হুমায়ূন সাহিত্যে গু-নামা

১৩০১ পঠিত ... ১৮:৩৩, জানুয়ারি ০২, ২০২৪

412216952_1509049643000708_7996122204007016766_n

সাইফ মিরাজ

হুমায়ূন আহমেদ 'গু' শব্দটি তার লেখায় সরাসরি ব্যবহার করতে ভালোবাসতেন। তার অনেক লেখায় এমনকি ব্যক্তিজীবনেও 'গু' শব্দটির প্রভাব ছিল বিস্তৃত। সেই প্রভাবে এককালে আমিও ব্যাপক প্রভাবিত ছিলাম। সেজন্য তার বইগুলো পড়ার সময় মাঝেমাঝে গু যুক্ত অংশগুলো টুকে রেখেছিলাম। নিচে তার কিছু নমুনা দেওয়া হলো।

১#

বলরাম কসম কাটলেন, দশ দিনে যদি পাত্তা বের করতে না পারি বাটখারা দিয়ে মেপে আড়াইশ গ্রাম কাচা গু খাব।

আসমানিরা তিন বোন

২#

মর্জিনা বারান্দা থেকে গজগজ করছে, ‘তুই আমারে মরা পাখির গোশত খাওয়াইছস, তোরে আমি যদি গু না খাওয়াই তাহলে আমি সতী মায়ের কন্যা না। আমি  বেজন্মা। তরকারির চামচ দিয়া তরে আমি এক চামচ কাচা গু খাওয়ামু। তুই আমারে অখনো চিনস নাই।‘

তেতুল বনে জোছনা

৩#

খালা(মাজেদা খালা) কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন, ‘ও হিমু, কীসে পাড়া দিলাম?’

আমি বললাম, ‘মনুষ্যবর্জ্যে পা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছ।‘

:মনুষ্যবর্জ্য আবার কী?

সহজ বাংলায়, 'গু'।

হিমু এবং হার্ভার্ড পিএইচডি বল্টু ভাই

৪#

খাওয়াটাই আসল, গন্ধ কিছু না।

গু যদি খাইতে ভালো হইত, মানুষ নাকে চাপ দিয়া সমানে গু খাইত।

তেতুল বনে জোছনা

৫#

আবুল খায়ের বললেন, ‘আপনি কি বিদায় হবেন?’

রশীদ উদ্দিন উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বললেন, ‘আপনাকে কুৎসিত একটা গালি দিতে ইচ্ছে করছে। যে গালি শুনলে আপনার পিত্তি জ্বলে যাবে এ রকম গালি। তা না দিয়ে একটা ভদ্র গালি দিচ্ছি। হাজার হলেও আপনি মন্ত্রী মানুষ। “তুই গু খা। ফ্রেশ গু না, তিন দিনের বাসি গু। যার উপর নীল রঙের মোটা মোটা মাছি ভোঁ ভোঁ করে উড়ছে।”

কিছুক্ষণ

৬#

তার মেয়ে-জামাই খুব উৎসাহের সহিত বলল, 'ন হচ্ছে কোমল বর্ণ। সেই কোমল বর্ণ ব্যবহার করে এক বর্ণের একটি নাম রেখেছি নু। সবাই দুই অক্ষরের তিন অক্ষরের নাম রাখে। আমার ভালো লাগে না। নু নামটা আপনার কাছে ভালো লাগছে না?'

তিনি কোনো উত্তর দিলেন না। তবে মনে মনে বললেন, 'ন' ছাড়াও তো আরও সুন্দর সুন্দর বর্ণ আছে। 'গ' ও তো সুন্দর বর্ণ। গ দিয়ে গু রেখে ফেললে আরও ভালো হতো। মানুষের নাম হিসেবে খুব আনকমন হতো। এর আগে এই নাম কেউ রাখেনি।‘

মজার ভূত

৭#

সাজ্জাদ চোখ মুখ উজ্জ্বল করে বলল, ‘বড় এক বালতি “গু” ওর বারান্দায় ঢেলে রেখে আসব।‘

আতাহার তাকিয়ে রইল, মনে হচ্ছে জ্বর সাজ্জাদের মাথায় উঠে গেছে।

সাজ্জাদ আতাহারের দিকে খানিকটা ঝুকে এসে বলল, ‘বিশ-পঁচিশ সের টাটকা গু ফেলতে পারলে আর দেখতে হবে না। জন্মের শিক্ষা হবে।‘

: বিশ-পঁচিশ সের টাটকা গু তুই পাবি কোথায়?

: পাওয়া যাবে, ঢাকা মেথর পট্টি বলে একটা জায়গা আছে…

প্রয়োজনবোধে পনের দিন অন্তর অন্তর গু চিকিৎসার ব্যবস্থা হবে। যেদিন সুবর্ণ বের হবে সেদিনই তিন বালতি গু।

কবি

৮#

নিনিতের জন্মের অল্প কয়েকদিন আগে হঠাত তার মনে হলো, কনিষ্ঠ পুত্রের জন্য নিজ হাতে একটি কাঁথা বানাবেন তিনি! কাঁথা বানানোর জন্য কাপড় কেনা হলো, রঙ পেন্সিল দিয়ে নানান আঁকিবুঁকি করলেন সেই কাপড়ে। তারপর মধ্যখানে বড় করে লিখলেন “গু বিলাস”!

