All Eyes On Rafah যেভাবে রাফার জন্য লড়েছে

৬৬২ পঠিত ... ১৭:০৪, জুন ০১, ২০২৪

354e39ee-55fa-4a89-a774-06cf8a79d400

এআই জেনারেটেড একটি ছবিতে তোলপাড় এখন সোশ্যাল মিডিয়া। সেখানে অসংখ্য তাবুর প্রতিকৃতির ভেতর লেখা ‘All Eyes on Rafah’।

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সারাবিশ্বের আরও অনেক মানুষের পাশাপাশি গত কিছুদিন ধরে লড়ে লড়ে যাচ্ছে এআই জেনারেটেড এই ছবিটি।

গত ২৮ তারিখ ইজরায়েল গাজার রাফা উপত্যকায় বিমান হামলা চালিয়েছে। দুই দিন সময় নিয়ে রাফার দুই দিক থেকে ট্যাংক নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েলি বাহিনী। হামাসের অস্ত্র গোলাবাররুদ সংগ্রহের লাইন, মিশরের সাথে বর্ডার ফিলাডেলফি করিডোর নিজেদের হাত করে নিয়েছে ইজরায়েলি বাহিনী। এই মুহুর্তে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের যুদ্ধ বন্ধ করার নির্দেশ অমান্য করে ইজরায়েল, গাজা শহরের অর্ধেক নাগরিকের আশ্রয়স্থল রাফার দিকে এগুচ্ছে।

এই ঘটনার মধ্যেই অনলাইন দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ‘All Eyes On Rafah’ ছবিটি। ইনস্টাগ্রামে @shahv4012 অ্যাকাউন্ট থেকে এআই দিয়ে তৈরি করা এই ছবিটি ইনস্টাগ্রামে প্রথম পোস্ট করা হয় । পোস্টের পর থেকেই ভাইরাল হয়ে যায় ছবিটি। এখন পর্যন্ত  প্রায় ৫ কোটিবার শেয়ার করা হয়েছে এটি। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের সেলিব্রেটি, যে যার ছবিটি শেয়ার করে রাফাহবাসীদের প্রতি নিজেদের সমর্থন জানিয়েছেন। ছবিটি যেন বলছে, রাফাহর দিকে আমাদের সবার চোখ আছে। সাবধান।

ছবিটা ৪/৫ দিন আগেরও হলেও স্লোগানটা বেশ পুরোনো। গত ফেব্রুয়ারিতে ফিলিস্তিনে অবস্থানরত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিনিধি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময়, পৃথিবী যে পুরো গাজায় চলা নৃশংসতার দিকে তাকিয়ে আছে সেটা বোঝানোর জন্য প্রথম বলেছিলেন ‘All eyes are on rafah now’. এরপর সময়ে সময়ে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা তার ঐ ভিডিও সাক্ষাৎকারটি রেফারেন্স শেয়ার করে আসছেন। যেখান থেকেই লাইন নিয়ে তৈরি করা হয় ভাইরাল ছবিটি।

সাধারণত যুদ্ধের ছবিতে অনেক ভায়োলেন্স থাকায়, রক্ত থাকায় সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যালগরিদম সেটিকে ছড়িয়ে পড়া থেকে রোধ করে। যার ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফিলিস্তিনের বেশিরভাগ ছবির রিচও বেশ কম। কিন্তু এই সাধারণ ছবিটি এত দ্রুত বিশ্বের জনপ্রিয় সব সোশ্যাল সাইটে কীভাবে ছড়িয়ে পড়ল?

এক্সপার্টদের মতে এর পেছনে কাজ করছে বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টর। প্রথমত, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে গেলে এখনকার পরিস্থিতিতে মানুষ তাদের রাগ, ক্ষোভ, ঘৃণা, উৎকন্ঠা প্রকাশের জন্য স্লোগানকে ব্যবহার করছে। পাশাপাশি ফিলিস্তিনের মানুষের দুর্দশাও মানুষকে ভাবিয়েছে। এই স্লোগানটা যেন সবার নিজের কথাই বলে দিচ্ছে। তাই নিজেদের ওয়ালে শেয়ার করছে সবাই।

একই সাথে ছবিটিতে রাফাহ বা ফিলিস্তিনের চিরাচরিত কোনো দৃশ্য বা ছবি নেই। একটা পাহাড়ের পাদদেশে অনেকগুলা তাবু দেখা যাচ্ছে। সেই তাবুর মাঝেই লেখা আছে All Eyes On Rafah. ছবিটি এতটাই সাধারণ হওয়ায় শুরুতে সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যালগরিদম বুঝে উঠতে পারেনি। তার আগেই ছড়িয়ে পড়ে এটি।

আর একটা ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে ইনস্টাগ্রামের Add Yours ফিচারটি। এই ফিচারটির ফলে মাত্র ২ ক্লিকেই ছবিটি যে কেউ নিজেদের নিজেদের ওয়ালে রিশেয়ার ও পোস্ট করতে পারে। @shahv4012 আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করার সময় এই ফিচারটি ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বের নামিদামি সেলিব্রেটিরা শেয়ার দেয়ার ছড়িয়ে পড়ে আরও দ্রুত।

ইউনিভার্সিটি অব গ্লাসগোর কমিউনিকেশন, মিডিয়া অ্যান্ড ডেমোক্রেসির শিক্ষক ড. রাইলির মতে এই ছবিতে সাইটগুলোর কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড ভায়োলেট করে এমন কোনো রকম গ্রাফিক্সের কাজ নেই, কোনো রক্তপাত কিংবা জখমের চিহ্ন নেই। খুবই সাদামাটা একটা ছবি কিন্তু জোড়ালো একটা বার্তায়।

বিশ্বমানবতা নিয়ে কাজ করে এমন সব সংস্থ্যা এই ছবিটি ব্যবহার করেছে নিজেদের সোশ্যাল পেইজে, তারা #AllEyesOnRafah হ্যাশট্যাগ দিয়ে বেশি বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে নিজেদের বার্তা।

গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর যে হামলা নির্যাতন হচ্ছে তাতে গাজা উপত্যকা সারাবিশ্বের মানুষের কাছে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে ইতিমধ্যে। ‘All Eyes On Rafah’ ব্যবহার করে সবাই যে শুধু  অনলাইনেই ফিলিস্তিনকে সমর্থন দিচ্ছ তাই নয়, সারা বিশ্বে যেখানে গাজার মানুষের নিরাপত্তা চেয়ে মিছিল হচ্ছে, আন্দোলন হচ্ছে, একটিভিজম হচ্ছে সব জায়গায় প্ল্যাকার্ড প্ল্যাকার্ডে ছেয়ে গেছে ‘All Eyes on Rafah’

We all are watching actually. What's gonna happen there, We only pray for peace.

৬৬২ পঠিত ... ১৭:০৪, জুন ০১, ২০২৪

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top