যেভাবে বাংলাদেশে ডাইনোসর আবিষ্কার করলাম

৫৯০ পঠিত ... ১৭:৩৬, জুন ১৮, ২০২২

3 (2)

ইউনিভার্সিটি অব সাউথহ্যাম্পটনের বিজ্ঞানীরা, যারা প্যালেনটোলজিস্ট (Palaeontologist) নামে পরিচিত, গবেষণা করেন পৃথিবীতে প্রাণের ইতিহাস নিয়ে। তাদের কাজের জায়গা হচ্ছে প্রাণিজগতের জীবাশ্ম বা ফসিল। তারা দিন কয়েক আগে ৩২ ফুট লম্বা একটা ডাইনোসরের অবশিষ্ট আবিষ্কার করেছেন।

স্বভাবে হিংস্র, কুমিরের মতো মুখশ্রীর এই মাংসাশী জন্তুটা সাড়ে ১২ কোটি বছর আগে দুনিয়ায় বিচরণ করে বেড়াতো। বিজ্ঞানীরা একে খুঁজে পেয়েছেন আইল অফ ওয়াইট (Isle of Wight) এ। এটা ইংল্যান্ডের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত একটি দ্বীপ।

খেয়াল করলে দেখবেন, বেশিরভাগ ডাইনোসরের অবশিষ্ট পাওয়া যায় ইউরোপে, আমেরিকায়। আমি অন্তত বাংলাদেশ বা ভারতীয় উপমহাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে এধরণের কোনো বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের খবর দেখি নাই।

আমাদের এখানে যদিও চাঁদে মানুষের মুখ দেখতে পাওয়া যায়। মসজিদের তলায় মন্দির আর মন্দিরের নীচে মসজিদ খুঁজে বের করার একটা প্রচেষ্টা চলে। তাজমহল, যেটা কি-না আদতে একটা কবরস্থান, সেখানের আদি মালিকানা কোন রাজার ছিল এই নিয়ে সমানে বিতর্ক করে মানুষজন।

তবে একটু ঘাঁটাঘাঁটি করে জানতে পারলাম, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও ইতিমধ্যে প্রচুর ডাইনোসরের ফসিল পাওয়া গেছে। এমনকি ডাইনোসরের ফসিল পার্ক ও আছে গুজরাটে। সেখানের মাহিসাগর জেলার বালাসিনর টাউনশিপের রাইয়লি গ্রামে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম ডাইনোসরের ফসিল পাওয়া গেছে।

কোলকাতা মিউজিয়াম এবং কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাইনোসরের ফসিল সংরক্ষণ করে রাখা আছে। ভারতবর্ষে পাওয়া একটি স্পেসিস এর নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয় পাকিস্তান, চীন, মঙ্গোলিয়া , কোরিয়া, জাপান, রাশিয়াতেও প্রচুর ফসিল পাওয়া গেছে।

গুজরাট থেকে মেঘালয় পর্যন্ত ডাইনোসরের অবশেষ মিলেছে। শুধু গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ অর্থাৎ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এবং অধুনা বাংলাদেশে পাওয়া যায়নি। এর কারণ খুব সম্ভবত তখন হিমালয় পর্বতমালা এবং এই বেঙ্গল ডেলটা রিজিয়নের অস্তিত্বই ছিলো না। আমাদের এই বাপদাদার ভিটা তখন ছিল দক্ষিণের এন্টার্কটিকা মহাদেশের অবিচ্ছিন্ন অংশ হিসেবে।

মজার ব্যাপার হলো, এই খবর যেদিন পড়লাম, ঠিক সেদিনই ডাইনোসরের একটি জীবাশ্ম আমার ৬ বছরের ছেলেও আবিষ্কার করেছে। ঘরের কোণে পড়ে ছিল। সেটাও সম্ভবত ২ কোটি বছর আগের। পরে আমরা অনেক গবেষণা করে দেখতে পেলাম, ফসিলটা প্লাস্টিকের ছিলো, আর ডাইনোসরের উচ্চতা ছিলো ২ সেন্টিমিটার। ২০১৮ সালের কোনো একদিনে রাস্তার পাশে থেকে কেনা হয়েছিল তাকে।

এই প্লাস্টিকের খেলনা ডাইনোসরের সাথে কিন্তু পৃথিবীর তাবত ডাইনোসর ফসিলের যোগসূত্র আছে। কীভাবে? কারণ কোটি বছর আগে ডাইনোসর মরে গিয়েই মাটির তলে জীবাশ্ম জ্বালানি হিসেবে ছিল। সেখান থেকে পেট্রোলিয়ামের বাই-প্রোডাক্ট হিসেবে পলিপ্রোপাইলিন তৈরি হয়, আর ঐ থেকেই তো প্লাস্টিকের খেলনা ডাইনোসরের উৎপত্তি।

বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে ক্যান্সারের ওষুধ আবিষ্কার করেছেন। ইলেকট্রনিক ওয়েস্টেজ কে মহাশূন্যে না পাঠিয়ে রিসাইকেল করে কীভাবে মানবজাতির জন্য কল্যাণকর করে তোলা যায়, গবেষণা করার জন্য এরকম অনেক বিষয় আশেপাশে ছড়িয়ে আছে।

আমার ব্যক্তিগত মতামত, ডাইনোসর নিয়ে গবেষণার চেয়ে পৃথিবীর প্লাস্টিক আর পলিথিন গারবেজের স্তুপ কিভাবে ডিকম্পোজ করবেন সেটা নিয়ে গবেষণা করা হলে এতদিনে কিছু একটা উপায় বের হয়ে যেতো।

ডাইনোসর কত বড় ছিল সেটার চেয়ে পৃথিবীর দূষণ কমানো অনেক বেশি জরুরি।

৫৯০ পঠিত ... ১৭:৩৬, জুন ১৮, ২০২২

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top