ডিসেম্বর ডমরু ঘন বাজে

১০৫ পঠিত ... ১৭:২৪, জুন ০৩, ২০২৫

 

শুণ্ডিরাজ্যের স্যাফরন বিষয়ক মন্ত্রী ডিসেম্বর শংকর দাড়ি চুলকে বলে, বুণ্ডিরাজ্যে ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে; তবেই আমরা আবার ফুলমাল্য দিয়ে বরণ করবো নতুন সুবেদারকে। আমরা বন্ধু সুবেদার খুঁজছি।

অমনি নর্থ ইস্ট রিউমার ট্রিবিউনে গেরুয়া সাংবাদিক ডিসেম্বর নন্দী বেশ খেলিয়ে কলাম লিখে ফেলে, ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে সব্বোনাশ হয়ে যাবে গো। ওগো কে আছো বুণ্ডিরাজ্য বাঁচাও।

অমনি রাম ও বামেরা ডিসেম্বরে নির্বাচন চাই বলে শুরু করে গ্রহ-নক্ষত্রযাত্রা। তাদের ঐ একই চর্বিত চর্বণ, বুণ্ডিরাজ্যকে মৌলবাদী প্রতিক্রিয়াশীলদের খপ্পর থেকে রক্ষা করতে ডিসেম্বরে নির্বাচন চাই।

সানডে প্রোপাগান্ডা গার্ডিয়ানে গেরুয়া কলামিস্ট ডিসেম্বর নালাপথ গল্প ফাঁদে; ১৯০৫ সাল থেকে ঐ একই গল্প গেরুয়াপল্লীর; কেন ঐ হরিত বুণ্ডিরাজ্য মৌলবাদীর খপ্পরে।

ডিসেম্বর উজ জামান এসব খবর পড়ে উত্তেজিত হয়ে বলে, ডিসেম্বরে নির্বাচন চাই। অবশ্য সে নিশ্চিতভাবেই একথা বলেছে কিনা তা জানা যায় না। ফেসবুকের কিছু ডিসেম্বর আইডি তার নামে এই হুংকার প্রচার করলে তাতে পুলকিত হয় ডিসেম্বরবাদী লোকেরা।

ডিসেম্বরউদ্দিন তখন পুনঃ পুনঃ বলতে থাকে, ডিসেম্বরে নির্বাচন চাই। ব্যাপারটা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায়, কেউ তাকে যদি জিজ্ঞেস করে, চা খাবেন ভাই! সে উত্তর দেয়, ডিসেম্বর খাবো।

ডিসেম্বর উজ জামানের ঘোষণা শুনে, ডিসেম্বর নূর, ডিসেম্বর প্রিন্স, ডিসেম্বর রায়, ডিসেম্বর মির্জা, ডিসেম্বর রহমান সবাই উৎসাহিত হয় ডিসেম্বর সংকল্পে।

পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায়, শিশু বাবার কাছে খেলনা চাইলে বাবা বলে, ডিসেম্বরে খেলনা কিনে দেব। স্ত্রী স্বামীর কাছে অ্যাপার্টমেন্ট চাইলে স্বামী বলে, ডিসেম্বরে কিনে দেব। প্রেমিক প্রেমিকার কাছে উষ্ণতা চাইলে প্রেমিকা উত্তর দেয়, ডিসেম্বরে উষ্ণতা দেব। পাওনাদার এসে টাকা ফেরত চাইলে, লোকজন সহাস্যে বলে, ডিসেম্বরে পাবেন।

কালচারাল উইং বসে নেই। তারা কবিতা লিখতে থাকে, আসছে ডিসেম্বরে আমরা স্বয়ম্বর হবো; এসো হে ডিসেম্বর এসো এসো, তাপস নিঃশ্বাসও বায়ে, ইউনুসেরে দাও উড়ায়ে; আমি বিদ্রোহী রণক্লান্ত, ডিসেম্বরে হব শান্ত। গায়ক গান ধরে, মুক্তির মন্দির ডিসেম্বর তলে, এসো ডিসেম্বরো সুন্দরো, প্রথম ডিসেম্বর আমার শেষ ডিসেম্বর, জয় ডিসেম্বর ডিসেম্বরের জয়। পথ নাটকে, কালো শাড়ি পরে শোক মুখে আলু থালু হয়ে বসে থাকে অভিনেত্রী। তিনটে যুবক তিড়িং বিড়িং করে আর্তনাদ জুড়ে দেয় সমবেত কন্ঠে, জাগো ডিসেম্বর কুনঠে সবাই।

পত্রিকার কলামে ঈদুল ডিসেম্বর সামনে রেখে ইউনুস কতো খারাপ রেখেছে দেশবাসীকে; আর ডিসেম্বর কিভাবে সুখের চাঙ্গে তুলে দেবে সবাইকে সেটা কুঁচকুঁচ করে লিখতে থাকে, ডিসেম্বর মোস্তফা, ডিসেম্বর রুস্তম।

ইউটিউবে চোখে কাজল দিয়ে ডিসেম্বর চৌধুরী, আসন্ন ডিসেম্বরের ফজিলত বর্ণনা করে। চতুষ্কোণ মুখমণ্ডলের ডিসেম্বর ভটভটি বলে, ডিসেম্বরেই শেকুলারিজম ফিরে আসবে; তখন ডিসেম্বর দাদাদের নিয়ে আমরা আবার শুন্ডিরাজ্যের ডিসেম্বর প্রসাদ খেতে পারবো।

এইভাবে ডিসেম্বর কনসেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং ফ্যাক্টরি কাজ করতে থাকে ইউনুসের উইন্টার অফ ডিসকনটেন্ট তৈরি করতে। শুন্ডিরাজ্য এই কারখানাটি চালু রেখেছে শতবর্ষ ধরে।

ওদিকে ডিসেম্বর রেজাউল, ডিসেম্বর কাদের অগাস্ট অভ্যুত্থানের পর কী অবর্ণনীয় কষ্টের মাঝ দিয়ে শুন্ডিরাজ্যে পালিয়েছে; কতটা কাদা তাদের গায়ে মাখতে হয়েছিলো; তার করুণ গল্প বলে অশ্রুসজল করে তোলে গ্রামবাসীকে। শুন্ডিরাজ্যের সাবেক সুবেদার ‘ডিসেম্বর ছাড়া হাসি না’ তখন সুটকেসে শাড়ি ও পরচুলা সাজাতে থাকে। গুন গুন করে গান গায়,

ডিসেম্বরের রেলগাড়িটা

মাইপা চলে ঘড়ির কাঁটা

স্টেশনে বইসা আছি

কখন বাজে এক এগারোটা

কখন বাজে এক এগারোটা।

১০৫ পঠিত ... ১৭:২৪, জুন ০৩, ২০২৫

আরও

পাঠকের মন্তব্য

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top