সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা ট্রেন্ড হয়ত আমরা সবাই খেয়াল করেছি, যেখানে বিভিন্ন ছবির বা স্ক্রিনশটের ক্যাপশনে Top 10 Unknown facts about #BMW দেখতে পাচ্ছি। জুলাই আন্দোলন চলাকালিন আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশ হামলা, গুলি করে। মরে একটা। আহত হয় একটা। একটাই যায়, স্যার। বাকিডি যায় না। এইডা হইলো স্যার সবচেয়ে বড় আতঙ্কের। কিংবা সাকা চৌধুরির ১০ ট্রাক অস্ত্রের ভিডিও ছাড়াও পরবর্তী সময়ে আন্দোলনের সময়ের কিংবা এর আগে পরের অনেক মিম, ভিডিও, রিলস, নিউজের স্ক্রিনশটের ক্যাপশনে বিএমডব্লিউ সম্পর্কে বিশাল সব প্যারাগ্রাফ দেখেছি আমরা।
আস্তে আস্তে দেখা গেল যেকোনো পোস্টের সাথেই এই ক্যাপশন জোড়া দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ তো মজা করে শুধু মাত্র বিএমডব্লিউ-এর ফ্যাক্টস নিয়েই পোস্ট দিচ্ছেন। বেশ কয়েকদিনে ভাইরাল হওয়া এই ট্রেন্ড নিয়ে অনেকেই ঘাটাঘাটি করেও ঠিক কূল কিনারা করতে পারছেন না। এটা কি আসলে মিনিংলেস কোনো বিষয়?
ঠিক কোথা থেকে এর সূচনা খুঁজতে বেশ জল ঘোলা করার পর জানা গেল এটা একটা মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি। আমাদের মতো অনেকেই রেডিট ও লিংকডইনে এই ক্যাপশনের অরিজিন সম্পর্কে জানতে চেয়ে বেশ কিছু পোস্ট করেছিলেন। সেই পোস্টগুলোর ভাষ্যমতে ইনস্টাগ্রামের ক্যাপশনে ব্যবহার হতে থাকা এই ইউনিক ট্রেন্ড গ্লোবালি ব্র্যান্ড মার্কেটিঙে হেল্প করেছে। বিশ্বের নানান দেশ ঘুরে এই ট্রেন্ড এসে পৌঁছেছে বাংলাদেশে। জুলাই অভ্যুত্থানের আগে থেকেই এই ধরনের ক্যাপশনের সাথে মানুষ পরিচিত।
ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকের অ্যালগরিদম ও এই রকম ক্যাপশনকে প্রায়োরিটি দিয়ে অন্য অনেক কন্টেন্টের থেকে এগিয়ে রেখেছে। এছাড়া সাইকোলজিক্যালি এটা মানুষকে বেশ ইনফ্লুয়েন্স করছে। ক্যাপশনের প্রথম লাইন দেখেই, পোস্টের ছবির দিকে নজর যাচ্ছে সবার। দেখা যাচ্ছে, ক্যাপশনটা আসলে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছুই না কিন্তু ক্যাপশনের সাথে ছবিটিতেই রয়েছে মূল মেসেজ। সেটি কখনও নিউজের স্ক্রিনশট, কখনও বিতর্কিত কোনো ছবি, কখনও বা সেখানে জায়গা পাচ্ছে ফেক নিউজ। অনেকে মজা করার জন্য যেকোনো পোস্টে এটি ব্যবহার করেছে।
কিছু কিছু এক্সপার্ট বলছেন, ফেসবুকসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডকে ফাঁকি দেওয়ার জন্যও এই ক্যাপশনটি ব্যবহার হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সেন্সেটিভ সব পোস্টে ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের খরগ আটকে দেওয়া গেছে এই ক্যাপশনে। ক্যাপশনে সেন্সটিভ কমেন্ট না লিখে এমন ইরেলেভান্ট কন্টেন্ট লিখলে ফেসবুকের অ্যালগরিদম ঠিকঠাক মার্ক করতে পারে না বলে জানিয়েছেন কেউ কেউ।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন