দেশে দেশে যুদ্ধ-বিগ্রহ, হুমকি-ধমকি, বোমা-বন্দুক হামলার ঝুড়ি ঝুড়ি সমারোহ। এরই মধ্যে যেন নতুন মাত্রা যোগ করছে যুক্তরাষ্ট্রের ভেনিজুয়েলা হামলা, অন্তত মার্কিনীদের সামরিক মহড়ার অনুশীলন তেমন বার্তাই দিচ্ছে। কিন্তু সেই যুদ্ধের হুমকিতে পাল্টা ধমকি না দিয়ে কিনা হাস্যকর কাজ শুরু করে দিয়েছেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো, এ তো ঘোর কলিকাল। ওয়ার ক্লাব নয়, পুরো ব্যাপারটিকে যেন একটি আস্ত একটা কমেডি ক্লাব বানিয়ে ফেলেছেন মাদুরো। যুদ্ধের ধামামার মধ্যে দাঁড়িয়ে তিনি নিরঙ্কুশ করে যাচ্ছেন স্ট্যান্ডআপ কমেডি।
হাস্যরহ, মিম, রসবোধ রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেকটা সাদা হাতির মতো ব্যাপার। কেউ সহজে করতে পারেন না, করলে বাকিরা আবার তা নিতে পারেন না।
মাদুরো সেই অকাজটাই করতে বসেছেন তাও বেশ হেলেদুলে। কোথায় হুমকির বদলে দু-চারটা হুমকি দেবেন, টেবিল চাপড়াবেন, মিসাইলের বদলে ছুঁড়বেন পাল্টা মিসাইল... কিন্তু না, সেসব না করে তিনি ‘জাস্ট পিস, নট ওয়ার’ গান গাইছেন, নিজেই তাতে নাচছেন, মুখ আবার হাসিহাসি। যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই—বারবার এই আহ্বান জানাচ্ছেন গানে গানে।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মতো হর্তাকর্তারা হয়তো এই ব্যাপারটার জন্য মাদুরোকে যুদ্ধের ময়দানের একটা কুলাঙ্গার বলেই আখ্যায়িত করবেন। এর চেয়েও ভয়ংকর তথ্য, মাদুরো নিজেকে মার্কিন মুলুকে টেইলর সুইফটের চেয়েও জনপ্রিয় দাবী করেছেন। শুধু লিরিক্সের অভাবে নাকি তার প্রতিভা সেভাবে বিকশিত হচ্ছে না। একটু ভালো লিরিক্স পেলেই সবাই টের পাবে গানটা সে কত ভালো গায়। গানের অ্যালবামও হয়তো রেকর্ড করে ফেলতে পারেন। উনি ডুয়োলিংগোকেও বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একই আদলে নিজস্ব ঢংয়ে বানিয়েছেন ভাষা শেখার অ্যাপ, মাদুরোলিংগো!
সমস্যা হচ্ছে তার দেশের জনগণের মধ্যেও হয়তো দাঁত ভাঙ্গা হিংস্র জবাব দেয়ার মানসিকতা সেভাবে নেই। তারাও মাদুরোর সাথে নাচছেন, গাইছেন, দাঁত বের করে হাসছেন। তারাও হয়তো বুঝে গেছেন ট্রাম্পের মিসাইলের বিপরীতে মাদোরের বেসুরো গলার গানই বেশি শক্তিশালি! নয়তো এমন সংকটপূর্ণ মুহূর্তে প্রেসিডেন্টের এমন রসবোধকে কেউ সহজভাবে নেয়?



পাঠকের মন্তব্য