জুলাই গণঅভ্যুত্থান, পাওয়ার্ড বাই কালের কণ্ঠ, স্পন্সরড বাই বসুন্ধরা

১৩০ পঠিত ... ১৭:৪৬, জানুয়ারি ১২, ২০২৫

 

7

বহুবছর আগের কথা।

ফেসবুকে লাইক কমেন্ট তখন খুবই অপ্রতুল জিনিস। এখানে সেখানে গিয়ে লাইক-কমেন্ট খুঁজতে হত। তখন মানুষের কমেন্টে দেখা যেত, পাশে থাকলে পাশে পাবেন। লাইক দিলে শতভাগ লাইক ফেরত। কেউ কেউ কমেন্টে লিখে আসত, অ্যাড মেহ আই এম ব্লক।

সে যুগ তো ফেলে এসেছি অনেক আগে। এখন যুগ বদলাইছে। পাশে পাওয়ার জন্য এখন আর পাশে না থাকলেও চলে। সম্প্রতি কালের কণ্ঠের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ইস্যুতে আমরা তাই দেখলাম। ছাত্রনেতারা কালের কণ্ঠকে সার্টিফিকেট দিলেন। কেউ বললেন, জুলাইয়ে আমাদের পাশে ছিল কালের কণ্ঠ। কেউ বলছেন, অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করে পত্রিকাটি। কেউ কেউ আবার আরেক কাঠি সরেস, জুলাইয়ের কালের কণ্ঠের অভ্যুত্থানের পক্ষে অবস্থান তারা স্বচক্ষে দেখেছেন।

যদিও অনেকেই স্বচক্ষে কালের কণ্ঠের এমন কোনো অবস্থান দেখেননি, কিংবা অনলাইন ঘাটলেও তেমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। উল্টো দেখা যায়, জুলাইয়ের বিভিন্ন দিনের পত্রিকার অনলাইন ভার্সন পত্রিকাটি ডিলিট করে দিচ্ছে। তাছাড়া পত্রিকাটির অতীত কার্যক্রম ও মালিকপক্ষের সরকারের ঘনিষ্ঠতা দেখা গেছে জুলাইয়ের শেষের দিকেও। ছাত্র-জনতা খুন করে শেখ হাসিনা যখন ব্যবসায়ীদের সাথে মিটিং করছেন, ব্যবসায়ীরা যেদিন শেখ হাসিনাকে বলছেন, আমরা আপনার পাশে আছি আপা। রাস্তায় যারা আছে তারা জঙ্গি। সে সৈনিকদের ফ্রন্টলাইনে ছিলেন এই পত্রিকার মালিকপক্ষের একজন। তারপরেরদিন তাদের প্রথম পাতায়ও ফলাও করে ছাপা হয়েছে ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার এই খবর।

তাহলে আমরা কার কথা বিশ্বাস করব? যা দেখেছি তা নাকি যা ছাত্রনেতারা শোনাচ্ছেন তা? অনেক বিতর্ক থাকতে পারে। আমার পরামর্শ থাকবে ছাত্রনেতাদের কথা বিশ্বাস করতে। শিবির বলছে, বৈবিছাআ বলছে, গণঅধিকার পরিষদ বলছে—এত মানুষের সত্যায়ন তো মিথ্যা হতে পারে না! বরং আপনার দেখাই মিথ্যা।

তাছাড়া দিনশেষে অভ্যুত্থান তো একটা প্রোডাক্টই। যার মালিক অনেকে। যে যেভাবে পারবে বিক্রি করবে। আখের গোছাবে। প্রদর্শন করবে। প্রোডাক্ট হইলে তার স্পন্সরও থাকতে পারে। আপাতত জুলাই অভ্যুত্থানের স্পন্সর কালের কণ্ঠ। আপাতত তাই আমরা বলতে পারি, জুলাই গণঅভ্যুত্থান, পাওয়ার্ড বাই কালের কণ্ঠ, স্পন্সরড বাই বসুন্ধরা। সময়ের প্রয়োজনে স্পন্সরশিপ পরিবর্তনও হতে পারে। তখন হয়তো হয়ে যাবে এমন—জুলাই অভ্যুত্থান, পাওয়ার্ড বাই বাংলাদেশ প্রতিদিন, স্পন্সরড বাই বসুন্ধরা আটা। কিংবা সময়ের প্রয়োজনে কোনোদিন হয়ে যেতে পারে জুলাই অভ্যুত্থান, পাওয়ার্ড বাই শিবির, স্পন্সরড বাই জামায়াতে ইসলামি।

ইতিহাস তো নানানভাবেই পরিবর্তিত হয়। নিশ্চয়ই আমরা একদিন জানতে পারব জুলাই অভ্যুত্থানের প্রকৃত ইতিহাস। সেখানে জ্বলজ্বল করে লেখা থাকবে, জুলাই অভ্যুত্থান, পাওয়ার্ড বাই শেখ হাসিনা, স্পন্সরড বাই শেখ মুজিব। তখনও নিশ্চয়ই কিছু ছাত্রনেতা পাওয়া যাবে, যারা এসে বলবে, কথা সত্য। আমি নিজের চোখে দেখেছি।

১৩০ পঠিত ... ১৭:৪৬, জানুয়ারি ১২, ২০২৫

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top