্যান। সে বারবার বায়না করে বাবা মায়ের কাছে একটা রোবটের জন্যে, at least একটা রোবট কুকুর হলেও সে খুশি, কিন্তু কেউ রাজি হয় না। স্কুলের গলিতে একটা puppy bot আছে যেটা রাশেদকে খুব পছন্দ, মাঝেমধ্যেই সে তেল খাওয়ায় সেটাকে। সে এবার জন্মদিনে এটাকে গিফট হিসেবে চাবে বাবার কাছে। তাই সে পরীক্ষায় ভাল ফলাফল আনার সাথেও বাসার সব কাজে মা বাবা আর দাদীকে সাহায্য করছে। যাতে puppy bot টার কথা বললে কেউ মানা করতে না পারে। সে নামও ঠিক করে রেখেছে puppy bot টার জন্যে "পুচি"। এদিকে জন্মদিন ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে তার। জন্মদিন আগের দিন সে ঠিক করলো সে পুচিকে গ্যারেজে নিয়ে রাখবে পরের দিন সবাইকে দেখিয়ে কান্নাকাটি করে হাতে পায়ে ধরে রাজি করাবে যাতে রাখতে দেয় যা ভাবা সেই কাজ। কিন্তু স্কুলের গলিতে গিয়ে কোথাও পুচিকে পেলনা সে। হঠাত দুরে কোথাও সে পুচির আর্তনাদ শুনতে পেল এবং সাথে সেদিকে দৌড় লাগালো। সে দেখতে পেল এক অন্ধকার গলিতে কিছু ছেলে তাদের রিমোট কন্ট্রোল রোবট নিয়ে পুচিকে ঘিরে ধরেছে। সর্বনাশ, bot battle! মনে মনে ভাবলো রাশেদ। পুচি ছোট ও এদের সাথে পারবে না। রাশেদ থামানোর চেষ্টা করলো তাদের। কিন্তু ২ জন তাকে ধরে ফেললো এবার battle দেখালো জোর করে। রাশেদের চোখের সামনে নিমেষেই ২টা রিমোট কন্ট্রোলড রোবট disassemble করে ফেললো আর রাশেদ কিছুই করতে পারলো না। সে রাগে ক্ষোভে ছেলে গুলোকে মারতে গেল, কিন্তু ছেলে গুলো রাশেদের উপরও তাদের রোবট চালিয়ে দেয়। সন্ধ্যায় মার খেয়ে জামা ছিড়ে হাত পা চিলে বাসায় ফিরে রাশেদ। শরীরের ব্যাথার থেকেও মার মনের কষ্টটা ছিলো বেশি, পুচিকে হারাবার। সারারাত সে কান্না করে। জন্মদিনের দিনও সে সারাদিন রুমে বসে থাকে। এটা দেখে ওর দাদীর টেনশন হয় একটু। শেষমেশ রাশেদের কাছে যায়। বলে "তোর দাদা এই রোবট রোবট করতে গিয়েই যুদ্ধে নিজের জীবন হারাইছে, এজন্যই আমরা চাইনা এই পরিবারে কোনো রোবট আসুক, আর আজ তুই একটা bot puppy র জন্যে এত কষ্ট পাচ্ছিস, দেখ তারমানে রোবট না আনাই ভালো", কিন্তু এতকিছু শুনে রাশেদ এবার হাউমাউ করে কেঁদে সব ঘটনা বলে দাদীকে। দাদী কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে "তোর দাদার পুরানো গ্যারেজে ১টা বট থাকার কথা, ঐটারে সারা, ঐ বদমাশ গুলোকে একটা উচিত শিক্ষা দে। ওদের Bette এ ওদেরকে হারায় দে, এতবড় সাহস আমার নীতির গায়ে হাত তুলে, ওদের একদিন কি আমার ১ দিন", এটা শুনে রাশেদ একটু হাসে।
পরেরদিন সে হাজির হয় সেই পুরাতন গ্যারেজে, একটা box এ সে পায় একটা ভাঙাচোরা রোবট যার অনেক part ই missing. রাশেদ দেখেই বুঝতে পারে এটা একটা warbot আর যুদ্ধের কারণেই এটার এই অবস্থা। সে বুঝতে পারলো এটা তার নিজের ম্যানুয়েল ভাবে চালাতে হবে কারণ এটার কোনো AI নাই। কিন্তু মেরামত করতে গিয়ে সে রোবটটার কাধের কাছে একটা রেডিও পায় যা থেকে এমন সব কতা আসছিল যা কোনো রেডিও স্টেশন থেকে আসছিল না। কিছু ঘাটাঘাটি করে বুঝতে পারে এই রেডিওর ভিতরে ১টা AI বিদ্যমান। সে অবাক হয় ১মে কারণ এত আগে AI ছিল না, কিন্তু পরে মেনে নেই, কারণ ওরই লাভ AI থাকলে। ও হারানো পার্ট গুলো ঐ গ্যারেজে রাখা পুরানো বিভিন্ন জিনিস দিয়ে বানাতে থাকে একটা ফ্রিজের দরজা আর একটা পোস্ট box দিয়ে হাত দুটো মেরামত করে, ১ পায়ে পুরনো চুলা অন্য পায়ে কিছু খালি সিলিন্ডার আর ট্রাফিক লাইট ব্যাবহার করে। পিছনে বয়লার টা সে নতুন করে লাগায়।