স্কুলের ব্যাকরণ ক্লাসে আমরা যেভাবে শুদ্ধ বাংলার চর্চা করতাম

৩১৬৪ পঠিত ... ১৪:৪৭, মার্চ ১৪, ২০১৯

কুমিল্লা জিলা স্কুলে, বাংলা ব্যকরণের শিক্ষক পন্ডিত স্যার শুদ্ধ ভাষার চর্চার ব্যাপারে খুব কড়া ছিলেন।

স্যার ক্লাশে ঢুকেই বলতেন 'আমার ক্লাসে গেছিলাম, খাইছিলাম এইগুলা বলা চলবে না, সব সময় প্রমিত বাংলায় কথা বলবি। কিরে বুঝতে পারলি?'

'জ্বি স্যার, পরিস্কার বুঝতে পারছি' – ক্লাসের পেছনের বেঞ্চ থেকে একজন চিৎকার করে বললো।

'বল তো আমি কী বলছি?'

'স্যার, পর্যাপ্ত বাংলায় কথা বলতে হবে।'

'পর্যাপ্ত নারে বলদ, প্রমিত বাংলা।'

দুভার্গ্যজনকভাবে, স্যারের ক্লাসেই ছেলেদের ভাষার দূর্বলতা খারাপভাবে ফুটে উঠতো। একবার স্যার ক্লাশে ঢুকে বললেন, 'এই ক্লাস ক্যাপ্টেন কই রে?'
একজন আগ বাড়িয়ে আগ্রহ নিয়ে বললো, 'স্যার ও তো মুততে গেছে, যাওয়ার আগে বলে গেলো আমি মুততে গেলাম, যাবো আর আসবো।'

অলংকরণ: রেহনুমা প্রসূন

স্যার কিছুক্ষণ রাগে দুঃখে নির্বাক হয়ে থাকলেন। তারপর 'মূর্খ, অকালকুষ্মান্ড' বলে গালি দিলেন। যে বেচারাকে গালি দিলেন সে অকালকুষ্মান্ড কি জিনিস বুঝলো কিনা কে জানে!

আরেকবার, ক্লাসের মাঝখানে, এক ছাত্র সিট ছেড়ে উঠে বাইরে যাবার জন্য রওয়ানা দিলো।

'কিরে, কোথায় চললি?' –স্যার ডেকে জিজ্জাসা করলেন।
'স্যার, ছেব ফালাইতে যাই'।
'কী ফালাইতে যাস?'
'স্যার, ছেব, ছেব।'
'আরে বুর্বক, ছেব না, এটাকে থু থু বলে, বল থু থু ফেলতে যাই।'

'থু থু' বলতে গিয়ে ছেলের মুখ গড়িয়ে থু থু পড়ে যায়।

আমার সেই বন্ধু গজরাতে গজরাতে সিটে ফেরত আসে, বিড়বিড় করে বলে 'দুনিয়ার সব কিছুতে স্যারের বাড়াবাড়ি, আরে ছেব যা থু থু ও তা... ছেবরে থু থু কইলে কি ছেবের ইজ্জত বাড়ে না থু থু র ইজ্জত কমে?'

৩১৬৪ পঠিত ... ১৪:৪৭, মার্চ ১৪, ২০১৯

আরও

পাঠকের মন্তব্য

আইডিয়া

গল্প

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top