প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান

১১৩ পঠিত ... ১৭:০৬, অক্টোবর ০৫, ২০২৪

36

গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা মানুষের ব্যাপারে কেয়ারফুল থাকা সচেতন নাগরিক সমাজের অংশ। রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধানের ওপর কতটুকু আস্থা রাখা যায় তা নিয়ে জনপরিসরে আলোচনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

সৌভাগ্যক্রমে রাষ্ট্রপতি আমার এলাকার মানুষ আর সেনাপ্রধান আমাদের স্কুলের বড় ভাই। রাষ্ট্রপতি পাবনা শহরের মানুষ। অত্যন্ত ডিসিপ্লিনড মানুষ তিনি। পাবনায় এলে প্রতিদিনই ভোরে মাঠে শরীর চর্চা করেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে আচার-আচরণ শিষ্ট। শেখ হাসিনার পছন্দের মানুষের মধ্যে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের মতো ভদ্রলোক ছিলেন। সাবেক কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাক ও প্রয়াত নেতা আবুল মাল মুহিত কার্টিয়াস ছিলেন। রাষ্ট্রপতি সেরকমই একজন মানুষ। কাজেই দেশের নতুন প্রজন্মের জুলাই আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা ও কর্তব্যবোধ ধরে রাখতে তার সক্ষম হবার কথা। পাবনা আওয়ামীলীগের শক্ত ঘাঁটি। কিন্তু হাসিনার স্বৈরশাসনে বিরক্ত হয়ে অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, বকুল, হাবিবের মতো খ্যাতিমান নেতা আওয়ামীলীগ ত্যাগ করেছেন। কাজেই পাবনার মানুষকে বিপ্লবের সহযোদ্ধা হিসেবে পেতে বাধা নেই বলেই মনে হয়।

সেনাপ্রধান আমাদের রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র ছিলেন। উনার পিতা বিচার বিভাগে অত্যন্ত সৎ ও প্রশংসা পাওয়া আধিকারিক ছিলেন। সেনাপ্রধান তার ব্যাচের অত্যন্ত মেধাবী ও কার্টিয়াস মানুষদের একজন। কোনো অ্যাডভেঞ্চারের চিপ থ্রিল নিয়ে ঘোরেন না তিনি। জুনিয়র কর্মকর্তাদের অভিমত নিয়ে গণতান্ত্রিক উপায়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন; সেনাবাহিনী স্বদেশের মানুষের বুকে গুলি চালাবে না। তাছাড়া শেখ হাসিনাকে বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে গাদ্দাফির পরিণতি বরণ করতে না দিয়ে পদত্যাগ করিয়ে আবার বাঁচার সুযোগ দিয়ে চিরস্থায়ী রাজনৈতিক মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঠিক এভাবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা না করে যদি টুঙ্গিপাড়ায় অবসর জীবন যাপন করতে দেয়া হতো; তাহলে স্বাধীনতার অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে তার সুকৃতি অক্ষুণ্ণ থাকত। আবার শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুকে আইকন ব্যবহার করে দেশলুণ্ঠন করে ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামশীল নেতা হিসেবে সুনাম বিনাশ করতে পারতেন না। শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা। একটি আধুনিক সেনাবাহিনী কক্ষনও দেশের তরুণদের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে দাঁড়ায় না। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে মেধাবী ও কার্টিয়াস বাহিনী। পৃথিবীর দেশে দেশে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে তাদের সুনাম সেসব দেশের সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন দেশের সেনা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে শোনা যায়। ভারত ও পাকিস্তানের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা হয়েছে; তারা নিজে থেকেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিশিষ্টতার কথা অকুণ্ঠভাবে তুলে ধরেছেন। কারণ তারা বন্ধুত্বের স্মৃতি রেখে এসেছেন সবার মনে।  

কাজেই ৫ আগস্ট থেকে যে সিনিয়র মানুষেরা জেন জি'দের নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা পূরণে নিরলস কাজ করে চলেছেন; তাদের প্রতিটি কথা প্রতি অঙ্গভঙ্গির ভুলভ্রান্তি ধরে নিহিলিস্ট আচরণ করা কোনো কাজের কথা নয়। আপনি যদি আপনার চারপাশকে ইতিবাচক মনোভাব উপহার দেন; আপনার চারপাশ আপনাকে অবশ্যই ইতিবাচক প্রতিদান দেবে। এটাই জীবনের নিয়ম।

(পুনশ্চ: সিভিল সার্ভিসের সাবেক সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পাওয়ার করিডোরে অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু কাজ করেছি। জীবনে প্রতিটি কাজ আনন্দময় থাকা অবস্থাতেই পরবর্তী আরেকটি কাজে যোগদান করেছি। একই পিকনিক স্পটে দ্বিতীয় চড়ুইভাতির কোনো আকাঙ্ক্ষা থাকা অস্বাভাবিক। তাই আমার প্রশংসামূলক কথাবার্তা নৈর্ব্যক্তিক বয়ান। একজন মানুষের জীবনে মাসলোর হায়ারার্কি অফ নিড পূরণ করতে যা যা লাগে; তা স্বীয় যোগ্যতায় এমনভাবে অর্জন করেছি যে; পৃথিবীর কারও কাছ থেকে কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা কাজ করে না। কেবল লেখক হিসেবে পাঠক বন্ধুদের প্রেষণা ছাড়া পার্থিব আর কোনো কিছুই আমাকে আকৃষ্ট করে না।)

 

১১৩ পঠিত ... ১৭:০৬, অক্টোবর ০৫, ২০২৪

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top