আর হেলমেটের জন্যে সে ডিজাইন নেয় রিক্সার হুড থেকে। এই পুরো সময়ই সে রেডিওর এর AI এর সাথে কথা বলতে থাকে। AI টা একটু বোকা, নিজের নামও জানে না। কিছুদিনের ভিতরেই তাদের ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায় আর রাশেদ তার নাম দেয় "পুচি ২.০"(চলবে)
। আর এভাবেই তাদের adventure শুরু হয় এবং ধরে ধরে রাশেদ পুচি ২.০ এর আসল পরিচয় জানতে পারে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে তার শ্রদ্ধা আরো বেরে যায়।
১১# রাফিদ রহিম
পুতুল নাচিয়ে
বৈশাখ কিংবা যে কোন মেলায় বাঙ্গালীর অন্যতম আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান পুতুলনাচ।
পুতুলনাচ সহজলভ্য করার লক্ষে বানানো হলো পুতুলনাচিয়ে রোবট।
কাজ তার বৈশাখ কিংবা যে কোন মেলায় পুতুলনাচ দেখানো। কিন্তু যখন কোন উৎসব থাকে না তখন পুতুলনাচিয়ে রোবট বেকার থাকে। এসময় সে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে শিশুদের পথশিশুদের পুতুলনাচ দেখিয়ে আনন্দ দিয়ে থাকে। রাস্তায় তাকে দেখলেই শিশুরা দৌড়ে আসে তার কাছে এবং পুতুলনাচ দেখানোর আবদার করে বসে ।
তার ছোটখাটো আকার এবং স্বল্প কার্যক্ষমতার জন্য সে প্রায়েই বড় বড় রোবট কিংবা মানুষ দাড়াই লঞ্ছনা/অপমানের শিকার হয়। কিন্তু শিশুদের কাছে সে বার বারেই প্রিয় এবং ভালবাসার একটি রোবট ।
১২# অরন্য আবীর
নামঃ কান খোঁচানী-Bot
কারিগরঃ করিম শেখ আর জলীল বেপারী।
কাজঃ অর্থের বিনিময়ে মানুষের কানের ময়লা পরিষ্কার করে দেয়া।
জন্ম ইতিহাসঃ করিম শেখ পেশায় একজন কান পরিষ্কারক ছিলেন। কিন্তু লোকাল বাসের সাথে একটি দুর্ঘটনায় তিনি চলাচল শক্তি হারিয়ে ফেলেন। জীবিকা নির্বাহের তাগিদে তিনি তখন তার বন্ধু ধোলাই খালের ইঞ্জিনিয়ার জলীল বেপারীর সাহায্য নিয়ে বানিয়ে ফেলেন "এই কান খোঁচানী-Bot." । এখন এই রোবটটি সারাদিন ঘুরে ঘুরে মানুষের কান পরিষ্কার করে সন্ধ্যার সময় টাকা-পয়সা এনে দেয়। তারপর করিম শেখ এই রোবটের উপর বসেই পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় বাজার-সদাই করে আনেন।
গঠন বিবরণঃ রোবটটির বডি স্ট্রাকচার মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত। একেবারে নিচে রয়েছে বল বিয়ারিং চাকায় ভর করা একটি কাঠের পাটাতন যা সরল একটি ইঞ্জিনের মাধ্যমে চলাচল করতে পারে। পাওয়ার সাপ্লাই আসে একটি গাড়ির ব্যাটারী থেকে।
মধ্যভাগে রয়েছে একটি কাঠের চেয়ার যাতে বসে গ্রাহকরা এই রোবটটির সেবা নিতে পারে। চেয়ারের মধ্যে একটা বিল্ট-ইন ক্যাশ বক্স রয়েছে। চেয়ারের হাতলের সাথে একটা ওয়্যাকম্যান সেট সহ চোঙ্গা মাইক আছে যা দিয়ে রোবটটি তার গ্রাহকদের দৃষ্টি আকর্ষন করে। চেয়ারের উপরিভাগে রয়েছে ভাঙ্গারী দোকান থেকে কেনা দুইটি পুরানো সিসি ক্যামেরা, যার মাধ্যমে রোবটটি চারপাশ দেখতে পায়।
