একযোগে প্রায় সবগুলো মিডিয়া খবর ছেপে দেয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শেখ মুজিবসহ মুজিব নগর সরকারের ৪ শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি কেড়ে নিয়ে তাদের মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করেছে।
বিবিসি বাংলা, সমকাল, প্রথম আলো, বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম, বাংলা ট্রিবিউন, যুগান্তর কেউ পিছিয়ে নেই এই ফেইক নিউজ ছড়ানোতে।
মিডিয়াগুলোতে যে চেতনা সৈনিকেরা রয়েছে; যারা হাসিনার ১৫ বছরে চেতনার গাইতি শাবল চালিয়ে ফ্যাসিজমকে দীর্ঘায়িত করেছে; তারা একযোগে মিডিয়ার চেতনা কু ঘটিয়ে ফেলে।
আওয়ামী লীগের কালচারাল উইং, বিদগ্ধ বাম, চেতনার একনিষ্ঠ লিপ সার্ভিস সমাজ ৪ জুনকে চেতনার চুইংগাম চেবানো দিবস হিসেবে ঘোষণা করে লেগে পড়ে চুইংগাম চেবাতে।
একজন রাশভারী চেহারার লোক ভ্রু কুঞ্চিত করে বলে, আগেই বলেছিলাম; এ সরকার মুক্তিযুদ্ধের শত্রু। এখন দেখলেন তো, এখন লিখে দিলেই পারে জামায়াত মুক্তিযুদ্ধ করেছে। গোলাম আজমকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ দিয়ে দিলেই বা ক্ষতি কি!
এক ইনসমনিক লোক এসে লেখে, মেটিকিউলাস ডিজাইনে রিসেট বাটনে চাপ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে; এখন বুঝলেন তো জুলাই বিপ্লবী কারা। আগেই বলেছিলাম।
এক আপা আর্তনাদ করে ওঠে, আর নিতে পারতেছি না। মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জন ধুলায় লুটিয়ে দিলো।
ছড়াকার এসে ছড়া কাটে, টিক্কা খানের প্রেসে, ছাপা হলো প্রজ্ঞাপন শেষে; চাঁদ তারাটা বসিয়ে দিলো কষে, শ্রাদ্ধ তাদের হতেই হবে ঐ জন্মদোষে।
এক ছড়াপ্রিয় আপা এসে স্যাড ইমো দিয়ে বলে, আর বাঁচতে ইচ্ছা করে না ছড়াদা।
ইউটিউবের চোখে কাজল দেয়া আপা ঘুম ভাঙ্গায় চেতনার বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীর। বুদ্ধিজীবী বলতে শুরু করে, মোদ্দা কথা হলো, এরা আমাদের লোক নয়; তাই চেতনার সঙ্গে শত্রুতা এদের মজ্জাগত।
জুলাই বিপ্লবে একটু পরিচিত হয়ে ওঠা ফেসবুকার প্রগতিশীলতার পৈতে স্থায়ী করতে, হুংকার দিয়ে ওঠে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে এসব ফাজলামি একদম বরদাশত করা হবে না।
এক কাব্যময় আপা এসে মন্তব্যে লেখে, আপনি পাশে আছেন বলে একটু সাহস পাই।
সুন্দর হস্তাক্ষরের জন্য নন্দিত এক তরুণ বামকে এক বৃদ্ধ বাম ফোন করে বলে, কিছু পোস্টার ও ব্যানার চাই। লিখবে, অন্তর্বর্তীর আস্তিনে রাজাকার, তাই তো প্রজ্ঞাপনে দিলো ফুতকার! আরো লিখবে, মুজিব-তাজ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ কি করে হয় বলো, ওহে ইন্টেরিম তোমার মাথার টুপিটা খোলো।
শহীদ মিনারে জাতীয় সংগীত গাওয়ার প্রস্তুতি নেয় কালচারাল উইং। ললিতাদি ঘুমন্ত আনারকলিকে বলে, ওঠো আনারকলি ওঠো শহীদ মিনারে যেতে হবে।
শিবব্রত দাদা এবার পৌরাণিক গল্প থেকে রেফারেন্স দিয়ে বলে, সীতাকে উদ্ধারে রামকে যেমন রাবণবধ করতেই হতো; চেতনা উদ্ধারে আমাদের তেমন ইন্টেরিম বধ করতেই হবে। চলো চলো যুদ্ধে চলো।
ওদিকে ময়ূখরঞ্জন ও তসলিমা নাসরিনের ঘুম ভাঙ্গতে দেরি হয়ে যায়। এরিমাঝে ক্ল্যারিফিকেশন এসে পড়ে, প্রজ্ঞাপনে মুজিব নগর সরকারের সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি অক্ষুণ্ণ রয়েছে। মিডিয়া ফেইক নিউজ ছড়িয়েছে।
প্রতিবাদী ড্রাফট করতে যাদের একটু দেরি হয়ে গেলো তারা সেগুলো অনলি মি করে রেখে দেয়; মিডিয়া নিশ্চয়ই আবার চেতনার চুইংগাম চেবানোর মতো ফেইক নিউজ এনে দেবে; তখন অলসতা না করে চট করে স্টেটাসটা পাবলিক করে দেয়া যাবে।
পাঠকের মন্তব্য