সম্পদ দিয়ে কী করবো; যেতে হবে তো সেই সাড়ে তিনহাত মাটির ঘরে : সালমান এফ রহমান

২৩৭২৬ পঠিত ... ০৯:৫৪, মার্চ ১২, ২০১৭


বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় প্রথমবারের মতো একজন বাংলাদেশি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন। বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান সেই ক্ষণজন্মা পুরুষের নাম। বেইজিংভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হুরুন গ্লোবাল-এর ওই তালিকার ২২৫৭ জন ধনকুবেরের মধ্যে তিনি রয়েছেন ১৬৮৫ নম্বরে। প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, সালমান এফ রহমানের সম্পদের পরিমাণ ১৩০ কোটি ডলার।


সম্প্রতি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত বাংলাদেশ; যে দেশের জিডিপি গ্রোথ বা বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার লাকি সেভেন পারসেন্টের দিকে ধাবিত; ব্যাংক রিজার্ভ রেকর্ড মাত্রায়, যেখানে অর্থমন্ত্রীর মতে দু'চার হাজার কোটি টাকা শেয়ার বাজার বা ব্যাংক থেকে হাপিস হয়ে যাওয়া কোন ব্যাপার নয়, অর্থনীতির সে দুরন্ত সহিস বাংলাদেশের একজন উদ্যোক্তা বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় স্থান করে নেয়া উন্নয়নের বিশ্বসড়কে গর্বের পতাকা হাতে একজন শান্ত-স্নিগ্ধ-সৌম্য-স্থিতধী-ধর্মপ্রাণ দরবেশের দৃপ্ত পায়ে হেঁটে যাবার চিত্রকল্প উপহার দিয়েছে যেন।

সালমান এফ রহমান খুব ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে। ওষুধ কোম্পানী, টেক্সটাইল শিল্প, আবাসন প্রকল্প, মিডিয়া প্রকল্প; ব্যবসার প্রতিটি শাখায় সালমান এফ রহমানের অবাধ বিচরণ। আর শেয়ার বাজারে তার ব্যবসা শৈলী একে  চারুকলায় পর্যবসিত করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জটি যেন সালমান এফ রহমানের  নির্মিত একটি নান্দনিক ভাস্কর্য; মিকেল এঞ্জেলোর ডেভিড যেমন।

জীবনের উত্থান-পতনে তিনি নিজে যেমন স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় কষ্ট পেয়েছেন; কষ্টের কষ্টিপাথরে নিজের সক্ষমতা যাচাই করেছেন; আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন; উনি উনার প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কর্মী ও শেয়ারবাজারের শেয়ার হোল্ডারদের সেই একই অনুশীলন করিয়েছেন। এই কষ্টাগ্রহ আন্দোলনের প্রচলনের কারণে সালমান এফ রহমান দরবেশ অভিধায় ভূষিত। কারণ জীবনে পার্থিব অর্জন তাকে আকৃষ্ট করেনি; আধ্যাত্মিকতার মাঝেই মুক্তি খুঁজেছেন অবিরাম। তাই বিশিষ্ট ভারতীয় ইসলামী চিন্তক জাকির নায়েককে নিয়ে  ছুটে গেছেন সৌদি আরবে। সূর্যাস্তের আলোয় মরুভূমির মাঝে বসে প্রার্থনা করেছেন।

সারাক্ষণ তিনি প্রার্থনামগ্ন থাকেন। তাই বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় তার নাম স্বীয়গুনে স্থান করে নেবার পর একজন সাংবাদিক যখন তাকে প্রশ্ন করে, আপনার অনুভূতি কী! উনি তখন নিজের ঘরে বসে চোখ বুঁজে মরুভূমির সূর্যাস্তের আলোয় প্রার্থনা মগ্ন। এ এক অসম্ভব ক্ষমতা তার। চোখ বুঁজে প্রার্থনার গভীরে বুঁদ হয়ে টাইম ট্রাভেল করে চলে যেতে পারেন পবিত্র মরুভূমির ঢালে। হাত তুলে ইশারা করেন। সাংবাদিক অপেক্ষা করে। কিছুক্ষণ পর চোখ খুলে তিনি সাংবাদিককে বলেন, কী জিজ্ঞাস্য!

সাংবাদিক সুসংবাদ দিলে তিনি বলেন, আমার এতো সম্পদ; আমি জানি না তো!

সৌদি আরবে শীর্ষ ধনীর সংখ্যা বেড়েছে শুনে বলেন, আলহামদুল্লাহ। এই তালিকায় বিল গেটসের নাম আছে শুনে খুশী হন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম আছে শুনে মুচকি হাসেন।

সাংবাদিক বলে, আপনার ছওয়াব আছে অনেক স্যার। আপনি ধর্মপ্রাণ মুরুব্বীদের হেলিকপ্টারে করে যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছেন।

দরবেশ তর্জনি আকাশের দিকে নির্দেশ করেন, সবই তাঁর অপার মহিমা; আমরা তো নিমিত্ত মাত্র। আমি ডান হাতে ব্যয় করলে বাম হাত জানতে পারেনা। সম্পদ দিয়ে কী করবো; যেতে হবে তো সেই সাড়ে তিনহাত মাটির ঘরে। এই জন্য যখন কিছু বিপথগামী মানুষ আমার বাড়িটি ক্রোক করেছিলো; আমি ভয় পাইনি। আমি জানতাম সব চলে শুধুই উনার অঙ্গুলি হেলনে চলে। উনি চাইলে আমার বিরুদ্ধে মামলা খারিজ হবেই।

উনি একটু থেমে তারপর বলেন, সবাই এতো সম্পদ নিয়ে বিচলিত কেন! ইহকাল তো কেবল পরীক্ষার স্থল। পরকালে অপেক্ষা করছে অনন্ত জীবন।

সাংবাদিক অশ্রুসিক্ত হয়। এই দরবেশ মানুষটিকে নিয়ে যারা সমালোচনা করে; তাদের অভিসম্পাত দেয় মনে মনে।

এমন সময় সাংবাদিকের ফোনে নিউজ আপডেট আসে। ক্যানাডার ট্রুথ কমিশন উদ্যোক্তা সালমান এফ রহমানের জন্য "চ্যাম্পিয়ান অফ দ্য অনেস্টি" পুরস্কার ঘোষণা করেছে।

সাংবাদিক দরবেশকে সুসংবাদটি দিলে উনি কোন বিচলন প্রদর্শন না করে বলেন, এখন আবার আমার প্রার্থনার সময় হয়েছে। সাংবাদিক বিদায় নেবার সময় বলে, আপনার এই কষ্টাগ্রহ আন্দোলনের মাধ্যমে ব্যবসা-বানিজ্যে সাফল্যের দর্শনটি নিশ্চয়ই বাংলাদেশের ইতিহাস সুচিহ্নিত করবে।

দরবেশ আবারো আকাশের দিকে তর্জনি নির্দেশ করেন।

[আরকি একটি স্যাটায়ার অনলাইন প্লাটফর্ম। এখানে প্রকাশিত খবর বিশ্বাস তো করবেনই না, অবিশ্বাসেরও প্রশ্ন উঠে না।]

২৩৭২৬ পঠিত ... ০৯:৫৪, মার্চ ১২, ২০১৭

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top