রোবটটির একেবারে উপরের দিকে রয়েছে ঢেউটিন দিয়ে বানানো একটি সার্কুলার হেড ক্যাপ যা কান পরিষ্কারের সময় গ্রাহকের মাথা স্থির রাখতে সাহায্য করে। এই ক্যাপের মধ্যেই বিল্ট-ইন ভাবে রয়েছে কান পরিষ্কারের জন্য বিভিন্ন টুলস। একটি চিমটা দিয়ে কানটিকে ভালো মতো ধরে অন্য আরেকটি টুলস এবং কটন বাড দিয়ে কান থেকে ময়লা পরিষ্কার করা হয়। একটি স্পঞ্জে সেই ময়লা জমা করা হয় যা পরবর্তীতে চেঞ্জ করা হয়। একটি লাইট রিফ্লেক্টর আছে যা কানের ভিতরে আরো ভালোভাবে দেখতে সাহায্য করে। একটি এন্টেনা আছে যা রোবটটিকে তার কারিগরের সাথে যোগাযোগ রাখতে সাহায্য করে।
কার্যপদ্ধতিঃ নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ক্যাশ বক্সে ফেলে গ্রাহক চেয়ারটিতে বসলে রোবটটি ক্যাপটিকে গ্রাহকের মাথায় বসিয়ে কান পরিষ্কারের কাজ শুরু করে দেয়। ( উল্লেখ্য, এখানে ভাংতি টাকা ফেরত দেবার সিস্টেম নাই, তাই নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকাই ক্যাশ বক্সে ফেলতে হবে।
১৩# হাসনাত হাবীব
A game Bot
১৪# সাইফ মাহমুদ
Rocket
currently working only to transport passengers from Dhaka-Barisal-Dhaka.
Previously was used to guard the port of the city from Kaiju attacks. Rocket is an icon to the city of Dhaka and a hero we should never forget about.
১৫# সুজয় স্কেচেস
বেবি মাইক বট
এই বটের মূল কাজ শহরের বিভিন্ন জায়গায় হারানো বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা এবং প্রচার করতে করতে হারানো শিশু, মানুষ খুজে বের করা। দ্রুত চলাচলের জন্য এর বডির পেছন অংশ তৈরী করা হয়েছে ব্যাবিট্যাক্সির পেছনের অংশ দিয়ে আর সামনের অংশে রয়েছে মাইক যা দিয়ে এলাকায় এলাকায় নিখোঁজ ব্যক্তির বর্ণনা জানানো যায়। উপরের মনিটরে নিখোঁজ ব্যক্তির ছবি দেখানোর ব্যবস্থা আছে। কোন ব্যক্তি বা শিশু হারিয়ে গেলে তার কোন ছবি স্ক্যান করে মেমরিতে রেখে তাকে খোঁজায় এই বট পারদর্শী। আর কোন শিশু যদি ছেলেধরার হাতে প্ড়ে তার থেকে উদ্ধার করার জন্য এই রোবটের রয়েছে বিশেষ ডিফেন্স মেকানিজম……আর উদ্ধার করার পর হারানো ব্যক্তির ক্ষুধা মেটানোর জন্য রয়েছে রিজার্ভ করা খাবার। খুজে পাওয়ার সাথে সাথে যেন বাড়িতে নিখোজ ব্যক্তিকে খুজে পাওয়ার খবর পৌছানো যায় এজন্য এতে রয়েছে টেলিফোন সংযোগ। আর দুর্গম জায়গায় নিরবিচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক পেতে রয়েছে এন্টেনা।
১৬# তাজরিয়ান সিদ্দিকী
বেলাবট
ছোটবেলায় আম্মুর সকাল সকাল রুটি/পরোটা বানানোর কষ্ট দেখে তখন এমন একটা রোবট এর ডিজাইন রেডি করে ফেলি বয়স তখন ৮/৯ হবে
আমি চিন্তা করতাম কিভাবে হেল্প করা যায় আম্মুকে
আমি আমার এক ফুফাতো ভাইকে এই ডিজাইনটা দিয়েছিলাম উনি সিভিল ইন্জিনিয়ারিং পড়ছিলো তখন আমি তাকে বলে ছিলাম ভাইয়া আম্মুর জন্য এই রোবটা বানানো শুরু করে দাও সে মুচকি হেসে ছিলো, এখন বুঝতে পারি সেই মুচকি হাসিটা কেন দিয়ে ছিলো
এমন একটা রোবট যদি হতো আমার আম্মুর কষ্ট কম হতো এমনই ভাবতাম
আম্মু এমন আজগুবি চিন্তা ভাবনা করতে নিষেধ করায় এটার পর আর কোন ডিজাইন রেডি হয়নি।
১৭# ওয়ালিদ খান
বটপটি on Wheels
১৮# জাহিদ হোসাইন
নাম- BOT-তলার BOT-পার
জীবনের লক্ষ্য- "পকেট মেরে রকেট হবো!"
