নিয়মিত খালেদ মুহিউদ্দীনের শো দেখে আমার যা হলো

১২ পঠিত ... ৮ ঘন্টা ৮ মিনিট আগে

 

সপ্তাহে ৪/৫টা টক শো করছেন জনাব খালেদ মুহিউদ্দীন। একজন কঠিন ভক্ত হিসেবে কোনোটাই মিস করি না। ফলাফল হচ্ছে মারাত্মক। আমার কথাবার্তাও ইদানিং খালেদ মুহিউদ্দীনের মতো হয়ে যাচ্ছে।

উদাহারণ দিলে বিষয়টা পরিষ্কার বুঝতে পারবেন। 

সবজি খাওয়া নিয়ে আম্মা আজ দুপুরে খুব চাপাচাপি করলেন। অন্য সময় হলে হয়তো খেয়ে নিতাম। কিন্তু আমি তো বদলে গেছি।

আজ কঠিন স্বরে জবাব দিয়েছি: ⁠জনাব আম্মা, ধরলাম আপনি লাউপক্ষের আইনজীবী। আর আমি মাংসপন্থী দলের সদস্য। এখন একটা জিনিস আমি কিছুতেই বুঝতেছি না। যদি ধইরাও নেই মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ তাও ডেভিলস অ্যাডভোকেট হিসেবে আমি কিন্তু কইতেই পারি মাংস জিনিসটা খাইতে মজা। এখন মজা বিষয়টার কি কোনো ডেফিনিশন আছে? নাই তো! তাইলে এখন আপনি ঠিক ক্যান মনে করতেছেন যে আমার লাউ তরকারি মজা লাগতেই হবে?

আমার আব্বা দীর্ঘদিন আইন পেশায় নিয়োজিত। রাত করে বাড়ি ফেরায় গতকাল খুব রাগ করলেন, ঝাড়লেন।

৩৩ বসন্ত নীরব থাকার পর গতকাল আমি উত্তর দিয়েছি, মাননীয় আব্বা, আপনি ৫০ বছর আইন পেশায়। আমি তো নতুন করে কিছু কইতে পারব না আপনারে। আমি খালি একটা ব্যাপারই জানতে চাই যে, আইনে আপনি রাতে বাহির হইয়া হাঁটাহাঁটি করতে পারেন সে আইনে আমি ক্যান পারমু না? মানে... আমি খালি এইটাই জানতে চাই... এই যে একই ঘটনা, কিন্তু ফলাফল

দুই: এই ব্যাপারে সংসারের প্রধান উপদেষ্টা জনাব আম্মার সাথে আপনার কথা হয়? কথা হইলে উনি কী বলেন আপনারে? আমারে যদি খালি এইটা একটু বলতেন।

একটা ব্যাংক থেকে প্রতি সপ্তাহে ফোন দেয়। প্রতিবারই তাদের কার্ড নেওয়ার জন্য প্ররোচিত করার চেষ্টা করে। এতদিন ফোন কেটে দিতাম, আজকে দেইনি। 

কড়া কথা শুনিয়েছি: আমি খালি আইনের ভাষায় একটা জিনিস জানতে চাই। ক্রেডিট কার্ড নামক চুক্তিপত্রে যখন বার্ষিক সুদের হার ৩০% লেখা থাকে, তখন সংবিধানের মৌলিক অধিকার ধারা ১৫(ক) অনুযায়ী আমার ন্যূনতম জীবনযাত্রার নিশ্চয়তার সাথে ওই চুক্তি ক্যান সাংঘর্ষিক হইবে না?

ব্যাংক... ব্যাংক... ব্যাংক... শুনেন...

আরেকটা জিজ্ঞাসা—ব্যাংকিং আইন ১৯৯১ অনুযায়ী গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণ যেটা বলা আছে, ওই ধারা ক্যান আপনার ফোনকলের ভেতরে অনুপস্থিত?

আপনারা বলেন কার্ড নিলে সুবিধা। কিন্তু আমি হিসাব কইরা দেখি—সুখের পরিবর্তে আমি আইনের ভাষায় ‘perpetual liability’ তে ঢুইকা যাই।

এখন জনাব ব্যাংক, আমি শুধু জানতে চাই—এই চুক্তি আসলে আমারে মুক্তি দেয়, না দেনার খাঁচায় আটকায়?

অন্যদিন আমি ফোন কাটি। আজকে ব্যাংক থেকেই ফোন কেটে দিয়েছে।

সারাদিন বাইরে থাকি, ঘরে এসে মোবাইল টিপি। এ নিয়ে স্ত্রীর অভিযোগের অন্ত নাই। সুযোগ পেলেই প্যানরপ্যানর। 

যথারীতি আজকেও। অন্য সময় হলে নীরব থাকতাম, মাথা নেড়ে নিজের অপরাধ স্বীকার করে নিতাম। কিন্তু খালেদ মুহিউদ্দীন ফ্যান আলিম আল রাজি তো অন্য জিনিস।

আজকে কথা শুনিয়ে দিয়েছি, জনাব স্ত্রী, আপনাকে আমি পছন্দ করি। কথাটা ক্যাম্নে বলমু বুঝতেছি না। তাও বলেই ফেলি, প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও। প্লিজ। 

ক্ষমা পেয়েছি কিনা বুঝতে পারছি না। তবে শেষমেষ জানিয়ে দিয়েছি, মাননীয় স্ত্রী, আমার সাথে যুক্ত থাকার জন্য জার্মানির বন শহর থেকে আপনাকে জানাই ধন্যবাদ।

১২ পঠিত ... ৮ ঘন্টা ৮ মিনিট আগে

আরও

পাঠকের মন্তব্য

আইডিয়া

গল্প

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top