ডক্টর মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার, অনেক হইসে, এবার ক্ষ্যান্ত দেন

৮৫৩৯২ পঠিত ... ২৩:৪০, মার্চ ০৩, ২০১৮

ডক্টর মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার, অনেক হইসে, এবার ক্ষ্যান্ত দেন।

আপনি চলে যাবেন বলতেসেন, যান গা।

এই দেশে থেকে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে এই বয়সে জ্বর ঠান্ডা বাধানোর চেয়ে বড় কিছু হবে না। অন্তত আপনি করতে পারবেন না।

আপনি নিজেই আনফিট, আপনাকে দিয়ে হবে না। চোখের সামনে মুক্তিযুদ্ধে বাবা মারা গেল, আর আপনি একটা মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট বাগাইতে পারলেন না, আপ্নারে দিয়া আর কী আশা করা যায় বলেন? যুদ্ধে যার বাড়ির গরু মারা গেছে, তার হাতেও আসল একটা মুক্তিযোদ্ধার সনদ আছে এই দেশে।

আপনি ছাত্র ভাল ছিলেন, কিন্তু জীবনে শাইন করতে পারলেন না। আম্রিকা গেলেন, অবৈধ উপায়ে ট্রলারে বা জাহাজ, কার্গোর কন্টেইনারে লুকাইয়া না, পেলেনে চইড়া, স্কলারশিপ নিয়া। লাভ কী হইল? ক্যালটেক, বেল রিসার্চ সেন্টারে চাকরিও পাইলেন, লাভ কী? আপ্নের তো কপাল পোড়া। ভালো চাকরি ধইরা রাখতে পারলেন না। আম্রিকা আপনারে ধনে-জ্ঞানে বড় করতে পারতো, না বুইঝা, ক্ষ্যাতা বালিশ নিয়া রওনা দিলেন বাংলাদেশে। কি খুঁজতে আসছিলেন আল্লাহই জানে!!

আপ্নের মতন লোক ইউনিভার্সিটিতে মাস্টারি করলে প্রথম চান্সেই উচিত লাল-নীল-বেগুনী-গোলাপী-খয়েরী কোন এক রঙের ছাতার নিচে আরাম কইরা দাঁড়াইয়া যাওয়া। আপ্নের নাই সেই বুঝ-জ্ঞান। আপ্নে মাস্টারি করেন ছাতা ছাড়া। তার উপর ঢাকা ভার্সিটি ছাইড়া আপ্নে গিয়া মাস্টারি করতে হান্দাইলেন নতুন এক ভার্সিটিতে, নিজের কান্ধে এত্ত বড় মৈনাক পর্বত কেউ বুইঝা শুইনা উঠায়?

প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে লাখ টাকার মাস্টারি করতে পারতেন আরাম কইরা, তা না কইরা আপ্নে সরকারি ভার্সিটির ৫/১০ টাকার মঞ্জুরি নিয়া চিল্লায়া গলা ব্যাথা করতে লাগ্লেন, আপ্নের চিক্কুর শুনে কেডা?

যেই দেশে বাপ মা পেরেশান অংক প্রাইভেট পড়াইতে পড়াইতে, আপ্নে কইত্তে আইয়া ধুয়া উঠাইলেন অংক ইজ ফান! পোলাপাইন হুদাই অংক করবে, এই চিন্তা আপ্নের মাথায় কইত্তে আইলো আল্লাহ মালুম। এমনকি, আলিয়া মাদ্রাসার ছোট্ট ছোট্ট হুজুর, যারা দুই চাইর পাতা হাদিস কোরান পইড়া আখেরি এলেম নিয়া মাওলানা হইত, তাগোর ভিত্রেও আপ্নে অংক ঢুকাইয়া দিলেন, তারাও এখন হুদাকামে গনিত করে। আপ্নে একটা শিশু নির্যাতক! আপ্নে দেশের লাখ লাখ অংকের মাস্টারের ভাত মাইরা দিতে আসছেন দেশে। প্রাইভেট পড়া শিল্পের, কোচিং শিল্পের মত একটা বড় অর্থনৈতিক অবকাঠামোর বাঁশ মাইরা দিলেন আপ্নে একাই! কত্ত মানুষের রিজিকে আপ্নে টান দিসেন, আপ্নের আইডিয়া আছে?

