যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা আজীবন পদে থাকেন কেন?

৪৬১ পঠিত ... ২০:৩৪, নভেম্বর ০৯, ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগগুলোর অন্যতম। কারণ একবার একজন বিচারপতি যদি দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে নিয়োগ পেয়ে যান, তিনি আমৃত্যু ওই পদে থাকতে পারবেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যা ৩০ বছরেরও বেশি।

কিন্তু কেন একজন বিচারপতি আজীবন এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকবেন?

ওকে, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানই বিচারপতিদের এই রক্ষাকবচটি দিয়েছে। তবে সংবিধানে কোথাও স্পষ্ট করে বলা নেই যে আমৃত্যু একজন বিচারপতি তার পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন। বরং সংবিধানের তৃতীয় অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে judges (of both the Supreme Court and lower federal courts) “shall hold their offices during good behavior.” অর্থাৎ, একজন বিচারপতি যতক্ষণ পর্যন্ত ভালো ব্যবহার (দায়িত্বশীল আচরণ) করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি পদে থাকতে পারবেন। তার মানে টেকনিক্যালি বিচারপতিরা আজীবনই পদে থাকতে পারবেন। যখন কোনো বিচারকের আচরণ অসংলগ্ন, অদায়িত্বশীল ও দুর্নীতিপরায়ন হয়ে যায়, কংগ্রেস তখন চাইলে তাকে পদচ্যুত করতে পারে, যেটা বাস্তবে খুবই বিরল। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই পর্যন্ত মাত্র ১৫ জন বিচারপতিকে ইমপিচ করেছে কংগ্রেস, তাদের সবাই ছিল নিম্ন আদালতের বিচারপতি। ইমপিচ করাদের মধ্যে আবার মাত্র ৮ জনকে তাদের পদ থেকে অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে।

এই পর্যন্ত মাত্র একজন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকে ইমপিচ করার চেষ্টা করেছে কংগ্রেস। তিনি হচ্ছেন জর্জ ওয়াশিংটনের নিয়োগ দেওয়া স্যামুয়েল চেজ, ১৭৯৬ সালে। এই বিচারপতি প্রকাশ্যে পক্ষাবলম্বন করেছিলেন বলে অভিযোগ ছিল।

তাই বোঝাই যাচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতিদের মোট ৯টি সিট (নাইন বেঞ্চ কোর্ট)। রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেট, উভয় দলই চায় তাদের দলের মতাদর্শ ধারণ করেন, এমন বিচারপতিরা সেখানে থাকুক। যেহেতু বিভেদপূর্ণ ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত পাশ হতে গেলে বেশি সংখ্যক ভোটের প্রয়োজন হয়, তাই বড় দুই দলেরই ইচ্ছা থাকে অন্তত ৫ জন বিচারপতি তাদের দলের মতাদর্শ ধারণ করুক। তাই একজন প্রেসিডেন্ট যখন বিচারপতি নিয়োগ দেন, তখন অবশ্যই তিনি এমন কাউকে নিয়োগ দেন যিনি তার দলের মতাদর্শ ধারণ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের ৯ জন বিচারপতি। এর মধ্যে রুথ বেদার গিন্সবার্গ (সামনের সারির ডান দিক থেকে দ্বিতীয়জন) এ বছর ১৮ সেপ্টেম্বর মারা গেছেন।

অনেকেই হয়তো জানেন যে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতি রুথ বেদার গিন্সবার্গ সম্প্রতি মারা গেছেন, যিনি রিপাবলিকান মতাদর্শের পক্ষে ছিলেন না। যেহেতু রিপাবলিকানরা এখন ক্ষমতায়, তাই গিন্সবার্গের শূন্যস্থান নিজেদের পছন্দের বিচারপতিকে দিয়ে দ্রুত পূরণ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক্ষেত্রে ট্রাম্পকে খুবই ভাগ্যবান বলতে হবে। মাত্র এক টার্মেই সুপ্রিম কোর্টে তিনজন বিচারপতি নিয়োগের নিয়োগ দিয়েছেন। ফলে সুপ্রিম কোর্টে রিপাবলিকানদের আদর্শ ধারণকারী বিচারপতির সংখ্যা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালতে রিপাবলিকানদের ক্ষমতা আরও বেশি পোক্ত হবে এবং আগামী অন্তত ৩০-৩৫ বছর দলটি এ থেকে সুবিধা পাবে।

৪৬১ পঠিত ... ২০:৩৪, নভেম্বর ০৯, ২০২০

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top