পেশা- পকেটমার রোবট
ওস্তাদের নাম- কদম আলী
অন্য সাথী- চেলা রোবট
জন্ম- ১৯৯৫ সালের জুলাই মাস
জন্মস্থান- ধোলাইখাল, ঢাকা
উচ্চতা- আনুমানিক ৭'২" (২.১৮ মিটার)
ওজন- টেম্পো, কনভেয়ার আর কাউন্টার ওয়েইট সহ কার্ব ওয়েইট প্রায় ৯০০ কেজি (নিজস্ব ওজন ৩০০ কেজি)
এনার্জি সোর্স- টেম্পোর ব্যাটারী।
মূল্য- আনুমানিক ২.৫ লক্ষ টাকা (তৎকালীন)
বর্তমান অবস্থান- চানখারপুল, ঢাকা। ওস্তাদ কদম আলী শ্রীঘরে। বর্তমানে জংগধরা BOT-পার এক ফেরিওয়ালা ভুয়া ডাক্তারের সাগরেদ। ডাক্তার তথাকথিত চর্মরোগ (Code word - Pelvis Prickly) বিশেষজ্ঞ। চেলা রোবট এখন এক ধনীর বাসার শো-পিস।
ডিজাইনের বিশেষ দিক-
১. মূল রোবটের ওজন এর ভারসাম্য রাখতে কাউন্টার ওয়েইট এর ব্যবহার।
২. টেম্পোর ব্যাটারি স্বাভাবিক এর থেকে বড় রোবট আর কনভেয়ার চালানোর জন্য।
৩. কনভেয়ার সাধারণত ঢাকা থাকবে। ছবিতে কনভেয়ার বোঝাতে দেখানো হয়নি।
8. টপ ও ফ্রন্ট ভিউ দেয়া হলো বোঝার সুবিধার জন্য।
উল্লেখযোগ্য যন্ত্রাংশ-
ভেসপা টেম্পোর বডি, নিপ্পন টিভি, ৯০ দশকের সার্ভেইলেন্স ক্যামেরা, প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি থেকে নেয়া কনভেয়ার বেল্ট, স্টিলের ট্রাংক, পুরাতন জাহাজ আর গাড়ি থেকে নেয়া ধাতব পাত ইত্যাদি।
কাজ-
১. মানুষ/পুলিশ দেখামাত্র তার ওস্তাদ কদম আলীকে সাবধান করা।
২. টিভি দেখিয়ে মানুষকে ব্যস্ত রাখা।
৩. নিজে/চেলা রোবটের মাধ্যমে টিভি দেখা মানুষের পকেট মারা। একজন পকেট মারলে আরেকজন আশপাশ নজর রাখে।
৪. পকেট মারার পর বটুয়া কনভেয়ার মারফত লোহার বাক্সে জমা করা অথবা সরাসরি ওস্তাদকে দেয়া।
৫. বিপদ দেখলে ইঞ্জিন চালু করে পালানোর প্রস্তুতি নেয়া।
১৯#মেহেদী হাসান নিলয়
কুড়ানটিস
মহল্লার বল-কুড়ানি রোবট- অস্থায়ী উইকেটকিপার, স্থায়ী আম্পায়ার আর স্কোরার; ছেলেপেলেদের দোস্ত (কারণ ড্রেনের বল তুলে দিয়ে স্যানিটাইজও করে দেয়) আর বড়দের ক্রিপটোনাইট, কারণ ওই চোখের দিকে তাকালেই বারান্দায় আছড়ে পড়া বল কুড়াতে আসার জন্যে আর না করা বা ধমকানো যায় না।
২০# গোলাম তামজিদ
90s' শুনলেই আবছা স্মৃতিতে মনে পরে সে সময়ের গান, কার্টুন, মুভি, সিরিয়াল সহ এক্সটিনক্ট সব খেলা, খেলনা আর অবশ্যই গ্যাজেটস! পাড়া প্রতিবেশি মিলে পিকনিক, সাথে বড়দের হ্যান্ড মেইড সাউন্ড সিস্টেমের প্রতিযোগিতা, শুক্রবারে সবাই ভিড় করে টিভি দেখা সহ কত কি! ঠিক যেন ভিণ্টেজ ফিলটারে রঙিন ফ্লাসব্যাক! মনে পরে, কমিউনাল ব্যপার টা এত টাই বিস্তৃত ছিল যে, কোন ঘরে একটা টেলিফোন আসলে সেটা পরদিন থেকে কমিউনিটির ফোন হয়ে যেত! এদিকে সব মিলেনিয়াল'দের ভিডিও গেইম-এডিকশন নিয়ে বকা ঝকা করা জেন-এক্স যে মাটির ব্যাংক ভেঙ্গে হলেও আর্কেড গেইমস খেলত, সেটা না বললে প্রসঙ্গটাই অপূর্ণ থাকে! যা হোক-
