লেখা: মনজুরুল ইকরাম
প্রিয় বলত—পিটার ড্রুরি শুনে ঘুমাই, ঘুম ভাঙে এমি মার্তিনেজের ডাইভে। মোটামুটি বছরখানেক। দেখা হলে কথাবার্তার এক পর্যায়ে বলত, ভাই, এমি মার্টিনেজরে নিয়ে প্লিজ লেখো। কথা দিছিলাম লেখব। লিখি নাই। এখন জন্ম না নেয়া ল্যাখার কথা প্রিয়র জন্য লিখি।
ছায়ার মতো ঘুরত আশপাশে। চেহারা পাল্টে যেত মিছিলে, আন্দোলনে। এক বছর আগে এই দিনে মর্গে লাশের তালিকায় ছায়ামানবের নাম হয়ে যায় Unknown 30y.
এই নামে তথ্যচিত্র বানিয়েছে রজত। প্রিয়র মাকে দেয়া কথা রেখেছে। প্রিয়র প্রতি দারুণ একটা ট্রিবিউট। আন্দোলনের সন্ধ্যারাতগুলোয় প্রচণ্ড সংবেদনশীল প্রিয় বলত, বদমাইশের বাচ্চাগুলারে টেনে নামাইতে গিয়ে গুলি খেয়ে মরলেও ও শান্তি পাবে। ঘর না থাকা পাখির মতো প্রচণ্ড স্বাধীনচেতা ছেলেটা উড়তে পারবে।
কিন্তু এক বছর হইল, পুলিশের গুলি থামল না। গুলি ছোড়া আকাশে পাখি উড়ে না। এই আকাশে প্রিয়র মতো মানুষপাখি উড়ত না। উড়ার কথাও ভুলে যাইত। এই দেশটা কার না; এরচে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াইছে, এই দেশটা কার? প্রিয়র দেশটা কই?
খুঁজে পাই না। ধর্মতন্ত্রের নামে বিভাজনের দেশ দেখতে ও জীবন দিছে? নাকি নেতানেত্রীদের কৃতিত্বের কাড়াকাড়ি দেখতে?
আজ, ঠিক এক বছর পর, আমি শুধু এতটুকু জানি—এই রাষ্ট্রের কাছে আমাদের কোনো ঋণ নাই। কিন্তু প্রিয়র মতো হাজারো মানুষদের কাছে আছে।
প্রিয় যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল, সেটা এখন ধর্মের মোড়কে বিক্রি হয়, ভয়ের রাজনীতিতে হারায়ে যায়। প্রিয়, তোর হাসিটা ছিল রাষ্ট্রদ্রোহ। ওই হাসিটা এখনো থাকলে এখনো তার প্রতিশব্দ একই। এই হাসিটা হারায়ে না যাক। রজত এবং তার পুরো দলকে কৃতজ্ঞতা। ওরা মনে করিয়ে দিলো, এই প্রশ্নবিদ্ধ রাষ্ট্রে প্রিয়রাই আমাদের উত্তর।
পাঠকের মন্তব্য