ডিয়ার ইন্ডিয়া, ইট'স নট ইউ, ইট'স মি; মুভ অন

৩৩৮ পঠিত ... ১৭:৪৪, নভেম্বর ১১, ২০২৫

আফগানিস্তানের তোরাবোরায় বসে আল-কায়েদা নেতা জওয়াহিরি যেভাবে সন্ত্রাসী হামলার নির্দেশনা দিত; ভারতের লুটিয়েন্সে বসে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হাসিনা ঠিক সেইভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী হামলার নির্দেশনা দিয়ে চলেছে। ২০২৪ সালের ৫ অগাস্টের পর ভারতের গদি মিডিয়া ও বাংলাদেশে সক্রিয় আওয়ামী লীগ সমর্থক সাংবাদিকেরা একযোগে সন্ত্রাসবাদী নেতা শেখ হাসিনার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে পৃষ্ঠপোষকতা করে চলেছে।

বাংলাদেশ থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধ করে পালানো সন্ত্রাসী নেতা শেখ হাসিনা ও তার দলীয় সন্ত্রাসীদের ভারতে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে দিল্লি প্রশাসন এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অংশীদার হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলে এ কারণে ভারতের ক্ষমতা কাঠামো প্রশ্নের মুখে পড়েছে, বন্ধুহীন হয়েছে। ভারতের সেইফ হ্যাভেনে বসে সন্ত্রাসী নেতা হাসিনার নির্দেশে গত প্রায় ১৫ মাস ধরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটে চলেছে; তার দায় দায়িত্ব সমানভাবে ভারতের ক্ষমতা কাঠামোর কাঁধে বর্তায়। ভারতের স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, গদি মিডিয়া, মোদী সমর্থক বুদ্ধিবৃত্তিক গোষ্ঠী সন্ত্রাসী শেখ হাসিনা ও তার নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী দলকে বাংলাদেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য যে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে; তাতে এটা স্পষ্ট হয়ে যায়; ভারত এই নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী দলের ওপর ভর করে বাংলাদেশে এর প্রভাব বিস্তার করতে মরিয়া।

গত পনেরো মাস ধরে ভারতের মিডিয়ায় বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুয়া সংবাদ প্রচারের বিষয়টি এখন গোটা পৃথিবীর কাছে স্পষ্ট। অথচ বাংলাদেশে  নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের এমবেডেড জার্নালিস্ট উইং ভারতের মিডিয়ার ভুয়া সংবাদ উদ্ধৃত করে প্রোপাগান্ডা অব্যাহত রেখেছে।

ভারত পুরো দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসীদের মদদ দিয়ে দেশগুলোর অভ্যন্তরে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে থাকে। সে কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় কোন প্রতিবেশীর সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক টিকে নেই। ভারত যেহেতু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসীদের মদদ দিয়ে চলেছে; আর তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট; তাই ভারতের মিডিয়ায় 'বাংলাদেশ ভারতের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মদদ দিচ্ছে;' এমন একটি বানোয়াট ন্যারেটিভ প্রচার করে নিজের অপরাধ লঘুকরণের চেষ্টা করছে। একে বলা হয় ওপর থেকে আসা। অর্থাৎ নিজেই অপরাধ করে তারপর বড় গলা করে আঙ্গুল তুলতে আসা। এই ফর্মুলাটি দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত সফলভাবে প্রয়োগ করেছে ভারতের প্রোপাগান্ডা নির্ভর মিডিয়া আর ক্ষমতা কাঠামো। 

কিন্তু গতবছর ৫ অগাস্টের পর ভারতের বহুব্যবহারে জীর্ণ একটি অপকৌশলও বাংলাদেশে কাজ করেনি। এর কারণ ভারত বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিকদের নিজের চেতনার রঙ্গে রঙ্গিন করে তুলেছিল; তাদের আবেদন ও বিশ্বাসযোগ্যতা শূন্যের কোঠায়।

জুলাই-বিপ্লবে যে তারুণ্য নেতৃত্ব দিয়েছে; তারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বকীয় অস্তিত্বের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তাদের জানা-শোনা ও পঠন-পাঠন বিশ্ববীক্ষায় সমৃদ্ধ। ফলে দক্ষিণ এশিয়ার কোণাকাঞ্চির ভারতীয় পঞ্চায়েতি কালচার তাদের চোখে অত্যন্ত আদিম আর স্থূল চাণক্যবৃত্তির বেশি কিছু নয়। ফলে ভারতের মিডিয়ার প্রতিটি অপকৌশল, মোদি সংশ্লিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের চর্বিত চর্বনের এক পয়সা দাম নেই বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের কাছে। ভারতের অভ্যন্তরেই জওহরলাল ইউনিভার্সিটি বা জাদবপুর ইউনিভার্সিটির তারুণ্য যেভাবে ভারতের ক্ষমতা কাঠামোর বহু ব্যবহারে জীর্ণ চিত্রনাট্য প্রত্যাখান করেছে; একই ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের তারুণ্যের ক্ষেত্রে।

বাংলাদেশের তারুণ্য ইতিহাস-ভূগোল-রাজনীতির একপেশে ভারতীয় বয়ানকে থোড়াই কেয়ার করে। তারা নিজের হাতে ইতিহাস লেখে; ভূগোলের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে; রাজনীতির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ করে।

কাজেই ভারতের ক্ষমতা কাঠামো, মিডিয়া ও তাদের আশ্রিত সন্ত্রাসী সংগঠন বাংলাদেশ বিষয়ে কাশিম বাজার কুটির ষড়যন্ত্র করে পণ্ডশ্রম করছে। তাদেরকে এটা মেনে নিতে হবে ব্যাটল অফ পলাশীর বিজয়ের ক্ষণ আর ফিরে আসবে না। সোশ্যাল মিডিয়ার উজ্জ্বল সময়ে আনন্দবাজার কিংবা আকাশবাণীর গলাভাঁজানো গল্প দাদুর আসরের ঢপের চপ খেতে আর কেউ বসে নেই। জাঢ্য জরদগব ফুরিয়ে যাওয়া ছায়া নর্তক-নর্তকীর এবার রণে ভঙ্গে দেওয়া উচিত।

চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের জমিদারি আর ফিরে পাওয়া যাবে না, আওয়ামী বন্দোবস্তের জমিদারি আর ফিরে আসবে না। ভারতের যে দিন গেছে তা গেছে; তা আর খুঁজে পাওয়া যাবে না রাতের তারায়, দিনের আলোর মাঝে। ডিয়ার ইন্ডিয়া, ইট'স নট ইউ, ইট'স মি; মুভ অন।

৩৩৮ পঠিত ... ১৭:৪৪, নভেম্বর ১১, ২০২৫

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top