ব্যাকস্টোরিঃ
cyber 90s, ঢাকা, বাংলাদেশ, ১৯৯২ ইং
একদল বিদেশফেরত তরুণ গ্র্যাজুয়েট মিলে BD robotics গঠনের পর সর্বপ্রথম উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের সর্বত্র আধুনিক বিনোদন এর সুবিধা পৌঁছে দিতে একটি সম্মিলিত প্রোটোটাইপ এ.আই.রোবট তৈরি করে; যা নিজ থেকে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় গিয়ে ফাঙ্কশন / রুটিন অনুযায়ী- গান, নাটক, সিনেমা, কার্টুন, খবর, বিজ্ঞাপন ইত্যাদি প্রচার করতে সক্ষম; সাথে থাকবে আর্কেড গেইমস খেলা এবং ফোন কল করার সুযোগ।
প্রথমে কয়েকটি প্রাইভেট কোম্পানি তাদের বিজ্ঞাপনের শর্তে এই প্রোজেক্টটি 'DHK-92' নামে মান্যুফ্যাকচার ও লঞ্চ করে, রোবট গুলো কে ঢাকার বিভিন্ন এলাকাতে পরিক্ষামুলক ভাবে ছাড়া হয়। এরপর খুব দ্রুত এর জনপ্রিয়তা চারদিকে ছড়িয়ে পরলে, অন্যান্য বড় কোম্পানি ও এই রোবট অর্ডার করতে থাকে। পরবর্তীতে জনগণ লাইসেন্স এর মাধ্যমে এটিকে নিয়ম অনুযায়ী অভাররাইট করে ব্যাক্তি মালিকানায় ক্রয় এবং মডিফাই করতে পারে।
BD robotics আশানুরূপ থেকে অধিক সাফল্য পাওয়ায় ধিরে ধিরে পরবর্তী ৯০ দশকের শেষ পর্যন্ত বাজারে অফিস বট, হাউস হোল্ড বট, পুলিশ বট এবং হেভি ডিউটি লেবার বট ইত্যাদি বাজারে আনতে সক্ষম হয়।
DHK-92 স্বভাবে বেশ চঞ্চল এবং মানুষের সাথে খুব দ্রুত মিশে যেতে পারে। তবে কোমাপ্নির রোবট গুলাকে ব্যাক্তি মালিকানা থেকে একটু বেশি ফরমাল থাকতে হয়। বিশেষ করে রুটিনের বাইরে বাচ্চা ও তরুণদের বিভিন্ন আবদার নিয়ে ওদেরকে বেশ বিব্রত হতে হয়, যা ওরা বিনয়ের সাথেই সামাল দেয়। কোম্পানির DHK-92 গুলাকে জনগণ এই নাম ছারাও অঞ্চল ভেদে অসংখ্য নিক নেইম এ ডাকে। ব্যাক্তি মালিকানায় থাকা ভার্শন গুলো কে মালিক ইচ্ছা মত নাম করন করেন এবং মডিফাই করে নিতে পারেন।
২১# আসমা উল হুসনা সঞ্চিতা
'হাকারবট’
পাড়ার দস্যি মেয়ে নিলুফার। সবে কৈশোরে পা দিয়েছে। স্কুল শেষ করে বাসায় এসেই খেলতে চলে যায় সে। পাড়ার মাঠে বাকি ছেলেমেয়েরা সবাই মিলে ক্রিকেট, মাংস চোর, বরফ পানি, ঘুড়ি ওড়ানো আর গোয়েন্দা গিরি নিয়ে মেতে থাকে! হ্যাঁ, গোয়েন্দা গিরির খুব ভক্ত ওরা। পাঁচ-ছয় জন মিলে একটা ক্লাবও খুলে ফেলেছে, নাম দিয়েছে ‘তিন গোয়েন্দা ফ্যান ক্লাব!’ শুধু ভক্তই না, কয়েক মাসের ভেতরেই ছেলেধরার কয়েকটা কেস, ছোটখাট কিছু চুরি, আর পাড়ার কিছু বখাটেদের ভালই সায়েস্তা করেছে ওরা।
ওদের এই গোয়েন্দাগিরি এডভেঞ্চারের বিশেষ সহায়ক ওদের নিজস্ব রোবট গুলো। অনেকে নিজেরাই তাদের রোবটগুলি বানিয়ে নিয়েছে কাজের উপযোগী করে।
