এই জয় এমনিতেই স্পেশাল, দারিদ্র্য দিয়ে মহামান্বিত করার দরকার কী?

২২২ পঠিত ... ১৭:০৭, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২

Ai-joy-emnitei-special

বিজয় জিনিসটা একটা অর্জন। এটা আকস্মিক কোন ঘটনা নয় যে, ঝড় হলো আর বক মরে পড়ে গেলো। এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া, প্রস্তুতি, কঠিন পরিশ্রম আর অসীম অধ্যাবসায়ের ফসল। আমাদের মেয়েরা তাদের ইস্পাতের মতো শক্ত স্নায়ু আর পাহাড়ের মতো কঠিন মনোবল আর অসামান্য নৈপুণ্য দিয়েই জিতেছে। এমন নয় যে ওরা উড়ে গেল ফাইনাল খেলে জিতে চলে আসলো!  

ওরা বাছাইপর্বে ভালো খেলেছে। তারপর বাকী খেলাগুলোতেও সাফল্যের ঝিলিক দেখিয়েছে। গ্রুপ পর্বে মালদ্বীপকে ৩-০, পাকিস্তানকে ৬-০‌ ভারতকে ৩-০ এবং সেমিফাইনালে ভুটানকে ৮-০ গোলে হারিয়ে তবেই না ফাইনাল পর্যন্ত আসা লেগেছে। আপনি নিকট অতীতের ইতিহাস একটু ঘাঁটলেই বুঝবেন এই দেশগুলো মোটেই দুর্বল কোনো প্রতিপক্ষ নয়। কঠিন ঘাম ঝরানো ছাড়া এই বিজয়ের পেছনে আদপে আর কোনো কারণ নেই।     

আবেগ দেখাতে গিয়ে গত ক'দিন ধরেই অনলাইনে ঘুরে বেড়াচ্ছে ওদের অভাব, পারিবারিক সংগ্রাম, ভাত খেতে না পাওয়া এমন সব সংবাদ। ভাতের কষ্টের চেয়ে বড় কষ্ট নেই এটাতো সবাই জানে। তাও যখন এ কথাগুল যখন ভেসে বেড়ায় দেখতে খুব খারাপ লাগে। আসলে জানেন কি… বিজয়ের মতো সুমহান ব্যাপারটাকে আলাদাভাবে গ্লোরিফাই করার কিছু নেই। করা যায় না। তাহলে ব্যাপারটা এমন হয়ে যায় যে বিজয়ের ভিতটা আসলে নাজুক। অভাব, দারিদ্র্যের মতো বিষয়গুলো দিয়ে নড়বড়ে সেই বিজয়টাকে ঠেকনা দেয়া হয়েছে।

এ যেন সেই চিরাচরিত গল্পটার মতো, ‘দ্যাখেন আমি মাত্র তিরিশ টাকা নিয়ে ঢাকা আসছিলাম!‘ এ গল্পটা কেন বলেন তারা? কারণ তারা তাদের অর্জনটাতে একটু বাড়তি মনযোগ টানতে চান। তাই তিনি নিজের পরিশ্রমের সাফল্যের সাথে অভাবটাকে জুড়ে দেন। এর আরেকটা কারণ অবশ্য আছে। দুঃখ, অভাব এই গল্পগুলো বাঙালীর  আলোচনার বিষয় হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু আমাদের মেয়েদের গল্পটা কিন্তু মোটেও সেরকম নয়।

আমরা তো জানিই, ক্ষিধে দুই প্রকারের হয়। পেটের ক্ষুধা রাক্ষসের মতো। শুধু খেতে পেলেই তার সুখ। বাকী যে ক্ষিধেটা আছে সেটা হলো কিছু করার ক্ষিধে। এই ক্ষিধেটাই মানুষকে চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে ধাক্কা দিতে দিতে নিয়ে যায়। পথে যা কিছু বাধা আসে সেই ক্ষিধেটা সেসব বিঘ্নতা খেয়ে খেয়ে বিজয়ের তৃষ্ণা বাড়ায়।

মেয়েরা তাদের অসামান্য ক্রীড়া নৈপুণ্য দিয়ে জিতেছে। তাই বিজয়ের এই মুহুর্তটি বোধ করি শুধু তাদের বিজয়টা দিয়েই উদযাপন করি। বিজয় নিজেই মহিমান্বিত। তাকে নানাবিধ অভাবের প্রসংগ টেনে বাড়তি একটু মেকাপ না দেয়াই বোধহয় সমীচীন।

২২২ পঠিত ... ১৭:০৭, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top