ভাসুরের নাম কেন মুখে আনা যাবে না?

৩২৩ পঠিত ... ১৭:৪১, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২৪

15

লেখা: শেখ তাসনিম আফরোজ এমি

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের একটা নিউজ দেখে চোখ আটকে গেল। টেমপ্লেটে ছোটো করে লেখা, শনিবার গণ-পিটুনিতে নিহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে নবজাতক শিশুর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন তিনি।

স্বাভাবিকভাবেই প্রচণ্ড কৌতূহল নিয়ে নিউজের ভেতরে কী লেখা দেখলাম। দেখে যা পেলাম তার প্রেক্ষিতে আমার মনে কিছু প্রশ্ন জাগল। কমেন্ট বক্স যেহেতু ওপেন, পারলে আপনারা একটু মতামত জানায়েন। তবে আজকে আজেবাজে কথা একেবারেই বরদাশত করব না সেটা আগে থেকেই জানিয়ে রাখছি।

১#

নিহত আব্দুল্লাহ আল মাসুদ রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য। এটা আপনাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পোস্ট মনে হয়েছে? এই টাইপের পোস্টে থেকে পাওয়ার প্র‍্যাকটিস করা যায়? প্রভাব খাটানোর সুযোগ থাকে? দয়া করে চিন্তা করে উত্তর দেবেন।

২#

২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল সকালে ক্লাসে যাওয়ার পথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলের সামনে হামলার শিকার হন আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। এতে মাসুদের ডান পায়ের নিচের অংশ গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বাম পাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কেটে দেওয়া হয়েছিল হাতের রগ। একটি রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনের সদস্যরা ওই হামলা চালিয়েছিল।

কোন রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনের সদস্য? নতুন ভাসুর কারা? তাদের নাম মুখে নেওয়া যায় না কেন?

আরেকটা বিষয় উল্লেখ করে রাখি, এ হামলায় পা হারিয়ে মাসুদ একটি প্লাস্টিকের পা লাগিয়ে চলাচল করতেন। তার অন্য পা শনিবার রাতে ভেঙে দেওয়া হয়।

৩#

তৃতীয় এবং সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় সেটা হচ্ছে, ওসির ভাষ্য অনুযায়ী,

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে রাতে বিনোদপুর বাজারে মাসুদের ওপর হামলা হয়। পরে একদল শিক্ষার্থী তাকে প্রথমে মতিহার থানায় নিয়ে যান। কিন্তু মতিহার থানায় ৫ আগস্টের সহিংসতার কোনো মামলা নেই। তাই তাকে বোয়ালিয়া থানায় আনা হয়, যেন তাকে কোনো সহিংসতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

একটা আধমরা মানুষকে ইমার্জেন্সি চিকিৎসা দেওয়া জরুরি ছিল নাকি মামলা দেওয়া? মতিহার এবং বোয়ালিয়া থানায় যে কালক্ষেপণ করা হয়েছে, সেই সময়ের মধ্যে সদিচ্ছা থাকলে বাঁচানোর চেষ্টা করা যেত না লোকটাকে? কেন করা হয়নি? মবের ভয়ে নাকি নিজেদের গাফিলতির কারণে? উত্তরটা খোঁজা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় আমার কাছে।

বোয়ালিয়া থানা হাজতে শুয়ে থাকা অবস্থায় মাসুদ বলেন, আমি বিনোদপুরে ওষুধ নিতে এসেছিলাম। আমি ছাত্রলীগ করতাম, ওইজন্য ধরেছে। কিন্তু আমার পা ২০১৪ সালে কেটেছে। রগ-টগ সব কাটা। আমি তো অনেক দিন আগে থেকেই ছাত্রলীগ করা বাদ দিয়েছি।

মবের নামে যাদের নাম ইতোমধ্যে মুখে নেওয়া যাচ্ছে না, সেই নব্য ভাসুরদের তৎপরতা নিয়ে আমি অত্যন্ত সন্দিহান। গত ১৭ বছরে সবচাইতে বেশি নিপীড়নের শিকার আপনারাই হয়েছেন বলে আমার ধারণা। নিজেদের জাত না চেনায়ে সভ্য হয়ে শান্তিতে থাকা যায় কিনা দেখেন। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যেরকম রাস্তায় ছিলাম, মবের মুল্লুকের বিরুদ্ধেও থাকব। বাধ্য কইরেন না। দেখেন, আপনারা যেটা ভালো মনে করেন।

আপনারা যারা একটা বাচ্চা বুঝতে শেখার আগেই তাকে এতিম বানায়ে ফেললেন, বাচ্চার জন্য দুধ আর ওষুধ কিনতে বের হওয়া যে বাবাকে পিটায়ে মেরে ফেললেন, তাদেরকে আমি কখনও ক্ষমা করব না। কখনোই না। মনে রাখতেছি। মনে রাখব।

 

৩২৩ পঠিত ... ১৭:৪১, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২৪

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top