ব্যক্তিজীবনের গল্প থেকে

৯#
গরম গরম চা আর আকিজ বিড়ি, কোষ্ঠের জগতে তোলপার। কোষ্ঠ মানে জানেন তো? গু, কোষ্ঠ কাঠিন্য মানে কঠিন গু।

হিমু কয়েকটি ঝিঁ ঝিঁ পোকা।

১০#

বাড়িত যা, বাড়িত গিয়া খাবলাইয়া খাবলাইয়া গু খা।

জ্বীন কফিল/ভয়

১১#

একদিন শাওনের হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দিলেন, তাতে লেখা, ‘তোমার এই সাদা আলখেল্লা আমার খুব অপছন্দ। তার পরও আমাকে রাগাবার জন্য আলখেল্লা পরে আসো কেন?’ রাগের সময়ও তার ভরসা ছিল চিরকুট। একবার তিনি রাগের বশে লিখেছিলেন, ‘শাওন, তুমি গু খাও।’

ব্যক্তিজীবনের গল্প থেকে

১২#

রফিক গোলাগুলি শুরু হওয়া মাত্র পালিয়ে গিয়েছিল। খাওয়া দাওয়ার সময় সে আবারও উপস্থিত হলো এবং অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে খাওয়া দাওয়ার তদারকি করতে লাগল। একবার শুধু ফাঁক পেয়ে নাইমুলকে বলল,  ‘স্যার, যতদিন জীবন আছে আমি আপনার সাথে আছি। আর আপনারে ছাইড়া যাব না। ভয় পাইয়া দৌড় দিছিলাম। আমি গু খাই।‘

জোছনা জননীর গল্প

১৩#

অফিস থেকে ৫,২৬,০০০/= টাকা একবার হারিয়ে ফেললেন আশরাফ সাহেব, সেই টাকা মুমিন দিয়ে দিলো।

কাকটার সাথে তিনি তার টাকা হারানোর কথাটা বললেন। কাকটা বলল, ‘টাকা নিয়েছে হেড ক্যাশিয়ার।‘ কাকের পরামর্শে তিনি তার বসকে ফোন করে বলেন, ‘কা - কা - কা তুই গু খা।‘ পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন কাকটি নেই পালিয়ে গেছে। পরদিন রাতে তিনি যখন আবার শুতে গেলেন তখন কাকটি তার জানালায় এসে বসল, আবার তার সাথে কথা বলতে শুরু করল। কাকের চাপা চাপিতে তিনি আবার হেড ক্যাশিয়ারকে ফোন করে বললেন, ‘কা - কা - কা তুই গু খা।‘

আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ

১৪#

একবার সবাই দৌড়াচ্ছিল গাছতলার দিকে, একজন পথচারী জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী হয়েছে?’ আমাদের মধ্যে একজন জবাব দিল, ‘আকাশ থেকে গু পড়ছে।‘ পথচারী বললেন, ‘কী সর্বনাশ আসমানের গু!’ তিনিও ছুটতে শুরু করলেন।

কিছু শৈশব

১৫#

]প্রশ্ন: হিমু হলুদ পাঞ্জাবি পরে কেন?

লেখক: হিমু খালি পায়ে হাঁটাহাঁটি করে বলে প্রায়ই বিষ্ঠায় পা দেয়। বিষ্ঠার রং হলুদ। হিমু বিষ্ঠা পছন্দ করে বলেই হলুদ তার প্রিয় রং। বিষ্ঠা কি জানো তো? বিষ্ঠা হলো 'গু'।

হিমুর একান্ত সাক্ষাৎকার

১৬#

গায়ে ময়লা মেখে বসে আছেন কেন?

কী করব বলেন, নাম হয়েছে ময়লা-বাবা। নামের কারণে ময়লা মাখি। গু মেখে বসে থাকলে ভালো হতো। লোকে বলত গু-বাবা। হিহিহি।

হিমুর দ্বিতীয় প্রহর

১৭#

ইমরুলের আঁকা প্রতিটি রাক্ষস এবং ভূতের আলাদা আলাদা নাম আছে। যেমন, পানিভূতটির নাম— হাকু। এই ভূতের বিশেষত্ব হইল তাহার প্রধান খাদ্য মানুষের গু। গু শব্দটি সরাসরি ব্যবহার করিবার জন্য আমি দুঃখিত। আপনার রুচিবোধকে আহত করিয়া থাকিলে নিজগুণে ক্ষমা করিবেন।

সে আসে ধীরে

১৮#

সকিনা বলল, ‘আফনের ভাইজানেরে জিগান কী বলতেছি। যদি প্রমাণ হয় আমি মিথ্যা বলেছি, তাইলে আমি মামার কাঁচা গু খামু।‘

