ভুল বানানের দরখাস্ত, শিক্ষাগুরু বরখাস্ত!

৬৩১০ পঠিত ... ২১:২৫, আগস্ট ১৭, ২০১৭

জাতীয় শোকদিবসে কিছু ছাত্রের অনুরোধে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া শ্রেণিকক্ষে তাদেরকে পড়া বুঝিয়ে দিয়েছেন এবং একে রাষ্ট্রদ্রোহ হিশেবে অভিহিত করে ঐ শিক্ষককে বহিষ্কার করার দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। শোকদিবসে পড়া বুঝিয়ে দেওয়াটা রাষ্ট্রদ্রোহ কি না, সেই হিশেবে না গিয়ে একটু অন্য দিকে আলোকপাত করা যাক। উপাচার্যের কাছে কুবি ছাত্রলীগ যে দরখাস্তটি দাখিল করেছে, এর ভাষাগত দিকটি একটু পর্যালোচনা করা যাক।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ। ইনসেটে শিক্ষক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া। ছবি : এনটিভি

ছাত্রলীগ ছাত্রদের সংগঠন, লেখাপড়াই যাদের প্রধান কাজ। লেখাপড়া যাদের প্রধান কাজ, প্রাথমিক-মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে; তাদের অন্তত একটা দরখাস্ত শুদ্ধভাবে লিখতে পারার কথা। ছাত্রলীগ নিশ্চয়ই মেধাবীদের সংগঠন এবং এর একটা ইউনিটের সভাপতি-সম্পাদক নিশ্চয়ই ঐ ইউনিটের অন্য নেতা-কর্মীদের চেয়ে বেশি মেধাবী। একটা দরখাস্ত লিখতে তাদের এত ভুল হওয়ার কথা না। অথচ এক পৃষ্ঠার একটা দরখাস্তের ভেতরে-বাহিরে অন্তরে-অন্তরে যত ধরনের ভুল হওয়া সম্ভব, আলোচ্য দরখাস্তটিতে কুবি ছাত্রলীগ তত ধরনের ভুলই করেছে। শোকদিবসে পড়া-বুঝিয়ে-দেওয়া শিক্ষককে দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে ভুল বাক্যে ভুল বানানে তার 'বহিস্কার' দাবি করার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে শুদ্ধ বানানে একটা দরখাস্ত লিখতে শেখা, মাতৃভাষাকে সম্মান করতে শেখা। এই দরখাস্তটা বাংলাদেশ রিকশা-ভ্যান শ্রমিক লীগের লিখিত হলে বানান বা ভাষা নিয়ে এত কথা বলার দরকার পড়ত না, সংগঠনটি ছাত্রদের বলেই এত কথার অবতারণা। তাই, শুদ্ধ বানানে দরখাস্ত লেখা শেখার জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে বিনীত পরামর্শ দিচ্ছি।

৬৩১০ পঠিত ... ২১:২৫, আগস্ট ১৭, ২০১৭

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top