তারুণ্যের ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে আছে টিএসসির নাম। যেকোনো উৎসব, প্রতিবাদ, কনসার্ট, কবিতা কিংবা নিতান্তই আড্ডা, শহরের তরুণ প্রজন্মের কাছে টিএসসি সবসময় একটা আলাদা নাম। সম্প্রতি মেট্রোরেলের কারণে টিএসসির বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে। কেমন যেন অচেনা লাগতো, মনে হতো টিএসসি বোধহয় রঙ হারিয়েছে।
রেইনবো পেইন্টস-এর সহযোগিতায় টিএসসির সেই রঙটাই যেন ফিরিয়ে দিলেন শিল্পী শিরিন আকতার শীলা। চায়ের কাপে রিকশাচিত্র নিয়ে এই প্রজেক্টের দ্বিতীয় অধ্যায়ও নিয়ে আসছেন বলে নিজের ফেসবুক পোস্টে জানান শিল্পী শিরিন আকতার শীলা।
আজ সকালে নিজের ফেসবুক পোস্ট মারফত তিনি বলেন, ‘রিকশা শিল্প বাংলাদেশে উদ্ভূত নব্য-রোমান্টিসিজমের একটি রূপ। স্ক্রিন প্রিন্টিং এবং এই জাতীয় অন্যান্য প্রযুক্তির কারণে হ্যান্ড পেইন্ট করা জিনিসগুলির ধরনটি শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমরা যদি পশ্চিম-ইউরোপীয় দেশগুলির কথা চিন্তা করি, তাদেরও সারা দেশে বেকারির দোকান রয়েছে। তবে এটি তাদের দোকান এবং রাস্তা জুড়ে উপস্থাপনযোগ্য। মূলত তারা তাদের শিল্প ও সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে। তাই, আমরা আমাদের নিজস্ব আর্ট ফর্ম যেমন রিকশা আর্ট, গাজির পট ইত্যাদি ব্যবহার করে চায়ের স্টল আঁকার উদ্যোগ নিয়েছি।
চা স্টল হল মিলন ও শুভেচ্ছা জানানোর একটি সংযোগস্থল। যেখানে আপনি প্রতিটি প্রজন্মের মানুষ খুঁজে পেতে পারেন, এটা তাদের দ্বিতীয় বাড়ির মত। এমনকি ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী থেকে, রিকশাচালকও পাওয়া যাবে চায়ের স্টলে। অনেক সামাজিক উদ্যোগ, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, বিপ্লবের স্ফুলিঙ্গ শুরু হয় টি স্টল থেকে। এটা কোন ব্যাপার না যে আমরা এখনও কতটা সুবিধা পেয়েছি ‘বিখ্যাত কফি হাউস থেকে এক কাপ কফি পান করার পর, চিনি বা চিনি ছাড়া আদা চা খাওয়ার জন্য রাস্তার পাশের চা স্টলে যায়।’
চায়ের স্টলের মাধ্যমে যদি আমরা আমাদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারি তা আমাদের সমাজে একটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে পারে। প্রাথমিকভাবে আমরা টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এটি শুরু করার পরিকল্পনা করছি। মানুষ বলে টিএসসি ঢাকার প্রাণকেন্দ্র। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রাম ইত্যাদি অতীতের আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ এখান থেকেই এসেছে। তাই, আমরা যদি টিএসসির রঙ পরিবর্তন করতে পারি, তবে আমরা আমাদের সামাজিক পরিবর্তন করতে পারবো।‘











পাঠকের মন্তব্য