সৈয়দা নীলিমা দোলা
বাংলাদেশে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন আছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই আসনগুলোতে কোনো সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারে না। ভোটের মাধ্যমে নয়, দলীয় নেতাদের মনোনয়নের মাধ্যমে নারীরা সংসদে যান। অনেক সময় নেতাদের বউদের এখানে মনোনয়ন না দিলে নেতাদের ক্ষিপ্ত হয়ে উঠারও গল্প আছে। এই সংরক্ষিত নারী আসনের প্রতিনিধিরা কোনভাবেই দেশের নারীদের প্রতিনিধিত্ব করে না।
সংসদ সদস্য মানেই জনগণের প্রতিনিধি। কিন্তু সংরক্ষিত নারী আসনের এমপিরা দলের প্রতিনিধি, জনগণের নয়। তারা কার কথা বলবেন? জনগণের, না দলনেতার?
ঐক্যমত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, ঘূর্ণয়মান পদ্ধতিতে ১০০ আসনে নারীরা প্রতিনিধিত্ব করবে। প্রত্যেক নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন লটারির ভিত্তিতে ১০০ আসন নির্দিষ্ট করবে। সেই আসনগুলোতে শুধু নারীরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এই সুপারিশের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিতে হবে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল এই সুপারিশে রাজি নন। কারণ, তাদের ভয় নারীদের যে করুণার পাত্র বানিয়ে রাখা হয়েছে, সেই ব্যবস্থা ভেঙে যাবে।
এই দেশ নারীদের সুযোগ দিতে চায়, কিন্তু তা করুণা দিয়ে। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। যোগ্যতা, প্রতিযোগিতা ও সরাসরি জনআকাঙ্ক্ষার-এর ভিত্তিতে নারীরা সংসদের আসুক । নারী নেতৃত্ব গড়ে উঠুক মাঠ থেকে, জনগণের রায়ে। নারীরা পিছনের দরজায় নয়, মূল দরজা দিয়ে সংসদে যাক—জনগণের রায় নিয়ে, ভোটে জিতে।
এটা সময়ের দাবি— নারী আসনে দলনির্ভর মনোনয়ন নয়, চাই সরাসরি নির্বাচন।
এই সংস্কার মানতে রাজি না,বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। তাদের পাত্তা দেওয়া যাবে না। নিজেদের অধিকার নিজেদের আদায় করে নিয়ে হবে।
থাম্বনেইলের পোস্টার আর্টওয়ার্ক: দেবাশিষ চক্রবর্তী
পাঠকের মন্তব্য