খালেদের ভয়ে ফোন ধরছেন না হাসিনা

৮৬ পঠিত ... ৬ ঘন্টা ২৮ মিনিট আগে

খালেদ মহিউদ্দিন শেখ হাসিনার ইন্টারভিউ নিতে চান; এই ভয়ে হাসিনা ফোন ধরা ছেড়ে দিয়েছেন। বিজিত দোভাল বারবার ফোন করে তাকে না পেয়ে রতি অগ্নিহোত্রীকে পাঠান খোঁজ নিতে লুটিয়েন্স প্যালেসে। এটেনডেন্ট রোদেলা সিং খবর দেয়, উনি বাসার পেছন দিকের জমিতে শাকসব্জি চাষে ব্যস্ত। অগ্নি গিয়ে দেখেন হাসিনা একটা চৌবাচ্চার মধ্যে মাছ ছেড়ে মাছ ধরার বড়শি ফেলে বসে আছেন। অগ্নিহোত্রীকে দেখেই বলেন, গণভবনের পুকুরে মাছ ধরার অভ্যাস আমার; আর শিশুকালে মধুমতী নদীতে মাছ ধরতাম।

: হার এক্সেলেন্সি আভি তাক কৈ মছলি পাকাড় পায়া!

: নাহ! এখানে তো শাইখ সিরাজ নাই যে মোহম্মদপুর টাউন হল মার্কেট থেকে জ্যান্ত মাছ কিনে এনে বড়শিতে গেঁথে দিয়ে ফটোসেশন করাবে!

: লুটিয়েন্স প্যালেসের গেটের বাইরে দেখলাম ইলিশ মাছ হাতে দাঁড়িয়ে মনিরুল। আমি মাছটা নিয়ে তাকে বিদায় করে দিয়েছি। বলেছি, মাছ খাইবার দিন নয় অদ্য; বাজাও এবার ভীষণ যুদ্ধের বাদ্য।

:  আমার কত সাধের সাংবাদিকেরা ঢাকা থেকে এসে গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। সিকিউরিটির লোকেরা তাদেরকেই তো ঢুকতে পারমিশন দেয়নি।

: সাংবাদিক অতিরঞ্জনের জাত; আপনার সঙ্গে দেখা করতে দিলেই দশ মিনিটের দেখায় দশ ফর্মার বই লিখে ফেলবে; দেখে এলাম মহিয়সীকে। আপনার ভালোর জন্যই এসব লোককে আপনার সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয় না। তা আপনি ফোন ধরছেন না কেন হার এক্সেলেন্সি!

: আর বলবেন না; খালেদ নামে এক জার্নালিস্ট আমার ইন্টারভিউ করতে চায়; ওদিকে দরবেশটাও জেলে; নইলে ওকে একাজ না করতে অনুরোধ করতে পারতো। আগে ছিলো খালেদার ভয়, এখন জুটেছে খালেদের ভয়।

: আপনি চাইলে ইন্টারভিউ দেবেন না। কিন্তু ভয় পাচ্ছেন কেন!

: এইসব যন্ত্রপাতি আমি বুঝি না; দেখা যাবে জুম চাষ করে ইন্টারভিউ নিয়ে ফেলেছে।

: আপনার মনের ভেতরে ভয় ঢুকেছে। আমি এক্ষুণি অগ্নিযজ্ঞ করে আপনার ভয় কাটাচ্ছি। যজ্ঞ করব এখানে অগ্নি পড়বে বাংলাদেশে।

এমন সময় উত্তেজিত অবস্থায় অগ্নিবীণা সিক্রি আসেন, কাঁপতে কাঁপতে একটা ছবি দেখিয়ে বলেন, দেখেছেন ইউনুস সেভেন সিস্টারস তুলে দিচ্ছেন পা-কি-স্তা-নের হাতে।

অগ্নিহোত্রী বলেন, অযথা ভয় পেয়েছেন ম্যাডাম; ওটা গ্রাফিতি; শিশুদের আঁকা। দেখুন পতাকাটা যে এঁকেছে; তার দু'পাশে কাঁচাহাতে সিলেট আর দিনাজপুর এঁকেছে। আমাদের গোদি মিডিয়া প্যারানয়ায় ভুগে আমাদেরও উত্তেজিত করে তুলেছিলো। পরে আমরা মিলিয়ে দেখেছি; ওটা সেভেন সিস্টারস নয়।

রোদেলা সিং কিছু চন্দন কাঠের টুকরা নিয়ে আসে। সঙ্গে খাঁটি ঘি। রতি অগ্নিহোত্রী ভয় কাটাতে তার অগ্নিযজ্ঞ শুরু করেন। অগ্নিযজ্ঞ করে মন্ত্রপড়া মাত্র বাংলাদেশের স্থানে স্থানে ছোট ছোট অগ্নি পিণ্ড এসে পড়ে।

যজ্ঞ শেষ হলে রোদেলা সিং ফোন নিয়ে আসে। হাসিনা ফোনটা ধরে বলেন, কে তুমি!

: আপা আপা (হাউমাউ করে কেঁদে বলে) আমি গোপালগঞ্জের খালেক।

: কী খালেদ!

হাসিনা ফোন কেটে দেন। আবার ফোন আসে। এবার অগ্নিহোত্রী ধরেন, হ্যালো হ্যালো, আমি খালেক, আপনি গোপালগঞ্জ আইলে আপনারে ভ্যান চালাইয়ে ঘুরাইতাম, মনে নাই! আপা ফেসবুকে গুজব দেখলাম আপনি নাকি মইরা গেছেন গো আপা!

অগ্নিহোত্রী ধমক দিয়ে বলেন, কী বলছেন এসব! আপা আভি জিন্দা হ্যায়!

: উনারে একটু দেন! কাউরে বিশ্বাস পাই না।

শেখ হাসিনা ফোনটা নিয়ে বলেন, খালেক, আমি তোমারে খালেদ ভাবছিলাম। আছ ক্যামন!

: আর আপা থাকা! বাঁইচা আছি এই তো অনেক!

: আরেকটু ধৈর্য্য ধরো। এইতো ইউনুস গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।

: জ্বি আপা, প্রতিদিন দোয়া ইউনুস পইড়া ইউনুসের চইলা যাওয়ার মুনাজাত ধরতেছি।

অগ্নিযজ্ঞ শেষ করে অগ্নিহোত্রী ফিরে গেলে হাসিনা একটু বিশ্রাম নেন। রাতে ঘুম হয়না। দিনেই একটু ঝিমুনি আসে। চোখের পাতাটা একটু জুড়ে আসে। এমন সময় আবার ফোন বেজে ওঠে।

: হ্যালো আপা, আমি খালেদ; এই মুহূর্তে আপনার একটা ইন্টারভিউ নেয়া জরুরি। দরকার হয় জেলে যাবো; তবু আপনার ইন্টারভিউ নেবো!

: আহ খালেদ, যদি আরেকবার ক্ষমতা ফিরে পেতাম তাহলে প্রতিটা লাশ ফেলে সঙ্গে সঙ্গে গুম করে ফেলতাম। কেউ লাশের চিহ্ন পেত না। অনেক শিক্ষা হয়েছে আমার।

৮৬ পঠিত ... ৬ ঘন্টা ২৮ মিনিট আগে

আরও

পাঠকের মন্তব্য

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top