ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা এখন শুধু টিএসসি বা হলের চায়ের টেবিলে নয়, বরং ফেসবুকের ‘অলরেডি লগ-ইন করা’ বট আইডিগুলোতেও। ক্যাম্পাসে ভোটাররা যেখানে এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে, সেখানে বট ভোটাররা আগেই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে ফেলেছে।
এই নির্বাচন ঘিরে এবার সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে আসল ভোটারদের মধ্যে নয়, বরং বট ভোটারদের মধ্যে। হলে হলে পোস্টার নেই, মাঠে মিছিল নেই, কিন্তু ফেসবুক নিউজফিডে এমন দাপট, যেন ডাকসুতে শুধু তারাই ভোট দেবে।
শিবিরের এক ভাইয়ের নাকি এত বেশি বট আইডি আছে যে, কমেন্টবক্সে নিজের সাথেই প্রতিদিন তর্কে জড়িয়ে পড়েন। ২০-৩০টা কমেন্ট চালাচালি করার পর বুঝতে পারেন, এতক্ষণ নিজেই নিজের সাথে ঝগড়া করেছেন!
ডাকসুর এক সদস্য নিজের ফেক আইডি থেকে আমাদের বলেন, বটদের ভোট নিয়ে আমরা চিন্তিত। তারা কীভাবে ভোট দিবে, ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে বটরা কোন লাইনে দাঁড়াবে? নাকি বাসায় বসেই দিবে ভোট! নাকি কেবল ওয়াইফাইয়ের পাসওয়ার্ড দিয়েই গণতন্ত্র রক্ষা করবে?
যদিও এই নিয়ে শিবিরের বট সোশাল মিডিয়া তে জনমত গড়ে তুলছেন, যাতে অনলাইনে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়।
এমনই এক শিবির কর্মী নিজের ফেক আইডি থেকে আমাদের বলেন, একবার শুধু বটদের ভোট দেয়ার সুযোগ করে দিন। দেখবেন, ডাকসুর ৪০ হাজার ভোটারের মধ্যে শুধু আমাদের দলই পাবে ৮০ হাজার ভোট!
ছাত্রদলের বট বাহিনীও কম যায় না। তারা মূলত রাত তিনটার পর সক্রিয় হয়। তখন হঠাৎ দেখা যায় ৫০টা আইডি একসাথে লিখছে, ‘সময় এসেছে, পরিবর্তন চাই।’ তবে সকাল হলে সেই বটগুলো আবার ঘুমিয়ে পড়ে, আর সত্যিকারের ছাত্রদলীয় ভাইয়েরা তখন ফেসবুকে একা একা বসে থাকে।
কিছুটা সিদ্ধান্থীনতায় ভুগছে ছাত্রলীগের বটগুলো। কোথায় ভোট দেবে এখনও অনেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না তারা। তবে শিবির ও ছাত্রদল এই ভোটগুলো নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করছেন। তবে ছাত্রলীগের এক বট আইডি আমাদের বলেন, বুঝতেছি না, ভোট দেয়া ঠিক হইব কি না! আমরা এখন দেশান্তরি। ভোটের প্রতি এত আগ্রহও নাই! গত ১৬ বছরে আমি একলা যত ভোট দিছি, আপনাদের ক্যাম্পাসেও অত ভোট নাই!