যেমন নিলুর রোবটটার কথাই ধরা যাক, মোটামোটি ছোটখাট ধরণের এই রোবটটা বেশ কাজের। নিলুর ছোট মামার বাতিল জিনিসপত্র মেরামত আর বিক্রির দোকান আছে, সেখান থেকেই নিলু টুকটাক মেকানিকের কাজ শিখে নিয়েছে আর বাতিল কিছু যন্ত্রপাতির বিভিন্ন অংশ জোড়া দিয়ে বানিয়ে নিয়েছে ওর রোবটটি।
· রোবটটির মাথা ক্যাসিও ঘড়ির ডায়াল এর আদলে বানানো, কিন্তু আকারে বড় করা হয়েছে। আর বডিটা বানানো হয়েছে ছোটখাট পুরনো একটা টেলিভিশনের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে। মাথা আর বডির মাঝের অংশটি কিছুদূর পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। পা দুটোও তাই। কিন্তু রোবটটির কোন হাত নেই!
· উল্লেখযোগ্য বিষয় হল রোবটটির একদম প্রধাণ ফাংশন গুলো নিলু তার হাতের বিশেষ ক্যাসিও ঘড়ির সাহায্যে করে থাকে। যেমনঃ রোবটটিকে অফ, অন করা, রিসেট করা, আট্যাক করা, কোনদিকে হেঁটে যাবে এই প্রধাণ এবং গুরুত্বপূর্ণ কমান্ড গুলো নিলুর নিয়ন্ত্রণে থাকে।
· সাইজে রোবটটি একটা ব্যাকপ্যাক এর সমান। ওজনও এমন যে অনায়াসে নিলু ওকে তুলে নিয়ে দৌঁড়াতে পারে!
· রোবটটির মাথার একপাশে ছোট আকারের একটা টেলিফোনের রিসিভার জোড়া লাগানো আছে যার তারগুলো রোবটের বডির সাথে লাগানো। এই টেলিফোন ওর গ্রুপের বাকীদের সাথে কমিউনিকেশন এর জন্য ব্যবহৃত হয়। এরকম টেলিফোন ওদের দলের প্রত্যেকের রোবটের সাথেই কোন না কোন ভাবে বসানো আছে।
· নিলুর রোবোটটির মাথার সামনে ডিসপ্লে অংশটি রয়েছে। এছাড়া মাথায় ক্যাসিও ঘড়ির মতই রয়েছে অসংখ্য বাটন! একটি বাটন এর সাহায্যে মাথার মাঝে বসানো ছোট লাইটটি থেকে হালকা সবুজাভ আলো বেড়িয়ে আসে যা রাতের বেলা ওদের গোয়েন্দাগিরিতে অনেক কাজে আসে।
সেই সাথে মাথায় বসানো অন্যান্য বাটন দিয়ে একেক রকম শব্দ বেজে ওঠে যেমন; কুকুরের ঘেউ ঘেউ, পুলিশের সাইরেন, গান শট, এলার্ম ইত্যাদি! বিপদের সময় দুষ্টুলোকদের ভড়কে দিতে বা গ্রুপের একে অন্যকে খুঁজে পেতে এই সাউন্ড গুলো অনেকবার কাজে এসেছে। সাউন্ড বের হবার জন্য ঘড়ির মাথার পেছন দিকে কিছু স্লট রয়েছে। তখনকার টিভি গুলোতে যেমন থাকত আরকি।
· মাথার সামনের দিকে সোলার প্যানেল আছে অর্থাৎ সোলার পাওয়ারে এটা ফাংশন করে। এর পাশাপাশি মাথার পেছন দিকে ঘড়ির ব্যাটারির মত (কিন্তু আকারে বড়) একটা ব্যাটারিও বসানো আছে যাতে পাওয়ারের দিক থেকে কোন স্বল্পতা না হয়।
· মাথার সর্বশেষ যেই পার্টসটির কথা বলব সেটি হল একটি এন্টেনা। উপরে একদিকে একটা টিভি এন্টেনার মত পার্টস আছে যেটা ছোট বড় করা যায়। আশেপাশের কোন স্ট্রং সিগন্যাল এই এন্টেনাটা মাঝেমাঝেই ধরে ফেলতে পারে, যা গোয়েন্দাগিরিতে বেশ কাজে লাগে। সিগন্যাল এলে মাথার পেছন দিকের সেই স্লট থেকে আওয়াজ শোনা যায়। এন্টেনাটির মাধ্যমেই নিলুর হাত ঘড়ির কমান্ড গুলো রিসিভ হয়।
