পুরা ঢাকা শহরটাই যে একটা বো*ম সেটা কি আপনারা জানেন?

২৪ পঠিত ... ১৮:১৪, অক্টোবর ১৬, ২০২৫

লেখা: কৌশিক কুমার 

পুরা ঢাকা শহরটাই যে একটা বোম সেটা কি আপনারা জানেন? ঢাকা মানে ঢাকা, টঙ্গী, কেরানীগঞ্জ!

আমি নিজে গুনে গুনে ৩২৭টা পর্যন্ত কেমিক্যাল গোডাউন বের করেছিলাম জাস্ট মিটফোর্টের একটা রাস্তা দিয়ে৷ 

যেকোনো কারখানা সেটা পোষাক হোক, ওষুধ হোক আর রং হোক, হোকবা প্ল্যাস্টিকের কারখানা!  সেটার পাশেই থাকে কেমিক্যালের গোডাউন। এগুলিনের আশেপাশের বাড়িগুলো কেমন হয় জানেন? নিচতালা, দোতালা আর যদি থাকে বেজমেন্ট সেসব প্যাকড হয়ে থাকে কেমিক্যাল দিয়ে৷বেশিরভাগই ভালো মতো স্টোর করা হয় না, আধখোলা থাকে, মানা হয় না কোনো নিয়ম। পাশেই একটা ওজন মাপার মেশিন থাকে, থাকে গ্যাসের চুলা, সিলিন্ডার। বাড়ির সামনে একটা-দুটা ভ্যান সবসময় দাঁড়ানো, যেটায় করে খুচরা কেমিক্যাল নিয়ে যাবে দোকানে। 

আমার পঞ্চম বর্ষের মানে ফাইনাল ইয়ারে বুয়েটের টপিক নিয়েছিলাম এই কেমিক্যাল ওয়ারহাউজ নিয়ে। তখন দেখেছি আমরা কতটা অসচেতন আর অবিবেচক! কোনো কিছুই আমাদের টলাতে পারে না, হাজার মৃত্যুও আমাদের কোনো মনোভাব চেন্জ করতে পারে না। জুরিতে একজন স্বনামধন্য আর্কিটেক্ট বলেই বসলেন যে পুরান ঢাকা হতে সরানো যাবে না, হাজারটা কারণ দেখালেন। যেমন পানিপথে নিয়ে আসা (যেটা ইলিগাল, এবং বর্তমানে আসেও ট্রেনে), যুগযুগ ধরে চলে আসা ব্যবসা এবং লোকাল ডিমান্ড (জীবন যেখানে হুমকির মুখে, পুরান গল্প আর বিত্তবান কিছু পুরান ঢাকাইয়ার ডিমান্ডকে আমি থোড়াই কেয়ার করি, যদিও পুরান ঢাকাইয়া লোকজন আসলেই গোয়ার), বেকারত্বের হার বৃদ্ধি (সিরিয়াসলি)! আমি সেগুলোর সাথে দ্বিমত পোষণ করায় উনি অট্টহাসি দিয়ে উঠে গেলেন। স্যার হয়তো ঠিক কিন্তু আমি তার চাইতেও সঠিক এই দিক থেকে যে যতদিন পর্যন্ত না পুরান ঢাকা হতে কেমিক্যাল গোডাউন সরতেছে, পুরা দেশে কীভাবে ডিস্ট্রিবিউট হবে সেটার বেসিসে কোথায় কোথায় হওয়া উচিত সেসব ঠিক করে তা বাস্তবায়ন করা না হবে ততদিন পর্যন্ত আপনার আমার কারোরেই জীবন ঝুকিমুক্ত থাকবে না৷ যেকোনো দিন আপনি আমি যারা ঢাকায় থাকি, সেটা গুলশান হোক আর বসিলা হোক না কেন সমান ঝুঁকিতেই আছি। যতদিন পর্যন্ত না বুড়িগঙ্গার দুধার ধরে বেড়ে ওঠা এই চালা বানিয়ে রাখা গোডাউনগুলো সরবে না ততদিন পর্যন্ত মিরপুরের মতো ঘটনা আসলেই ছোট্ট একটা ঘটনা হিসাবেই থাকবে। 

এদেশে মানুষের মৃত্যুর চাইতে স্কয়ার ফিট প্রতি ১০ টাকা লাভ করা বেশি ভালবাসার চোখে দেখা হয়। তাই তো এই ঘটনা/কাহিনী শতবার হবার পরেও, দেশের সরকার প্রধান হতে, প্রশাসনিক সকল কর্মকর্তা, শিক্ষকমহল, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক নেতা ও তাদের চেলামুণ্ডা, রিকশাওয়ালা, ভিক্ষুক,  পাগল পর্যন্ত জানে, কিন্তু কিছু হয় না। 

যাই হোক প্রতিবার এমনটা হয়, একগাদা মানুষ মরে, আমি একটা স্ট্যাটাস লিখি, এ পর্যন্তই। তারপরই হয় তো কোনো এক হোদল কুতকুত আসবে আমার কাছে বাসাবাড়ি বা বাণিজ্যিক ভবনে মাঝামাঝি ফ্লোরে বা ওপরে বা বেজমেন্টে একটা রেস্টুরেন্ট করতে। আমিও শুয়োরের মতো ঘোৎ- ঘোৎ করতে করতে সেটা ডিজাইন করার নামে কিছু সময় পার করব এ মৃত্যুপুরীতে বসে। 

সামনে শুকনা দিন আসছে, আগুন লাগবে, সাবধানে থাকুন। সাবধানে থাকার চাইতে বড় কথা একটু মানুষ হোন প্লিজ, সাবধানতা অটো চলে আসবে।

২৪ পঠিত ... ১৮:১৪, অক্টোবর ১৬, ২০২৫

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top