আমার দেশ বন্ধের সময় প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কি চুপ ছিল?

৩৫০ পঠিত ... ১৯:১৫, ডিসেম্বর ২২, ২০২৫
24 (21)
লেখা: সজিব মিয়া 
 
কিছু ব্যাপারে কথা না বললে, সত্যটা প্রচার না করলে দুষ্টু লোকদের মিথ্যা–বয়ান প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। এই ‘জেগে ঘুমানোদের’ অনেকে বলার চেষ্টা করছেন ২০১৩ সালে তৎকালীন সরকার মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হলে বা আমার দেশ পত্রিকার ছাপাখানা বন্ধ করাসহ দিগন্ত টেলিভিশন ও ইসলামিক টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করা হলে কেউ টুঁ-শব্দটি করেননি। কেউ বলতে এই লোকেরা বোঝাতে চেয়েছেন—গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে বর্তমানে যারা কথা বলছেন, সেসব লোক বা প্রতিষ্ঠানকে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, তাদের রাগটা মূলত প্রথম আলোকে জড়িয়ে, প্রথম আলো তখন কী করেছে!
 
ধারাবাহিক খবর প্রকাশ ছাড়াও ২০১৩ সালের ১৮ মে একটি যৌথবিবৃতি দিয়ে ছাপাখানা খুলে দিয়ে দৈনিক আমার দেশ প্রকাশ, পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি, দিগন্ত টেলিভিশন ও ইসলামিক টেলিভিশনের সম্প্রচার চালু করার ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন দেশের ১৫টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক।
বিবৃতিটি সই করেছিলেন ইনডিপেনডেন্ট সম্পাদক মাহবুবুল আলম, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, নিউজ টুডে সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, মানমজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, ইনকিলাব সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দীন, নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, নিউ নেশন সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, দৈনিক সংবাদ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুনীরুজ্জামান, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম ও যুগান্তর-এর নির্বাহী সম্পাদক সাইফুল আলম।
বিবৃতিতে বলা হয়, একজন সম্পাদককে গ্রেপ্তার, পত্রিকার প্রকাশনা ব্যাহত ও দুটি টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের পরমতসহিষ্ণুতা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। একই সঙ্গে দেশে গণতন্ত্রের চর্চা ও বিকাশের ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা হিসেবে চিহ্নিত ও বিবেচিত হচ্ছে।
বিবতিতে তাঁরা বলেন, ‘সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের অধিকারের ওপর আশঙ্কাজনক হুমকি।’
602342289_26399137189674088_4442152332300338168_n
………….
সেসময় এই বিবৃতি প্রকাশের জেরে সরকার ও সরকারঘনিষ্ঠ নাগরিক সমাজের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ১৫ সম্পাদক। আমার দেশ বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে তাঁরা বলার চেষ্টা করেছিলেন, উগ্র প্রতিক্রিয়াশীল ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর মুখপত্র হিসেবে পরিচিত আমার দেশ অভাবনীয় দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। বিশেষ করে ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে আমার দেশ-এর সংবাদ পরিবেশনা ও মন্তব্যসহ প্রচারণামূলক তৎপরতা শুধু সামাজিক শান্তির প্রতিই হুমকি ছিল না, সেটা দেশের আইন ও সংবিধানেরও পরিপন্থী। সাংবাদিকতার নীতিমালা না মেনে পত্রিকাটি এমন অনেক উদ্দেশ্যমূলক মন্তব্য করেছে, যা কার্যত ছিল উসকানিমূলক। আমার দেশ নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতার চর্চা করতে গিয়ে অন্য অনেকের মানবাধিকার ও সামাজিক মর্যাদা খর্ব করেছে।
………….
এরপরও দেশের অনেক গণমাধ্যম বিশেষ করে প্রথম আলো মাহমুদুর রহমানের গ্রেপ্তার ইস্যুতে যত প্রতিবাদ–সামবেশ হয়েছে, মন্তব্য এসেছে সব কাভার করেছে, প্রকাশ করেছে।
২০১৮ সালের ২২ জুলাই কুষ্টিয়ায় আদালত চত্বরে হামলার শিকার হন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। প্রথম আলো প্রথম পাতায় সেই খবরটি প্রকাশ করেছিল।
প্রথম আলো নিজেদের নীতিমালা অনুযায়ী রক্তাক্ত ছবি প্রকাশ করে না। সেই নীতিমালা ভেঙে তারা মাহমুদুর রহমানের রক্তাক্ত ছবি প্রকাশ করেছিল।
৩৫০ পঠিত ... ১৯:১৫, ডিসেম্বর ২২, ২০২৫

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top