চোখের সামনে সাজানো-গোছানো ইন্দোনেশিয়াকে শেষ করে দিচ্ছে জঙ্গিরা। ইন্দোনেশিয়ার নয়নমণি দেশরত্ন প্রভু সুবিয়ান্তোকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে উদ্যত ছাত্র নামধারী উগ্রবাদীরা।
ইন্দোনেশিয়ার উন্নয়নের জন্য প্রভু সুবিয়ান্তো কি না করেছেন, তিনি সাংসদদের মাথাপিছু গৃহ উন্নয়ন বাবদ যে বাজেট রেখেছেন; তা ইন্দোনেশিয়ার মাথাপিছু আয়ের দশগুন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জনস্বার্থে বাজেট হ্রাস করে এলিট ফোর্স ও সেনাবাহিনীর বাজেট বাড়িয়েছেন। রুলিং এলিট সরকারি রাজনৈতিক, সামরিক-বেসামরিক আমলা, ব্যবসায়ীদের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছেন। প্রভু সুবিয়ান্তোর সমর্থনে সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিকর্মীরা গলা মিলিয়েছেন, প্রভুকে বাঁচাও, প্রভুকে বাঁচালেই পথ হারাবে না ইন্দোনেশিয়া।
ইন্দোনেশিয়ার এলিট ফোর্সের সাজোয়া বহর চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছে একুশ বছর বয়েসী একজন ফুড ডেলিভারি কর্মীকে। তাতে কি, উন্নয়নের সেতু রচনা করতে এভাবে সাধারণ মানুষকে বলি দেওয়াই ইতিহাসের শিক্ষা।
উচ্ছৃংখল ছাত্ররা বিক্ষোভের নামে অর্থমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দ্রবতীর গৃহ ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করে। ছোটলোক ফকিন্নি টোকাই কোথাকার। কারা এই ছাত্র, ঘর নাই, দুয়ার নাই, বইসা খাওনের জায়গা নাই, ইন্দ্রবতীর ঘরে ঢুইকা লুটপাট কইরা গেছে; হায় আল্লারে আল্লারে, কারা এরা। বস্তির শক্তিকে এরা হেডম মনে করে; আবার তাদের নাকি জঙ্গি বলা যাবে না। নিগারকে ধলা মানুষ নিগার বললে তারা গোস্বা হয়। কিন্তু নিগার নিগারকে নিগার বললে নিগার কিছু মনে করে না। প্রভু সুবিয়ান্তোর ফর্সা মানুষের সরকারকে তারা হিংসা করে।
বিশিষ্ট ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক চন্দন নন্দী লিখেছেন, এই বিক্ষোভকারীরা একা নয়; তাদের পেছনে আমেরিকা-চীন ও পাকিস্তানের যোগসাজশ আছে। তার সন্দেহ, প্রভু সুবিয়ান্তোর মন্ত্রী পরিষদের তিনজন সদস্য আমেরিকার ডিপ স্টেটের দেওয়া জুস খেয়ে অজ্ঞান হয়েছেন। মি. নন্দী ইসলামী সন্ত্রাসবাদকে দায়ী করেছেন, এই বিক্ষোভ গোটা ইন্দোনেশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পেছনে। তিনি আক্ষেপ করে লিখেছেন, থাকবে না, ইন্দোনেশিয়া আর থাকবে না।
এই বিক্ষোভে প্রায় চল্লিশজন পুলিশ আহত হওয়ায় ১০১ জন বিশিষ্ট সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক এক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছেন, দেশপ্রেমিক পুলিশের ওপর জঙ্গীদের এই হামলার যথাযোগ্য জবাব দিতে হবে। বিক্ষোভকারীরা সরকারি স্থাপনায় আগুন দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদের যে ক্ষতি করেছে; তা অপূরণীয়। ৩.৩ মিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতির প্রেক্ষিতে তারা লিখেছেন, সম্পদ হারানোর বেদনা আমাদের মতো আর কে বোঝে? তারা দুঃখ করে লিখেছেন, বিক্ষোভকারীদের পোস্টারে রিসেট লেখা দেখে বোঝা যায়; তারা ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতার ইতিহাস মুছে দিতে রিসেট বাটনে চাপ দেবে। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে আবার যুদ্ধে নামতে হবে আমাদের।
প্রভু সুবিয়ান্তো হাসপাতালে আহত পুলিশ পরিদর্শনে গিয়ে টিস্যুতে চোখ মুছে বলেছেন, পুলিশের এই ত্যাগ আমরা কখনোই ভুলব না। বিশিষ্ট নাগরিকেরা ফেসবুকে টিস্যুতে চোখ মোছার ছবি দিয়ে লিখেছেন, প্রভু হারলে ইন্দোনেশিয়া হেরে যাবে।
প্রায় ১৩০০ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলীয় শহর মাকাসারে শুক্রবার তিনজন বিক্ষোভকারী নিহত হন। বিক্ষোভকারীরা গোয়েন্দা কর্মকর্তা সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রভুর কালচারাল উইং প্রতিবাদ করে বলেছে, বিক্ষোভের নামে মবতন্ত্র কায়েম হয়েছে। সদ্য পিএইচডি শেষে ইন্দোনেশিয়ায় ফেরা একাডেমিশিয়ানরা লিখেছেন, মব মনস্তত্বকে কোনভাবে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। এনলাইটেনমেন্ট ও অ্যাসথেটিকসের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর এই মব।
পাঠকের মন্তব্য