সার্ভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট? নাকি শুধু বানর থেকে মানুষ জন্ম নেওয়ার মিথ!

১২০ পঠিত ... ১৭:৪৪, আগস্ট ১৮, ২০২৫

দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের খুব সুন্দর একটা বই আছে। যে গল্পের শেষ নেই, নামের বইটার সাথে পরিচয় খুব ছোটোবেলাতে হবার সুবাদে ডারউইনের সাথে পরিচয়। এক পাগলাটে যুবক একুশ বছর বয়সে বীগল জাহাজে চেপে ঘুরতে থাকে সাগরের ঢেউ ছাপিয়ে নানা দ্বীপ ও দেশ দেশান্তরে। ৫ বছরের এই দীর্ঘ যাত্রায় ডারউইন যা দেখেন তাই লিখে রাখতে শুরু করেন তার নোটবুকে।

ডারউইনের বিবর্তনবাদের সবচে শক্তিশালী দিক হলো সার্ভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট থিওরি। এই পৃথিবীতে যুগে যুগে হাজার কোটি রকম প্রাণীর উদ্ভব হয়েছে যেমন, তেমনি হারিয়ে গেছে অনেক অনেক প্রজাতি। কেউ কেউ পরিবেশের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেদের দৈহিক গঠনের পরিবর্তন করেছে তো কেউ কেউ বাসস্থান পরিবর্তন করেছে। 

জলে ও ডাঙ্গায় জন্ম নেয়া হাজারও প্রাণীর মধ্যে জিনগত মিল দেখা যায়, দেখা যায় একই রকম ফুলের বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট কিংবা মাছ, পাখী, পোকামাকড়ের মধ্যে অসংখ্য মিল। ডারউইন দেখিয়ে গিয়েছিলেন কিভাবে আদি প্রাণের সৃষ্টি হয় জলের তলদেশে এক কোষী প্রোটোপ্লাজম থেকে শুরু হয়ে কোষ বিভাজিত হতে হতে বহুকোষী প্রাণের উদ্ভব হয়। 

একসময় জল থেকে ডাঙ্গায় উঠার সংগ্রাম আসে, আদি মাছের ফুলকা পরিবর্তিত হয়ে রুপ নেয় ফুসফুসে। বুকে চলতে চলতে অসুবিধা হয় বলে ধীরে ধীরে পা গজায় কিংবা সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন চাহিদার জন্য বিভিন্ন অংঙ্গ বিশেষায়িত হয়ে শক্তিশালী করে নিজেদের। এভাবেই সময়ের প্রয়োজনে নিজেদের পরিবর্তন করে টিকে থাকার সংগ্রাম করে চলছে প্রাণীকূল। 

যেসব এলাকায় অনেক কায়িক শ্রম করে বাচতে হয়ে সেখানে দেখ যায় সবাই অনেক পেশিবহুল, যাদের পরিশ্রম কম তাদের হ্যাংলা পাতলা লাগে। আবার সূর্যের তাপ থেক বাচতে আফ্রিকার মানুষদের দেহে মেলানিন বেশি তৈরি হয় বলে তাদের গায়ের বর্ণ কৃষ্ণকায় আবার অন্যদিকে বরফের দেশের মানুষের গায়ের রঙ ফর্সা। মূলত আবহাওয়া, পারিপাশ্বিকতার প্রভাবে মানুষ সহ সকল প্রাণিতেই কিছু না কিছু পরিবর্তন চলেই আসে। 

বলা হয়ে তেলাপোকা হলো সবচে দীর্ঘজীবি প্রাণী, ডায়নাসোরের সময়ের এই প্রাণী এখনও বেঁচে আছে। অথচ অতিকায় ডায়নাসোর বিলুপ্ত হয়ে গেছে। উল্কা পিন্ডের আঘাতে পৃথিবী থেকে ডায়নাসোর বিলুপ্ত হলেও ছোট সাইজের তেলাপোকা বেচে আছে তার দৈহিক বৈশিষ্টের জন্য। ডারউইন দেখতে পেয়েছিলেন প্রানীজগতে অনেক অনেক প্রাণীর কঙ্কালের মধ্যে মিল আছে। সেই মিল যেমন বানরের সাথে মানুষের আছে তেমন আছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে। 

ডারউইন তার অরিজিন অফ স্পিসিজে বানর থেকে মানুষ আসার যে তত্ত্ব দিয়ে গেছেন সেটা মূলত তার ৫ বছরের ভ্রমণে অনেক অনেক ফসিল বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে দেয়া থিওরি। হারারির বইতে যেমন সময়ের সাথে মানুষের হোমোস্যপিয়েন্স হবার জার্নি তুলে ধরা হয়েছে, কীভাবে আগুন আবিষ্কার, চাকা, কৃষি, ব্যবসা মানবসভ্যতাকে পরিবর্তন করেছে, তেমনি ডারউইন তার অরিজিন অফ স্পিসিজে দেখানোর চেষ্টা করেছেন কীভাবে প্রাণীকূল টিকে আছে শুধু মাত্র প্রতিকূল অবস্থায় নিজেদের পরিবর্তন করতে পেরেছে বলে। 

১২০ পঠিত ... ১৭:৪৪, আগস্ট ১৮, ২০২৫

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top