· এবার আশা যাক রোবটটির বডির ফাংশন গুলো সম্পর্কে। বডির সামনে ওপরের দিকে বসানো আছে একটা ক্যালকুলেটর প্লাস কিপ্যাড যার সাহায্যে ফোনে কল করা হয়, মাথার এন্টেনাটাকে প্রয়োজনমত নাড়ানো হয় এবং বিভিন্ন ক্যালকুলেশনও করা হয়! এই অংশটিতেও একটি সোলার প্যানেল যুক্ত আছে, তখন কার কিছু ক্যালকুলেটরে যেমন থাকত। হয়ত ভাবছেন ক্যালকুলেটর কেন? গোয়েন্দাগিরির অনেক কাজেই এর প্রয়োজন হত। তবে এর প্রধাণ ব্যবহার হোমওয়ার্ক গুলো চটজলদি করে ফেলা! মাথার ডিসপ্লেটাই কিন্তু ছিল ক্যালকুলেটর-কিপ্যাড এর ডিসপ্লে।
· বডির সামনে নিচের অংশে একটা ঢাকনা মতন রয়েছে, যেটা একটা হাতলের সাহায্যে খোলে। বডিটা যেহেতু তখনকার ছোট টিভির অংশ থেকে তৈরি, তাই ঢাকনার ভেতরে সামনের দিকে অংশে কিছু ফাঁকা জায়গা রয়েছে। সেখানে খুব কায়দা করে একটা ছোট্ট ক্যাসেট রেকর্ডার ও দুটো ক্যাসেট (আকারে ছোট) সাজানো আছে! কি হয় এই ক্যাসেট রেকর্ডার দিয়ে? টেলিফোনের রিসিভার তুলে, বডির সাইডে বসানো রেকর্ড বাটনে প্রেস করে কথা বললে তা ক্যাসেটে রেকর্ড হয়ে যাবে! এই পদ্ধতিতে তারা কৌশলে অপরাধীদের থেকে জবানবন্দী রেকর্ড করে নিয়েছে। আবার নিলু কখনও নিখোঁজ হয়ে যাবার আগে বাকীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রেকর্ড করে ক্যাসেট রাস্তায় ফেলে গেছে, যার সূত্র ধরে সাথীরা পরে তাকে ঠিক খুঁজে বের করে ফেলেছে!
· বডির সামনে নিচের দিকে মাঝ বরাবর আছে একটা ডায়াল (তখনকার ফ্যানের রেগুলেটর গুলোর মত অনেকটা) ডায়ালে ছিল কয়েকটি কাঁটা যার একেকটি নির্দেশ করত ‘কালি’, ‘মরিচ পানি’, ‘পানি’, ‘অফ/অন’ এই কমান্ড গুলো! এদের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য রোবটটির পিঠের অংশে কি রয়েছে তা জানতে হবে।
· রোবটটির পিঠের একপাশে একটা মোটাসোটা রকেট পেন রয়েছে! হ্যাঁ, সেই সময়কার রকেট পেন গুলোর মতই, তবে আরও মোটা ধরণের। এর ভেতরে তিনটা স্লট রয়েছে যাদের ভেতর নিলু ম্যানুয়ালি কালি, মরিচ এর গুঁড়া মেশানো পানি এবং সাধারণ পানি ভরে রাখে। পিঠে লম্বভাবে এই রকেটটা থাকে। এটা একটু এঙ্গেলে মুভ করতে পারে। ডায়াল ঘুরিয়ে কালি বা অন্য কোন অপশন সিলেক্ট করা হয়। এরপর নিলু তার হাত ঘড়িতে বসানো বাটন দিয়ে এঙ্গেলটা সেট করে নিয়ে ‘গো’ বাটনটি প্রেস করা মাত্রই রকেট পেনের একটা স্প্রিং নিচে নেমে যায় এবং সামনে কালি বা মরিচ বা পানি সজোরে স্প্রে করে ছিটিয়ে দেয়! এটা অবশ্য ক্লোজ রেঞ্জের ক্ষেত্রে কাজে দেয়। রোবটটিকে প্রয়োজনমত উচ্চতায় সেট করে তারপর এট্যাকটা করলে বেশি কার্যকর হয়। এই ব্যবস্থাটি বেশ ক’বার নিলুকে বিপদ থেকে বাঁচার সময় বের করে দিয়েছে।