দাঁড়কাকের সংসার কিংবা মাঝে মাঝে তব দেখা পাই

১৯#

আমার কোনো অসুবিধা নেই। অসুবিধা হবে তোর।

ভাইয়া গম্ভীর গলায় বলল, ‘কী অসুবিধা? তোর বিয়েশাদি হবে না। পাত্রীপক্ষের কাছে খবর যাবে গু ইন্জিনিয়ার। গু ইন্জিনিয়ারকে বিয়ে করতে কোনো মেয়ে রাজি হবে না। মেয়েদের শুচিবায়ু।‘

ইস্টিশন

২০#

আমি বললাম, ‘এক চামচ হুইঙ্কি যখন খেয়েছ তখন এক চামচ গু খেতে হবে। গু খেলে বমি হবে। পেটের জিনিস বের হয়ে আসবে। আমি যদি সতী মায়ের সতী কন্যা হই, তোমাকে আজ আমি এক চামচ গু খাওয়াব বলেই চায়ের চামচে এক চামচ গু নিয়ে এলাম।‘

রীনা শঙ্কিত গলায় বলল, ‘খাওয়ালেন? গু দেখেই হুজুরের খবর হয়ে গেল। বুঝে গেল আমি খাইয়ে ছাড়ব। বমিটমি করে ঘর ভাসিয়ে ফেলল।‘

মেঘ বলেছে যাব যাব

২১#

মনে করা যাক চিকিৎসা হিসেবে সে গু খাইয়ে দিয়েছে। তখন ধরতে হবে গু হলো কোরামিন ইনজেকশন। ঠিক না খালা?

সে আসে ধীরে

২২#

আমি আপনাকে পাগলের তেল এনে দিব। এই তেল এক সপ্তাহ মাথায় মাখবেন। ইনশাআল্লাহ আরোগ্য হবেন। যদি আরোগ্য না হন আমি নিজের গু নিজে চেটে খাব।

: বিরানির বদলে গু খাবেন?

: অবশ্যই খাব। একবার যখন বুলেছি তখন খাব।

একটি সাইকেল এবং কয়েকটি ডাহুক পাখি

২৩#

তোমারে আমি ইতালির কুত্তার গু চেটে খাওয়াব। এম্বেসির মাধ্যমে যখন মামলা শুরু হবে, তখন পাতলা পায়খানা করতে করতে তোমার জীবন যাবে।

এই শুভ্র এই

২৪#

পীর মামা বললেন, ‘এখন এক কাজ কর পাটকাঠির মাথায় কাচা গু মাখিয়ে আন। এনে এই জবান বন্ধ লোকের মুখে চুকিয়ে দে। ইনশাল্লাহ জবান ফুটবে।‘

এক লোক দৌড়ে গেল পাটকাঠিতে গু মাখিয়ে আনতে। উপস্থিত ভক্তবৃন্দের মধ্যে আনন্দের নাড়াচাড়া দেখা গেল। খালু সাহেবের চোখ দেখে মনে হচ্ছে যে-কোনো মুহূর্তে অক্ষিকোটির থেকে চোখ বের হয়ে আসবে। চারদিকে চরম উত্তেজনা।

পীর মামা হাত উঁচু করে উত্তেজনা কিছুটা কমালেন। মিষ্টি গলায় বললেন, ‘গু খাওয়ানোর আগে এর মাথাটা কামায়ে দে। মাথা কামানো কোনো চিকিৎসা না। আমার সঙ্গে বেয়াদবি করেছে বলে শাস্তি। আমারে সেলামালকি দেয় নাই।‘

মামার কথা অক্ষরে অক্ষরে পালিত হলো। ওয়ান টাইম রেজারে মাথা মুণ্ডিত হলো। খালু সাহেবকে এখন দেখাচ্ছে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মতো। চেহারার মধ্যে কেমন যেন মায়া মায়া ভাব চলে এসেছে।

পীর মামা খালু সাহেবের দিকে তাকিয়ে অতি মধুর গলায় বললেন, ‘বাবা গো, এখন একটু গু খাও। বেশি খাইতে হবে না। পাটকাঠির মধ্যে যতটুকু আনছে ততটুকু খাইলেই কাজ হবে। মুখ বন্ধ কইরা রাখবা না। কেমন? মামার কথা শোন।‘

গু-মাখানো পাটকাঠি এসেছে। মামার মতোই অত্যন্ত বলশালী এক লোক সেই পাটকাঠি নিয়ে এগিয়ে আসছে। সেই কাঠি মুখের ভেতর ঢুকাতে হলো না। তার আগেই খালু সাহেব স্পষ্ট গলায় বললেন, ‘খাব না, আমি গু খাব না।‘

চারদিকে আনন্দের হুল্লোড় উঠল। ফুটেছে, জবান ফুটেছে। আল্লাহু আকবর। আল্লাহু আকবর।

সে আসে ধীরে

১৩০১ পঠিত ... ১৮:৩৩, জানুয়ারি ০২, ২০২৪

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top