দিল্লির ঘোড়াশালে মহীনের ঘোড়াগুলি

৫৫ পঠিত ... ৬ ঘন্টা ৬ মিনিট আগে

মর্নিং ওয়াকে বেরিয়েছেন বিজিত দোভাল। পেছনে পেছনে দৌড়াচ্ছে দুই সেপাই। কুয়াশা মাখানো ভোরে স্বাস্থ্য সচেতন প্রাক বৃদ্ধেরা এখানে ওখানে ডন বৈঠক করছে। হঠাৎ অর্ণব গোস্বামী এসে নাটকীয় ভঙ্গিতে নাৎসি স্যালুট দিয়ে বলে, হেইল ফ্রুয়েরার। তারপর বিজিত দোভালের পাশে পাশে দৌড়াতে থাকে। দোভাল বলেন, নাহ জমছে না অর্ণব; ময়ূখটা কি পোস্ত ভর্তা খেয়ে শো করে! সে ঢাকা লকডাউনের খবর দিতে গিয়ে ভারতপন্থীদের এড্রেস করে বসল কেন!

:ওটা স্লিপ অফ দ্য টাং ফ্রুয়েরার।

:ঘরের কথা এভাবে পরের কাছে গিয়ে বললে কি চলে! এর আগে বাংলাদেশের ফরেন মিনিস্টার ড. মোমেন এ কাজ করেছিল। সে বলেছিল, আমি ভারতে গিয়ে বলে এসেছি, যেভাবেই হোক হাসিনাকেই ক্ষমতায় রাখতে। এভাবে হয় নাকি; পোস্ত সিভিলিয়ানেরা পেটে একেবারেই কথা রাখতে পারে না।

:আমি দেখছি ফ্রুয়েরার। ময়ূখকে বলব পোস্ত খেয়ে শোতে না যেতে।

:ফ্রুয়েরার যে বলছ! গদিজির কানে গেলে কিন্তু আমার চাকরি নট হয়ে যাবে।

:এটা স্যার আমাদের পারসোনাল কোড; বাইরের লোক জানবে কী করে?

:বুঝলে অর্ণব জীবনে প্রণয় দিয়ে কিছু হয় না; প্রণব লাগে। সেই ওঁকারের অভাবেই কলোনিটা হাতছাড়া হয়ে গেল।

এসময় সন্দ্বীপ হালদার এসে নমস্কার দিয়ে দাঁড়ায়। অর্ণব পরিচয় করিয়ে দেয়, কলকাতার লেখক; কলোনি নিয়ে অনেক লেখালেখি তার। জুলাইকে ইসলামিক রেভোলিউশান হিসেবে তুলে ধরে অর্ধেক কাজ সেরে রেখেছেন উনি।

হালদার তার বইখানা হাতে তুলে দিয়ে বলে, আশীর্বাদ করবেন স্যার।

দোভাল বইটার কিছু পাতা উলটে বলেন, চলো তোমাদের ঘোড়াশালে নিয়ে যাই। সেখানে চারটি ঘোড়াকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সন্দ্বীপ-এ কাজে আমাদের সাহায্যে আসবে।

সবাইকে নিয়ে গাড়িটা সাউথ ব্লকের আস্তাবলে ঢুকে পড়তেই, সন্দ্বীপ গুন গুন করে গায়,

দক্ষিণ-খোলা-জানলায়

দিন-চলে-যায়

দিশেহারা-যে-মোর-মন

ধাঁধার-থেকেও-জটিল

পড়াশোনায়

বাঙালি করেছে ভগবান

বিনিতা-কেমন-আছো!

দোভাল বলেন, বাহ সুন্দর গান তো। বাঙ্গালির কোবতে আর সুর সবসময়ই লাজবাব। গাও হালদার গাও।

বোঝো-কি-না-বোঝো

ভালো-লাগে

ভিক্ষেতেই-যাব

মানুষ-চেনা-দায়

যখন-ধোঁয়া-মেঘে

যাও-ছেড়ে-চ’লে

রাবেয়া-কি-রুক্সানা

শহরের-উষ্ণতম-দিনে

সবাই-তো-ইনসান

সাততলা-বাড়ি।

গান শেষ করে হালদার বলে, মহীনের ঘোড়াগুলি সিরিজের গান। অর্ণব দুষ্ঠুমি করে জিজ্ঞেস করে, রাবেয়া-রুক্সানা কি এন আর সি, সিএ এ-র খপ্পরে পড়ে ডিটেনশন সেন্টারে! আর বিনিতার কি মাড়োয়ারি বণিক বর হয়েছে।

চারটে রাজস্থানী ঘোড়া সার করে রাখা। তাদের ছোলার সঙ্গে কিসমিস ও পেস্তা বাদাম খাওয়ানো হচ্ছে। দোভাল ব্রিফ করেন,

:হালদার, তোমার কাজ হচ্ছে ঘোড়াগুলোকে জমিদারি হারানোর করুণ গল্প শোনানো; ফেলে আসা হাভেলির জন্য অশ্রুপাত করানো; আর কি করে দাড়ি-টুপিওয়ালা লোকেরা কেড়ে নিল হাশিনার শেকুলার রাজ্যপাট; আমরা দ্বিতীয়বার জমিদারি হারালাম; এসব ইতিহাস শিখিয়ে ঘোড়াগুলোকে ইতিহাসে মাস্টার্স ডিগ্রি দিয়ে দাও। তারপর সেইফ এক্সিটের জন্য মরিয়া কোন মঈনকে ঘোড়াগুলো উপহার দিয়ে আবার অখণ্ড ভারতের ঝান্ডা ওড়াব আমরা।

অর্ণব উত্তেজিত হয়ে বলে, সন্দ্বীপ, যদি মিশন সাকসেসফুল হয়; প্রণব মুখার্জির আত্মজীবনী, কোয়ালিশন ইয়ারস-এর মতো তুমিও লিখতে পারবে, রিয়ালাইজেশন ইয়ারস।

সন্দ্বীপ বিনীতভাবে বিদায় নেয়, স্যার যদি অনুমতি দেন, কিছু গোরা সাংবাদিককে লুটিয়েন্সে নিয়ে যাব এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউ করাতে।

দোভাল বলেন, দেখ চেষ্টা করে আইসিইউ-র রোগীটাকে ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়ার স্যালাইন দিয়ে বাঁচিয়ে তুলতে পারো কিনা! নইলে নতুন সুবেদার খুঁজতে হবে সুবেহ বাংলার জন্য।

৫৫ পঠিত ... ৬ ঘন্টা ৬ মিনিট আগে

আরও

পাঠকের মন্তব্য

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top