হাজী ওসমান গনি আমার বিশেষ বন্ধু। তাকে সব কথাই বলা যায়। দু'কান হয় না। একদিন তার বাসায় গিয়ে হাজির হলাম। বিকট একটা অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। সেটি তাকে বলা দরকার। গিয়ে দেখি বারান্দায় ওসমান গনি আর তিনি বসে আছেন। তিনি, ক্লিওপেট্রা তখন ঈষৎ লাল। বেশ আড্ডা চলছে। আমাকে দেখে গনি তেমন একটা উচ্ছ্বাস দেখাল না। বলল, ও তুই। এটুকুই। নিজেকে ধম্যমণি করে ফেলার তাগিদ সহসা আমাকে গ্রাস করে ফেলে! হড়বড় করে বলতে থাকি, 'বুঝলি, মাস্টারবেট করতে লইছিলাম গতকাল। চেইনটা খুইলা যেই ধরতে গেছি ওমা, দেখি কী, একটা সাপ। হিস হিস করতাছে। নিজেই তাজ্জব। ভয় খাইয়া গেলাম। ভাবলাম, এইটা কেমনে হইল!'
ওসমান গনি শক্ত মুখে আমার দিকে তাকায়। বুঝতে পারি ভুল হয়ে গেছে খানিকটা। কিন্তু গল্পটা তো সত্য ছিল। স্বপ্নে জানি, এটা সত্য। ঐ স্বপ্নে তিনিও তো ছিলেন। স্বপ্নের ভেতর তিনি আমার চেয়েও অসভ্য ছিলেন। কিন্তু সেসব তো কিছুই বলি নি। তাকে তো আর ছোটো করা যায় না। কিন্তু এর পরও ওসমান গনি আমাকে পাত্তা দেয় না। হঠাৎ দেখি প্রসঙ্গক্রমেই তারও কী একটা ঘটনা যেন মনে পড়ে গেছে। বললেন, 'শোনেন গনি ভাই, গতকাল কী একটা কাণ্ড হলো…।' এরপর তিনি আর গনি ফিসফিস করতে থাকেন। আমি কিছুই শুনতে পাই না। বড়ো রাগ হয়। কষ্টও হয়। বিষয়টা কী? গনিকে বলা যায়, আর আমাকে বলা যায় না? আমি মুখ ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি। দরকার নেই আমার, কাউকেই দরকার নেই, কোনো শালাকেই না। আর তখনই গনি ধমকে ওঠে। চোখের সামনে তর্জনী নাচাতে নাচাতে বলে, 'শালা হাড়ামজাদা, ভদ্রঘরের মেয়ের ইজ্জত লুটতে তোমার লিঙ্গ একটুও কাঁপল না! মামার বাড়ি পাইছ? আমি বললাম, 'কে বলেছে?' গনি গলা চড়িয়ে বলল, তিনি বলছেন, এই এক্ষণ বলছেন।
দোস্ত, ব্যাপারটা তো স্বপ্নে, মানে তারও সম্মতি ছিল।
চুপ বাঞ্চোৎ। স্বপ্ন চুদাইও না আমার লগে। বিচ্চি গাইলা ফালামু। আর এই সময় তিনি সহসাই আমার সাহায্যে এগিয়ে আসেন। বলেন, বাদ দেন তো গনি ভাই, মনে হয় কোথাও একটা ভুল হয়েছে। ব্যাপারটা হয়তো স্বপ্নেই ঘটেছে। আমারও উল্টা-পাল্টা হতে পারে। কী সিলি ব্যাপার!
গনি চেঁচায়, 'বাদ দিব ক্যান? আমি স্বপ্ন-টপ্ন বুঝি না, ফ্রয়েডও বুঝি না। ও আপনার দিকে চোখ লাল করছে এইটাই তো যথেষ্ট।' গনি মুঠো পাকায়! এগিয়ে আসে আমার দিকে। ওর হঠাৎ এত ক্ষেপে ওঠার কারণটা ঠিক মালুম হচ্ছে না। আগে কখনও এরকম দেখি নি। আমি বেশ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি। উল্টা মার লাগাব? বুঝতে পারি না। এসব সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতেই গনি আমার কলার চেপে ধরে। আর উড়ে আসেন তিনি। জাপটে ধরে আড়াল করেন আমাকে। আর এভাবেই সবকিছু ভুলে যাই আমি। কী উষ্ণ তিনি! আমি চোখ বুজি। শোষণ করি তার উষ্ণতা। পরম নির্ভরতায় তার বুকে মাথা এগিয়ে দিয়ে আমি ঘুমিয়ে পড়তে থাকি। কিন্তু গনি আমাকে ছাড়ে না। গলা সপ্তমে চড়িয়ে বলে, 'ইউ স্কাউন্ড্রেল, গেট আউট।' আর তক্ষুণি স্বপ্নের ভেতর থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসি আমি। পিপাসা বোধ করি। ভীষণ পিপাসা।


পাঠকের মন্তব্য