পাগলা মসজিদের প্রতি প্রশ্ন

৩৩৯ পঠিত ... ১৭:৫১, আগস্ট ২৫, ২০২৪

WhatsApp Image 2024-08-24 at 16.57.29_1166762a

কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের কথা আমরা কম-বেশি সবাই শুনেছি। এ মসজিদে সব পাগলদের জমায়েতখানা এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। এই মসজিদের নামকরণের গল্পগুলো বেশ ইন্টারেস্টিং। জনশ্রুতি আছে, হয়বতনগর জমিদার বাড়ির ঈসা খানের বংশধর জিলকদর খান ওরফে জিল কদর ‘পাগলা সাহেব’ নামক একজন আধ্যাত্মিক ব্যক্তি নরসুন্দা নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন। পরবর্তীতে স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারে মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।

অনেকে আবার বলেন, ‘পাগলা সাহেব’ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদের কাছে স্থিত হন এবং তাকে ঘিরে আশেপাশে অনেক ভক্তকূল সমবেত হন। তার ইবাদত-বন্দেগির জন্য দেওয়ান পরিবারের পক্ষ থেকে পাগলা সাহেবের নিজের পছন্দের স্থান নরসুন্দা নদীর মাঝখানে টিলার ওপর একটি টিনের ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। ওই ঘরটি পরবর্তীতে ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

 কেউ বলেন, কিশোরগঞ্জের হয়বতনগর জমিদার পরিবারের এক নিঃসন্তান বেগমকে জনগণ ‘পাগলা বিবি’ বলে ডাকত। দেওয়ানবাড়ির এ বেগম নরসুন্দার তীরে স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে একটি মসজিদ নির্মাণ করলে ‘পাগলা বিবির মসজিদ’ নামে পরিচিতি পায়।

তবে আসল কাহিনী যেটাই হোক না কেন, পরীক্ষিত ফ্যাক্টটি হলো পাগলা মসজিদের দানবাক্স সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভরপুর। গত তিন-চার বছর ধরে, তিন মাস পর পর এ মসজিদের দানবাক্স খুললেই পাওয়া যাচ্ছে কয়েক কোটি টাকা। এর আগে দানবাক্সে টাকা পাওয়া গেলেও তার পরিমাণ এত ছিল না।

তাদের দানবাক্সের আপডেট খুঁজে পেতে বেশ কিছু সংবাদপত্র ঘাটাঘাটি আমাকে করতে হয়েছে। চলুন দেখে আসি।

১#

২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর খোলা হয়েছিল পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স। তখন সেখানে ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এছাড়া প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও পাওয়া যায়।

২#

২০২৩ সালে মোট চারবার দানবাক্স খোলার পর  সেখানে মোট ২১ কোটি ৮৭ লাখ ৮৫ হাজার ১৮১ টাকা পাওয়া যায়। টাকার পাশাপাশি হীরা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ।

৩#

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা, সেই সাথে বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার।

৪#
২০২৪ সালের ২০ এপ্রিল পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে পাওয়া যায় রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা।

৫#

সর্বশেষ গত ১৭ আগস্ট, ২০২৪ সালে ৩ মাস ২৬ দিন পর পাগলা মসজিদের নয়টি দানবাক্স খুলে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। দিনভর গণনা শেষে সেই টাকার পরিমাণ ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা।

মানুষ দান করছেন, কিন্তু দানের টাকা কোথায় যাচ্ছে এ প্রশ্ন না তুললেও হতো। তবে কনসার্নড সিটিজেন হিসেবে এ প্রশ্ন আমাদের তোলা উচিত।

আর বাকস্বাধীনতা যখন অর্জন করেই ফেলেছি, এ নিয়ে প্রশ্ন করতেও ভয় নেই। হোক তা মসজিদ, মন্দির বা প্যাগোডা।

দেশে চলছে এখন একের পর এক দুর্যোগের পালা। ভিক্ষুক থেকে শুরু করে ছোটো শিশু সবাই এগিয়ে আসছে নিজ জায়গা থেকে। আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কমিটি, ড. ইউনূস এবং ৪৪টি এনজিও থেকে আসছে ১০০০ কোটি টাকা। পাগলা মসজিদ কমিটি, আপনারা কোথায় আছেন এবং কী করছেন?

৩৩৯ পঠিত ... ১৭:৫১, আগস্ট ২৫, ২০২৪

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top