এই মুমিনের দেশে, বাসায় বই মানে মোকসেদুল মোমেনিন আর এক জ্বিল কোরান শরীফ থাকলেই চলে, সেই দেশে আপনে আইলেন লেখক হইতে। তাও আবার পোলাপাইনের লাইগা বিজ্ঞান লেখবেন। যেখানে পোলাপাইনের বাপ মা কান টাইন্না লম্বা কইরা ফেলতেসে, আউট বই না পড়ার লাইগা। সেইখানে দুই পাতা বিজ্ঞান পইড়া কি হাতি ঘোড়া হইবে বুঝান দেখি? বিজ্ঞান পড়লে সোয়াব হয়? বেহেস্তে যাওন যায়? বিজ্ঞানী হইয়া লাভ কী? আপ্নের মতন মফস্বল স্কুল/কলেজ/ ভার্সিটির মাস্টার হবে? একটা প্রাইভেট চাকরিও তো পাওয়া যায় না বিজ্ঞান পড়লে। ফিজিক্সে মাস্টার্স কইরা প্রাইভেট ব্যাংকে একটা চাকরি পাইলে সেই টাকায় ৩টা ভার্সিটির মাস্টার কিন্না ফেলা যায়। বিজ্ঞানের স্বপ্ন দেখাইয়া পোলাপাইনের মাথা খাইয়া দিতেছেন, এই পোলাপাইন জীবনে কী কইরা ভাত খাবে সেইটা ভাইবা দেখলেন না। এই পোলাপাইন ঢাকা শহরে ৫০ হাজার টাকার ভাড়া ফ্ল্যাটে থাইকা ৩০ লাখ টাকার প্রিমিও চালাবে না, মাসে ১৬ হাজার টাকায় এদের বাচ্চাদের নামী-দামী স্কুলে পড়াবে না, বৈশাখে ৫ হাজার টাকা দিয়া ১৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কিন্না, পান্তা দিয়া খাইয়া সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী গান গাইবে না। আপ্নের স্বপ্নের মইধ্যে ভাইরাস আছে। ফিউচার আন্ধার। খালি পেইন আর পেইন। এত্ত পেইন নিয়া কার কি লাভ?

এই সোনার বাংলায় ক্লাস ওয়ানের বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানোর সময় মা'রা চুলে সিঁথি কেটে চুল আচড়াইয়া দিতে দিতে বলে "কারো দিকে তাকাবা না, কার কি হইল দেখার দরকার নাই, তুমি শুধু তোমারটা দেখবা, ঠিক আছে?" সেই সোনার বাংলায় আপনি বাচ্চা বাচ্চা পোলাপাইনের মাথায় ঢুকাইয়া দিতেছেন আদর্শ, নিজের বাইরেও দেশ ও দশের জন্য চিন্তা করা। ছোট ছোট মাথায় কত বড় লোড! যেই বয়সে, গুড়া দুধ-চিনি দিয়া আটার রুটি রোল কইরা খাইতে খাইতে পোলাপাইন ডোরেমন-মটুপাতলু দেখতো, তাগো ছোট্ট মাথায় ভইরা দিলেন বড় হইয়া দেশের ভালা করতে হবে। আরে দেশের ভালা কেমনে করে মানুষ, দেশটার কোন জাত আছে? এইটারে ভালা করতে করতে জীবন দিয়া ফালাইলেও কি কোনোদিন, আম্রিকা-জাপান-অস্টলিয়া-কানাডা বানানো পসিবল? একটা বিবেচনা নাই আপ্নের?

সেভেন্টি ওয়ানের গন্ডগোল সবাই কবর দিয়া ফেল্ল, আপ্নে কৈত্তে আইয়া মাডির তলারতে মুক্তিযুদ্ধ টান দিয়া বাইর কইরা ফেললেন। ১০ টেকা হাদিয়ার এক বইতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভইরা দিলেন। আরে, এই দেশে পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা রিকশাওয়ালা হবে, ফকির হবে, না খাইয়া মারা যাবে এইটাই তো নিয়ম। বছরে দুইবার এগোরে নিয়া আহা-উহু করন যায়, সেইটা ভিন্ন কথা। বঙ্গবন্ধু আর জিয়া সাবের ক্রেডিট ভাগাভাগির পর মুক্তিযুদ্ধের কিছু বাকি থাকে নি পাবলিকের লাইগা? পাবলিক ইতিহাস জাইনা করবে টা কী? ইতিহাস খায়, না মাথায় দেয়?

রেজাকারের বিচার নিয়া টাল্টিবাল্টি কইরা ৪০ বছর কাটাইয়া দিবার পর, পোলাপাইনে শখ করছে একটা রেজাকারের ফাঁসি দেখবো। দুইডা ধমক দিলেই এই পোলাপাইন ঠান্ডা হইয়া বাড়িত বইয়া টরেন্টে নামাইয়া হলিউডের মুভি দেখতে দেখতে ভুইলা যাইত দেশে রাজাকার বইলা কিছু আছে। পারে নাই আপ্নের লাইগা। হারাক্ষন ঘ্যান ঘ্যান করতেই আছে, রেজাকার ঝুলাও রেজাকার আটকাও। এগোরে ঝুলাইয়া, আটকাইয়া লাভ আছে কুনো? এগো এক এক জনের পিছে তামাম পাবলিক ইমান, একিন লইয়া খাড়া। পোলাপাইনরে উসকাইয়া দিয়া, যারে চান্দে দেখা যায়, আপ্নে তারে চৈদ্দো শিকের পিছে নিছেন। নিজে গুনাহর ভাগি হইলেন, দেশের লোকজনেরও ইমান কাইট্টা দুই টুকরা কইরা দেখাইয়া দিলেন, এই দেশে আমরা সবাই ভাই ভাই না। হেফাজত-শাহবাগ, মুমিন-নাস্তিক এই রকম পর্দা দিয়া আলাদা। ভাই ভাই এর ভিত্তে আপ্নে কিলিক লাগাইয়া দিলেন। দেয়াল উঠাইয়া দিলেন। আপ্নে কত্ত খ্রাপ!