ও! এতে পানি রাখার প্রধাণ কারণ হল ভুল করে কাউকে আঘাত করলে তাকে রিলিফ দেয়া অর্থাৎ হিলিং পারপাসে।
· পিঠের পেছন দিকে রয়েছে কিছু স্লট বা হোল্ডার যেখানে নিলু কাস্টমাইজড কিছু ইয়ো ইয়ো রেখে দেয়। কারন সে ইয়ো ইয়ো দিয়ে দুর্দান্ত খেলতে পারে! এগুলো নিলু লং রেঞ্জ এট্যাকের জন্য ব্যবহার করে। কাস্টমাইজড কারন ইয়ো ইয়োর প্লাস্টিক এর ফাঁপা সাইড গুলো খুলে কোনোটার ভেতরে ও লোহার ছোট ছোট টুকরা ভরে দেয়, কোনটায় ইট সুড়কি ভরে রাখে ওজনটা বাড়ানোর জন্য (যেগুলো শত্রুকে ডিসআর্ম করতে ব্যবহার করে)। কোনোটার ভেতর আবার পঁচা ডিম, পিঁয়াজের রস, গোল মরিচের গঁড়া এগুলোও ভরে রাখে! সেই সাথে কিছু ছিদ্র করে দেয় গায়ে। যখন দূরে দাঁড়ানো শত্রুর দিকে ইয়ো ইয়ো গুলো ছুঁড়ে মারা হয়, ঘুরে যাবার কারণে ছিদ্র গুলো উন্মুক্ত হয়ে সেখান দিয়ে ভেতরের জিনিসগুলো বেড়িয়ে এসে অপর পক্ষকে নাজেহাল করে দেয়। ইদানিং নিলু তেলাপোকা, কেন্নো, গান্ধী পোকা, বিঁষ পিঁপড়া ইত্যাদি পোকামাকড় দিয়ে কিভাবে ইয়ো ইয়ো মডিফাই করা যায় সেটাই গবেষণা করছে!
· পিঠের নিচের দিকে রয়েছে আরেকটা ঢাকনা যার ভেতরে রয়েছে ব্যাটারি বসানোর জায়গা। চারটি বড় বড় সানলাইট ব্যাটারি এখানে বসানো থাকে।
· রোবটটির বডির নানান জায়গায় নিলু স্টীকার, ট্যাটু লাগিয়ে রেখেছে! লোটের কালার চুইংগাম এর সেই সাদা নীল চাইনিজ ড্রয়িং ওয়ালা কাগজ গুলোও সে সাঁটিয়ে রাখত!
· সবশেষে রয়েছে রোবটটির পা। বাতিল লোহার পাতকে পিটিয়ে পায়ের পাতা দুটো বানানো হয়েছে। আর পা ছোট বড় হতে পারে এমনভাবে বানানো যা এট্যাকের সময় বেশ কাজে লাগে। নিলু ঘড়ির সাহায্যে বাটন প্রেস করে ওকে দৌঁড়োতে বা হাঁটতে নির্দেশ দেয়। রোবটটি বেশি দ্রুত দৌঁড়োতে পারে না। এই ব্যাপারটায় নিলু এখনও কাজ করে যাচ্ছে।
· রোবটটির নাম নিলু দিয়েছিল ‘ইয়ো-ইয়ো-বট’, কিন্তু হাত নেই বলে ওর বন্ধুবান্ধব রা ‘হাত কাটা রোবট’ বা ‘হাকারবট’ নামেই ডাকতে শুরু করে রোবটটিকে। (হ্যাঁ, তখনকার বেশ জনপ্রিয় গল্প এবং নাট্য ক্যারেক্টার হাকারবিন বা হাত কাঁটা রবিন এর নাম থেকেও তাদের মাথায় ‘হাকারবট’ নামটা আসে)
নিলুর পাশাপাশি দলের অন্যদের রোবট গুলোও কিন্তু বেশ মজার। কারও রোবটের চোখটাই দূরবীন আবার ছবিও তোলা যায়। একজনের রোবট তো গাছের উঁচুতে উঠে যেতে পারে! দূরের আগমন কারীর উপর লক্ষ রাখার জন্য খুবই মোক্ষম সেই রোবটটি।
এভাবেই নানা রকম রোমাঞ্চকর গবেষণা, আবিষ্কার, আর গোয়েন্দা গিরির মধ্য দিয়ে এডভেঞ্চারে মেতে থাকত নিলুফার সহ মফঃস্বলের সেই কিশোর কিশোরীর ছোট্ট দলটি!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন