মাঠে খেলতে নামলে মনে হয় একদল ভেড়া চরাতে নামছি : লিওনেল মেসি

২৪২৪ পঠিত ... ১২:৪৫, জুন ৩০, ২০১৮

হ্যাঁ, আমরা দ্বিতীয় রাউন্ডে পৌঁছেছি। দ্বিতীয় রাউন্ডের আগেই আমরা ফিরে যাবো, এমনটা যদিও আমি কখনো ভাবিনি। তবে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে খেলার আগের দিন রাতে ডিনারের পরের আড্ডায় হিগু (গঞ্জালো হিগুয়েইন) বাজি ধরেছিলো, আজকে সে পাঁচটা গোল মিস করবেই। আমি আড্ডায় ছিলাম না, সাম্পাওলি আর অ্যাগুয়েরোর মতো মনে অত রঙ আমার নেই। ম্যাশ্চেরানো এসে বললো হিগুয়েইন নাকি এটা বলতে বলতে গ্লাসে পানি ঢালতে গিয়ে সেটাও মিস করে ফেলেছে, পুরো পানি পড়েছে তার গায়ে।

হিগুর অমন আত্মবিশ্বাস দেখে ভয় হয়েছিল ঠিক। তবে মাঠে নামার সময়ই মনে হলো, পরেরদিনই ব্রাজিলের খেলা। কোনোভাবে যদি আর্জেন্টিনা বাদ পড়ে যায়, আর্জেন্টিনায় হয়তো কদিনের শোক যাবে। কিন্তু এশিয়ার এক ছোট দেশ বাংলাদেশ, সেখানে হয়তো খুনোখুনি হয়ে যাবে। দেশটার কিছুই মনে নেই, তবে কবে যেন সেখানে এই নাইজেরিয়ার সাথেই খেলতে গিয়েছিলাম। একেবারেই ভুলতে পারিনি, কারণ ওই একবারই পাপন ভাইয়ের সাথে দেখা হয়েছিলো। উনিই আমাকে পেনাল্টি কিক দেয়া শিখিয়েছিলেন। সাচ এ গ্রেট ম্যান। উনি ফিফার প্রেসিডেন্ট হলে বাংলাদেশ তো বটেই, আর্জেন্টিনাও বিশ্বকাপ নিয়ে নিত!

বাংলাদেশের যে রিয়াল আর ব্রাজিল ফ্যানরা আমাকে বা আর্জেন্টিনাকে নিয়ে ট্রল করে, আমাদের সমর্থক কিংবা আমার ভক্তদের মনে কষ্ট দেয়, মূলত তাদের ট্রলের উত্তর দিতেই আমি ম্যাচটা জিততে চেয়েছি। আর ঈশ্বরের কৃপা, আমরা জিতেছিও। না, ঈশ্বর বলতে আবার ম্যারাডোনা আংকেলের কথা বলছি না। উনিও কিছু কৃপা করেছেন, আমার আর আর্জেন্টিনার পারফরম্যান্সের ওপরে যা ট্রল হতো নিজের দিকে টেনে নিয়ে গেছেন। মাঠের বাইরে আমাদের জন্য বাংলাদেশের আর্জেন্টিনা সমর্থকরা ছাড়া এতটা কেউ করেনি। হি ইজ এ ট্রু জিনিয়াস।

তবে আমাকে নিয়ে কিছু ট্রলে অবশ্য অনেকদিন পর আমি নিজেও হেসেছি। সেই হাসির ছবিই দেখলাম পেপার পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। eআরকিতে দেখলাম কে যেন ফটোশপ করে ফুটবল মাঠে আমার আশেপাশে একগাদা ভেড়া বসিয়েছে। বিশ্বকাপটা সেই শুরু থেকে গোমড়া মুখে কাটালেও এটা দেখে হাহা করে হেসে ফেলেছি। ভুল তো বলেনি, প্রতিদিন ম্যাচে মাঠে নামলেই মনে হয়, একগাদা ভেড়া নিয়ে মাঠে চরাতে নেমেছি। দুয়েকটা মাঠের উপরে-নিচে চরে বেড়াচ্ছে। দুয়েকজন প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের আশেপাশে ওৎ পেতে দাঁড়িয়ে আছে গোল মিস করার জন্য। নিজেদের গোলপোস্টের সামনে যেটা দাঁড়িয়েই আছে, সে তো নড়েচড়েও না। মাঝেমাঝে ঘাস খাওয়ায় ব্যস্ত থাকে।

এই ট্রল দেখেই যখন হাসছি, হিগু রাগী মুখে রুমে ঢুকে বললো, 'eআরকি পেজে লাইক দিয়া রাখছিস? আনফলো মারিস তো! হুদাই খোচায় সবডিরে।'

আমি হাসি না থামিয়েই মনে মনে ভাবলাম, হিগু ছেলেটা শুধু গোল না, eআরকি আনলাইক করে এবার একগাদা রসিকতাও মিস করে ফেলবে।

ফ্রান্সের সাথে জিতব কিনা, এটা প্রশ্ন হতে পারে। ফ্রান্স তো শত্রু না, ফ্রান্স তো ফ্রান্স! ব্রাজিলকে বেশ ভুগিয়েছে বলে বাংলাদেশি ব্রাজিল সমর্থকরা ফ্রান্স সাপোর্ট করারও কথা না, সুতরাং জেতা জরুরি কিনা বুঝতে পারছি না। তবে হ্যাঁ, আমরা বিশ্বকাপটা জিততে চাই। ইয়ে, অথবা আমি। মাঠে ভেড়া চরানোর বিনিময়ে হলেও, বিশ্বকাপটা আমার প্রয়োজন।

অন্তত বাংলাদেশের আর্জেন্টিনা সমর্থকরা আর্জেন্টিনার সাপোর্ট করার কারণে আরও চার বছর যেন ট্রলের হাত থেকে বেঁচে যান, এজন্য হলেও আমার বিশ্বকাপটা জিততেই হবে।

২৪২৪ পঠিত ... ১২:৪৫, জুন ৩০, ২০১৮

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top