মাসুদের কথা আমি লিখব না ভেবেছি। যেভাবে আগেও বহু বহু খুনের কথা লিখিনি। আজ থেকে দশ বছর আগে, ২০১৪ সালে সে তার পা হারিয়েছিল। তার পা কুপিয়ে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল 'ওরা', যাদের নাম আজকে উচ্চারণ করার অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আছে।
সেই মাসুদ, কৃত্রিম পায়ে ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে ক্লায়কিষ্টে একটা ছোটো চাকুরি করে চালিয়ে নিচ্ছিল তার দিন।
মাত্র ৩ দিন আগে সে এক ফুটফুটে সন্তানের বাবা হয়েছিল।
আহা, কী সে আনন্দ।
সেদিন সন্ধ্যায় সদ্য প্রসুতি বউয়ের ওষুধ কিনতে মাসুদ গিয়েছিল পাশের ফার্মেসিতে। সেখানেই তাকে ঘিরে ধরে 'ওরা', যাদের নাম উচ্চারণে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আছে। সেই পুরোনো শকুন। সেই পুরোনো রক্ত পিপাসু গোষ্ঠীর উত্তর প্রজন্ম।
দশ বছর আগের সেই অসমাপ্ত কোপানিগুলো তারা শেষ করেছে। মাসুদকে পেটাতে পেটাতে ফেলে রেখে গেছে। একটা ভিডিও দেখলাম, মাসুদ মারা যাওয়ার আগে পানি খেতে চাচ্ছে।
মাসুদের কথা আমি লিখব না ভেবেছি। কারণ লেখার সাথে সাথে আপনারা সকলেই তেড়ে আসবেন। সকলেই গালি দেবেন। সকলে সমস্বরে পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে জিজ্ঞেস করবেন, এতদিন কোথায় ছিলেন?
আমি তাই এই জার্নাল আপনাদের জন্য লিখি নাই।
আমি এই লেখাটা অনলি মি করে রেখে দেব ফেসবুকের গহ্বরে।
এই লেখাটা আপনাদের জন্য নয়। আপনাদের পড়ার দরকার নেই।
এই লেখাটা পরের প্রজন্মের কাছে আমার আমলনামা মাত্র।
একদিন আলফা জেনারেশন এসে যখন আবার জিজ্ঞেস করবে, সেই স্বৈরাচারীর সময় আপনি কোথায় ছিলেন, তখন হয়ত এই লেখাটা বের করে তাদেরকে বলব, এই তো ছিলাম, অনলি মি হয়ে ছিলাম। ব্যাকস্পেস চাপা স্বাধীনতায় মুখ চেপে বসে ছিলাম।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন