সম্প্রতি উত্তরা থেকে মিরপুর-পল্লবী পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে যাত্রা শুরু করলো মিরপুরবাসীদের গর্বের মেট্রোরেল। মিরপুরের ভোল পাল্টে দেওয়ার মতো যাদুকরী বিশেষত্ব বিশ্বের অন্য মেট্রোরেলগুলোর না থাকলেও তাদের কী কী বিশেষ ব্যাপার রয়েছে, তা নিয়ে এই প্রতিবেদন।
গালিচা বিছানো মেট্রো!
বাংলাদেশের ট্রেনে-বাসে, আশা করা যায় মেট্রোরেলেও খাবার নিয়ে ওঠার পাশাপাশি খাবারের খালি প্যাকেট বা উচ্ছিষ্ট ফেলে না আসলে তো আপনি প্রকৃত বাঙালিই নন। কিন্তু এইভাবে প্রকৃত আমেরিকান সাজতে গেলেই গুণতে হবে জরিমানা। আমেরিকার মেট্রোরেলগুলোতে বিছিয়ে রাখা বিশেষ কার্পেটগুলো যেন খাবার লেগে ময়লা হয়ে না যায় সেজন্যই এই ব্যবস্থা। অবশ্য বাংলাদেশের মেট্রোতে কার্পেট বিছিয়ে রাখলে তা কতদিন অক্ষত থাকতো তাও একটা ভাবনার বিষয়!
লুকোচুরি লুকোচুরি মেট্রো!
ধারণা করা হয়, আমেরিকা-সোভিয়েত স্নায়ুযুদ্ধের সময় যোসেফ স্তালিন মস্কো মেট্রোরেলের নীচে মাটির তলায় আরো একটি মেট্রো পথ বানিয়ে রেখেছিলেন, একে বলা হয় মেট্রো-২। অনেকে আবার একধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ই নাকি এই মেট্রো বানানো হয়েছিলো। গোপন মেট্রোর সাথে সংযুক্ত ছিলো গোপন একটি শহরও। অনেকে উত্তর কোরিয়াতেও এমন একটি গোপন মেট্রোর অস্তিত্ব আছে বলে দাবি করে থাকেন।
চলন্ত শিল্পপ্রদর্শনী!
ল্যুভর মিউজিয়াম বা মাদাম তুসো মিউজিয়ামে যাওয়ার টাকা নেই বলে বিশ্ববিখ্যাত শিল্পকর্মগুলো উপভোগ করতে পারছেন না? আপনার জন্যই আছে রাশিয়ার মস্কো মেট্রো। মস্কো মেট্রোর কেবিনগুলোর ছাদে আঁকা থাকে বিভিন্ন চিত্রশিল্পীদের বিখ্যাত শিল্পকর্মগুলো, যেন যাত্রীরা রাস্তায় সেগুলো উপভোগ করতে পারেন। এজন্য মস্কোর ট্রেনগুলোকে 'জলরঙের ট্রেন'ও বলা হয়ে থাকে।
ভুতের গাড়ি!
বাংলাদেশের বাসগুলোতে যেমন ড্রাইভারকে হাত দেখিয়ে বাসে উঠে পড়া যায় বা মাঝরাস্তায় “মামা মামা!” বলে দুটো আদরের ডাক দিয়ে টুপ করে নেমে যাওয়া যায়, কোপেনহেগেনে কিন্তু সেই সুযোগ নেই। কারণ কোপেনহেগেনের মেট্রোতে কোন ড্রাইভারই নেই!
রঙেই আসল পরিচয়!
চেক রিপাবলিকের রাজধানী প্রাগ শহরের মেট্রো স্টেশনের দেয়ালগুলো বিভিন্ন চড়া রঙ দিয়ে রঙ করা। ব্যাপারটা আপাতদৃষ্টিতে খুব স্বাভাবিক মনে হলেও আসলে তা না। দেয়ালগুলোর রঙ এলাকাভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। একেকটি রঙ দিয়ে একেকটি এলাকা নির্দেশ করা হয়ে থাকে।
ডিস্কাউন্ট আর্ট গ্যালারি!
সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের মেট্রোস্টেশনকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মেট্রো স্টেশন। ১৯৫০ সালে গড়ে তোলা এই স্টেশনের দেয়ালগুলোতে ছবি এঁকেছেন প্রায় দেড়শ চিত্রশিল্পী। তাই অনেকে একে দীর্ঘতম আর্টগ্যালারিও বলে থাকেন।
‘ইজ্জতদার’ মেট্রোস্টেশন!
বিশ্বের সবচেয়ে 'ইজ্জতদার' মেট্রো স্টেশন বলা চলে বুদাপেস্টের মেট্রো স্টেশনকে। কেননা, একমাত্র এই স্টেশনটিই জায়গা করে নিয়েছে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকায়!
রেকর্ড নিয়ে টানাটানি!
বিশ্বের সবচেয়ে বড় মেট্রোর রেকর্ড নিয়ে মারামারি করছে দুইটি মেট্রোসিস্টেম। একটি সিউল, অন্যটি নিউ ইয়র্ক। নিউ ইয়র্কের রয়েছে সবচেয়ে বেশি স্টেশন সংখ্যা। অন্যদিকে সিউলের আছে সবচেয়ে বেশি রুট। তবে দুঃখজনক ব্যাপার হলো, ব্যস্ততম মেট্রোর তালিকায় এদের দুজনকেই হারিয়ে দিয়েছে জাপানের টোকিও। বিশ্বের ব্যস্ততম ৫১টি মেট্রোরুটের ৪৫টিই টোকিওর দখলে!
তথ্যসূত্র: Buzfeed
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন