দেশজুড়ে ইঁঁদুরদের আজ দুর্দশার কোনো সীমা নেই। চাইলেই নিজেদের মত বের হতে পারে না, নিজেদের পছন্দের পনির পর্যন্ত কিনে খেতে পারে না। রাস্তায় বের হলেই বিপদ, স্ন্যাক্সের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে একটা দুইটা বিড়াল। নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ঘর থেকেই বের হতে চায় না ইঁঁদুরদের কেউ কেউ। এ নিয়ে প্রাণীকুলে চলছে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা। একটা গোষ্ঠী যদি দিনের পর দিন এভাবেই ঘরের কোণে পড়ে থাকে তাহলে সমাজ চলবে কীভাবে। বিড়াল সমাজ তো কাউকে মুখই দেখাতে পারবে না।
ইঁদুরদের স্ন্যাক্সের চোখে না দেখা ও তাদের স্বাধীনভাবে চলাচল নিশ্চিত না করতে পারলে প্রাণীকুলে আর মান-সম্মানই থাকছে না বলে জানিয়েছে বিড়াল সমাজের এক বিজ্ঞ প্রতিনিধি। ধীরে ধীরে সমস্যাটা প্রকট আকারে ধারণ করছে। এজন্য বিড়াল সমাজ নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ঠিক কোনো লাভ হচ্ছে না বলা যায়। একটা ইনক্লুসিভ আলাপ করার জন্য বিড়াল সমাজ সম্প্রতি একটা গোলটেবিল বৈঠকেরও আয়োজন করেছে।
কীভাবে ইঁদুরদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা যায়? ঠিক কী করলে তাদের আর ইঁদুরদের মধ্যে ভেদাভেদ মুছে দিয়ে একটা ন্যায়, জাস্টিস বা ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা যায় সেটাই ছিল এই গোলটেবিল বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয়। এই বৈঠকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রভাবশালী বিড়াল এসে নিজের মতামত পেশ করেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। আলোচনার দর্শক সারিতে থাকা অন্য সব বিড়ালের উদ্দেশে তাদের একটাই আহবান, আপনারা ইঁদুরদের জন্য একটা সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করুন।
বিড়ালরা ইঁদুরদের জন্য ভাবছে দেখে ইঁদুরদের মাঝেও বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা যাচ্ছে। eআরকির প্রাণীকুল বিষয়ক প্রতিনিধি বেশ কয়েকজন ইঁদুরের সাথে কথা বলেছেন। ইঁদুররা আসলেই অনেক খুশি। গোলটেবিল বৈঠকে আপনাদের আমন্ত্রণ না জানানোয় তারা মন খারাপ করেছে কিনা, এই বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, আমাদের না ডাকাতেই ভালো হয়েছে, বৈঠক শেষে কোনো দুষ্টু বিড়াল আমাদের ধাওয়া করলে আমাদের জন্য আসলে ক্ষতিকারকই হতো।
ইঁদুরদের সাথে কথা বলে আমরা আরও জানতে পেরেছি, ইদুররা আসলে বিড়ালদের বন্ধুই মনে করে, একসাথে টম-এন-জেরির মতোই থাকতে চায় কিন্তু ওদের মধ্যে কিছু বুচ আছে, যারা আমাদের দেখলেই খেয়ে ফেলতে চায়। আমরা তো একটু স্বাধীনভাবে বাঁচতেই চাই। একটু ভাল-মন্দ, খাওয়া-দাওয়া, এদিকে-সেদিক, ঘোরা-ঘুরি, কাজ-কর্ম আর মাঝেমাঝে ট্যুরে যাওয়া, নিজের মতো বাঁচতে চাওয়া তো অপরাধ না। আশা করছি ওদের গোলটেবিল বৈঠক থেকে এমন কোনো সিদ্ধান্ত আসবে যাতে করে, ওদের সমাজের একটা বিড়ালও আমাদের দিকে তাকাতে সাহস না পায়, তাহলেই তো হবে প্রকৃত ইনসাফ।