একদল মানুষ স্বর্গে পৌঁছেছে। এখন তারা নির্ভার। হাসিঠাট্টা করে দিন কাটে তাদের।
একদিন তারা স্বর্গের দরজার সামনে বসে নিজেদের মৃত্যু নিয়ে কৌতুক করছে। এরা সবাই বাংলাদেশি। কেউ বলছে কীভাবে কিছু বুঝে ওঠার আগেই উপর থেকে একটা ইট পড়ে সে মারা গেল, কেউ বলছে কত ভয়ংকর ছিল সে যখন আগুনে পুড়ে মরে, ছোট্টো একটা মেয়ে, নাম আয়েশা। সে বলল, আমার বাড়ি লক্ষ্মীপুর। দরজায় তালা লাগিয়ে আমাদের ঘরে একদল লোক পেট্রল ঢেলে দেয়। আমি বের হতে না পেরে আগুনে পুড়ে মারা গেছি। এ কথা শুনে আশ্চর্যের বিষয়—সবাই হাসছে! ভয়াবহ মৃত্যু নিয়েও তারা হাসি-ঠাট্টা করছে।
একজন বলল, আমি যেখানে কাজ করতাম সেখানকার লোকজন আমাকে প্রথমে একদল ধর্মান্ধ জনতার হাতে তুলে দিল, তারা আমারে বেপোরোয়া মারধোর করল, এরপর চোখ উপড়ে ফেলল, এরপর কণ্ঠনালী ছিঁড়ে ফেলল। এরপর চামড়া ছিঁড়ে সেখানে আমাকে একটা গাছে ঝুলিয়ে পুরো শরীরে আগুন লাগিয়ে দিলো। আমি তখনও মরি নাই।—এটা শুনে সবাই হাহা করে হাসতে লাগল।
ঈশ্বর পাশ দিয়েই যাচ্ছিলেন। তাদের এই আলোচনা শুনে পাশে এসে দাঁড়ালেন।
তিনি অবাক হয়ে বললেন, এটা কী হচ্ছে! এই মৃত্যু তো খুবই ভয়ংকর—এটা কীভাবে কৌতুক হয়! এ নিয়ে তোমরা হাসছ কেন?
তখন তার মধ্য থেকে দীপু ঈশ্বরের দিকে তাকিয়ে শান্তভাবে বলল, আপনি বুঝবেন না। এই কৌতুকটা বুঝতে হলে ওখানে আপনাকে থাকতে হতো। আপনি তখন সেখানে ছিলেন না।
[জিজেকের কৌতুক অবলম্বনে]



পাঠকের মন্তব্য