ইসলামের সেবার মাসিক নাস্তিক কতল কর্মসূচীতে যখন দেশ সিরাতুল মুস্তাকিমের দিকে আগাইতেছিল আপ্নে একা এই দেশের ল্যাঞ্জা পিছেরতে টাইনা ধরলেন। সমস্যা কী আপ্নের? দীলে আল্লাহর ডর নাই? কোপের উপ্রে কোপ মাইরা ইমানের ঝান্ডা উচা না করলে মইরা গিয়া আল্লাহর কাছে কী জবাব দিবেন, এই চিন্তা আপ্নের মাথায় নাই? আপ্নের না হয় আখেরাতের ডর নাই, বাকী গো তো আছে। মুক্ত চিন্তা, বিজ্ঞানমনস্কতা, স্বাধীন মত প্রকাশ এডি কইরা কেউ জীবনে কিছু করতে পারছে? জজ-ম্যাজিস্ট্রেট হইসে? আরে ক্লাস ফাইভের প্রশ্ন আউট না হইলে পোলাপাইন আরাম কইরা পরীক্ষা দিতে পারে না। সেইখানে মুক্তচিন্তা দিয়া কত মার্কের প্রশ্ন কমন পড়বো কইতে পারেন?

কার্টুন: মেহেদী হক

জীবনে বই বেইচা কয়ডা টেকা না পাইলে তো চশমার ভাঙ্গা ডান্ডাটাও বদলাইতে পারতেন না। আপ্নে আইছেন দেশ বদলানির কথা কইতে। আপ্নের সহকর্মী-সহধর্মীনীরে পিডাইসে, তাও ভালা, কানের পাশ দিয়া গুলি গেছে। আপ্নে বাইচা গেছেন। আপ্নেরে পিডানী-কোপানী-ঠ্যাঙ্গানীর লাইগা কোটি মানুষ এক পায়ে খাড়া সেই বিবেচনা নাই আপ্নের? আপ্নে অভিমান কইরা বৃষ্টিতে ভিজেন, মইরা যাইতে চান, চইলা যাইতে চান। কত আবেগ! আরে এই দেশে নিজের পাশের লোকটা এক রাইতে বঙ্গবন্ধুর নাম-নিশানা মুইছা ফেলছিল, খেয়াল নাই আপ্নের?

এতদিনে যদি সুবুদ্ধি হয় তো ভালা, নাইলে সামনে এই রকম ঘটনা আরো যখন ঘটবে, আপ্নে একবার পুস্কুনীর পানিতে নামবেন, গোসসা কইরা ভাত খাইবেন না ১০ দিন এডি করবেন। একসময় টুক্কুত কইরা কেউ কোপ মাইরা আপ্নের সাদা চুল আর সাদা মোচওয়ালা কল্লাডা ফালাইয়া দিবে। আপ্নের কিছু আশেক, দিওয়ানা মুরিদ কিছুদিন ফেসবুকে ডিজিটাল কান্দাকাটি করবে। তাতে কিছুই হবে না। বছরে একবার আপ্নের নামে মৃত্যুবার্ষিকী হবে। তাতে ভারী ভারী কথা হবে। পুলাপাইনে ভারী দীর্ঘশ্বাস ফালাইতে ফালাইতে বই মেলায় "টুকুনজিল" এর নিউ এডিশন পড়বে।

তারচে ভালো, স্যার আপনে যানগা কোথাও।

এখনো ট্রাই করলে বহুত ভালো চাকরি পাইবেন।

আম্রিকা-জাপান-কানাডারে আরো ভালো, আরও চকচকা করতে পারবেন। নিজের জীবনডাও চকচকা করতে পারবেন। এই ভাঙ্গা দেশে কালি লাগা হারিকেনের চিমনি আর কত মুছবেন? যতই মুইছা পরিষ্কার করেন আলো আর বাড়বো না। আপ্নে চিমনী মুছতেছেন, কিন্তু হারিকেনে তেলই নাই স্যার। আলো আসবে কৈত্তে?

আপনে অন্ধের দেশে আয়না হাতে ঘুরতেসেন...

৮৫৩৯২ পঠিত ... ২৩:৪০, মার্চ ০৩, ২০১৮

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top