মিম, মিমি, meme যে নামে ডাকিই না কেন, এর একটা আলাদা বিশেষত্ব আছে। বিভিন্ন মুহূর্তকে প্রকাশ করার জন্য যেমন বিভিন্ন গান আছে, তেমনি ভিন্ন ভিন্ন আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য রয়েছে নানা রকম মিম। ধরে নিন, আপনি মোহাম্মদপুরে গিয়ে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার কথা ফেসবুকে শেয়ার করলেন, সবাই এসে অনেক সান্ত্বনা দেবে, কান্নাকাটি করবে, আর আপনার মত আরেক ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া বন্ধু এসে ‘first time’-এর মিমটা দেবে। দুঃখের মধ্যেও একটু হাসি চলে আসবে, মনটা হাল্কা হবে।
মিমের মজাটা এখানেই যে সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্ম অনুভূতি, ঘটনাকে বেশ মজার করে তুলতে পারে, পরিবেশটাকে একটু হাল্কা করতে পারে। ভাষার বাধাকে ছাপিয়ে মিম হয়ে উঠতে পারে একটা ইউনিভার্সাল সিম্বল, যেটা দেখলে সবাই এক রকমভাবে বুঝতে পারবে। এজন্য বর্তমান অনলাইন কালচারে মিম অনেক বেশি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অনলাইনের সাথে সমানতালে অফলাইনেও মিমের প্রচলন দেখতে পাই আমরা।
সম্প্রতি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্সটিটিউটের সিনিয়র লেকচারার ফারিনা হক ফেসবুকে একটা ছবি শেয়ার করেছেন। ক্লাসরুমের ল্যাপটপের ওয়ালপেপার পরিবর্তন করেছেন তার ছাত্রছাত্রীরা। সময়মতো রিসার্চ ওয়ার্ক শেষ করতে পারেননি বলে, ল্যাপটপে শাকিব খানের আইকনিক ‘কান্না’র মিমটা ওয়ালপেপার হিসেবে সেট করেছিলেন তারা। ফারিনা হক ক্লাসরুমে গিয়ে প্রজেক্টর চালু করে মিমটা দেখেন আর সবাই একত্রে, Miss, give us one more day for the research please.
তিনি তার ছাত্র-ছাত্রীদের চাওয়া মঞ্জুর করেছিলেন শেষ পর্যন্ত। তারা রিসার্চে একদিন সময় যেমন বেশি পেয়েছিলেন, তেমনি ম্যাম তাদের গল্প ফেসবুকে শেয়ারও করেছিলেন। অনেকেই কমেন্ট করে ব্যাপারটাকে অ্যাপ্রিশিয়েট করেছেন। কেউ কেউ ম্যাম-এর সাথে তাদের অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন।
সবাই মিলে ম্যামকে জোর করে একদিন বাড়াতে চাওয়ার অনুরোধ করে তাকে বিব্রত না করে একটা মিম দিয়েই কি সুন্দর করে নিজেদের কথা প্রকাশ করে ফেললেন। ম্যামও বিষয়টা মজার ছলে নিলেন, ছাত্রদের অনুরোধ রাখলেন, বিষয়টাকে সবার সামনেও তুলে ধরলেন। বোঝাই যাচ্ছে সামনের দুনিয়াটা আসলে মিম আর মিমার্সদের।
পাঠকের মন্তব্য