দেশটা বদলায়া আসলে কোন দেশ হইতেছে?

৪৮৫ পঠিত ... ১৮:১১, মে ২৩, ২০২২

Deshta-bodlaya-kon-desh-hoitase

দেশ বদলায়ে যাচ্ছে।

বদলায়ে যে যাচ্ছে সেইটা বোঝা যায়। বদলানোর চিহ্ন রাস্তাঘাটে ল্যাডায়ে আছে। বিরাট বিরাট খাম্বা, এখানে ওখানে বুলডোজার, গর্ত, রাজপথের উপর দিয়া মেট্রো, রেললাইনের উপর দিয়া এক্সপ্রেস ওয়ে, বস্তি মস্তি বাদ, জায়গায় জায়গায় হাইরাইজের কম্পিটিশান। চোখ খুইলা হাঁটলেই বুঝা যায় দেশ বদলাইতেছে।

কিন্তু আবুল হোসেন এই বদলানো নিয়া আছেন পেরেশানীতে।

দেশ তো বদলাইতেসে, বদলাইয়া হইতেছেটা কী?

টিভির খবরে মন্ত্রী মিনিস্টাররা বলে দেশ নাকি সিংগাপুর হইয়া যাইতেছে।

আবুল হোসেন মনে মনে একটা তৃপ্তি পাইছিলো। জন্ম চাঁদপুরে বইলা যে একটা হালকা আফসোস ছিলো, মরার আগে সিংগাপুর দেইখা যাইতে পারলে, সেইটা আর থাকবে না। খারাপ না।

কিন্তু দেশটা কী সিংগাপুর হইতাছে আসলে?

কেন জানি খটকা কাটে না।

কাগজের খবরে আবুল হোসেন যখন দেখলো মুমিন জনতা ইদানিং মেয়েদেরকে টিপ নিয়া ওড়না নিয়া শুধু সবক দিয়াই ক্ষ্যান্ত না। ইদানিং হালকা মাইর ধইর শুরু হইসে। এইটা দেখলে আবুল হোসেনের লাগে, দেশের জনতা তো দেশকে আফগানের পথে নিতে চান। তাইলে কি দেশ বদলাইয়া গিয়া আফগানিস্থান হইয়া যাবে?

কিন্তু নিজের মেয়েরে দেখলে আবুল হোসেন আবার ধান্ধায় পইড়া যান।

মেয়ে যেমনে সারাদিন হিন্দী গানের টিকটক বানায়, আর গড়গড়াইয়া হিন্দী কয়, জামা-কাপড়, কসমেটিক সব কিছুই যেমনে ইনডিয়ান ট্রেন্ড ফলো করে, তাতে তো মনে হয় দেশ অর্ধেক ইন্ডিয়া হবার পথে আগাইয়াই আছে।

পাশের বাসার পোলাডা চিকনা। শুধু চিকনা তা না, তার চেহারাও কেমন জানি হালকা গেলমান কিসিমের। আবুল হোসেন পরে জানতে পারলেন এই ছেলে কোরিয়ান কালচারের ফ্যান। শুধু নাকি এই পোলাই না, এই সাইজের একটা বড় অংশ নাকি কে-পপ আর কে-ড্রামা ফ্যান । এদের বিরাট কমিউনিটি। নিয়মিত সমাবেশ কইরা এরা কোরিয়ান ভালোবাসায় ডুইবা যাইতে চাইতেসে। এরা কি বদলাইয়া কোরিয়ান হইয়া যাবে?

মাথায় ধরে না।

বাজারে গেলে আবুল হোসেনের নিজের কাছে মাঝে মাঝে সন্দেহ হয় জিনিস পত্রের দাম-দস্তুর যেমনে সুতা কাটা ঘুড্ডীর মতন মুক্ত স্বাধীন হইয়া উইড়া উইড়া উপরে উঠতেছে তাতে আশে পাশের অনেকে গলা নামাইয়া বলাবলি করে দেশটা না কবে শ্রীলংকা হইয়া যায়!

নিত্য নতুন যন্ত্রপাতি আসতেসে, নিত্য নতুন কারখানা হইতাসে, বিনিয়োগ হইতাসে দেখলে মনে হয় দেশ চায়না না হইলেও মালয়েশিয়া হইয়া যাইতেছে।

সমাজ সামাজিকতা দেখলে হালকা সন্দেহ হয়, দেশটা এট্টু এট্টু কইরা ইউরোপের পথে যাইতেছে?

কিছুই পরিষ্কার বুঝা যায় না।

দেশটা বদলাইতেছে বুঝা যায়।

কিন্তু বদলাইয়া বাংলাদেশটা কি হইতেছে?  

আবুল হোসেনের শুধু মুরগীর কইলজা ধুকপুক করে। খালি মনে হয় তারে পিছে ফালাইয়া দেশটা বদলাইয়া যাইতাছে। আগাইয়া যাইতাছে। এত জোরে দেশ আগাইতাছে যে বহু ছুইটাও সেই দৌড়ে আবুল হোসেন কুলাইয়া উঠতে পারতেছেন না।

৪৮৫ পঠিত ... ১৮:১১, মে ২৩, ২০২২

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top