খ্যাতিমান নির্মাতা তারেক মাসুদ সম্পর্কে যে ১০টি তথ্য আপনি নাও জানতে পারেন

২৬০০ পঠিত ... ১৯:০০, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৯

১৯৫৬ সালের ৬ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তানের ফরিদপুরে জন্মেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম চলচ্চিত্রনির্মাতা হতে যাওয়া তারেক মাসুদ। কাটিয়েছেন বৈচিত্র্যময় শিক্ষাজীবন। এরপর তারুণ্যে এসেছেন সিনেমার জগতে। বাংলাদেশের প্রথাগত বাণিজ্যিক সিনেমার বাইরে গিয়ে নির্মাণ করেছেন সিনেমা। স্রোতের বিরুদ্ধে গিয়ে পুরো দেশে সিনেমা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করেছেন নিজ উদ্যোগেই। 

অসম্ভব গুণী ও সৃজনশীল এই মানুষটির প্রয়াণটা খুবই করুণ। দেশের সড়ক ব্যবস্থার বলি হয়ে প্রাণ হারান ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট। eআরকি পাঠকদের জন্য থাকছে তারেক মাসুদের জীবন নিয়ে জানা-অজানা ১০টি ফ্যাক্টস।  

১# তারেক মাসুদ নামে পরিচিত হলেও তার পুরো নাম আবু তারেক মাসুদ।

২# তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। কিন্তু বেশি সময় কেটেছে ইংরেজি বিভাগে ও বুয়েটের স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগে। বুয়েটের ডরমিটরিতে তিনি প্রায় এক বছর থেকেছিলেন। বুয়েটের বাইরে যে কজন অনাহূত অবৈধ ছাত্র থাকতো, তাদের একটা নাম ছিল, 'কুয়াশা'। তিনিও 'কুয়াশা' ছিলেন।

৩# তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদের প্রেমকাহিনী অনেকের জানা। মজার বিষয় হলো তাদের প্রেমের যোগসূত্রে ভূমিকা রেখেছিলেন জনপ্রিয় সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবী আহমদ ছফা। 

৪# ‘মুক্তির গান’ চলচ্চিত্রে একটি দৃশ্য ছিল জাতিসংঘের সম্মেলনে জুলফিকার আলী ভুট্টোর সনদ ছিঁড়ে ফেলার ফুটেজ। এ ফুটেজ তারেক মাসুদরা জাতিসংঘ থেকে বেশ কৌশলে বের করেছেন, যাকে এক প্রকার ‘চুরি’ই বলা যায়! অর্থাৎ দেখার জন্য নিয়ে এসে ডুপ্লিকেট কপি করে ফেরত দিয়েছেন। কারণ ওই ফুটেজ বিক্রির কোন অনুমতি ছিল না।

৫# বড় হয়ে দেশবরেণ্য চলচ্চিত্রনির্মাতা হওয়া তারেক মাসুদ ছেলেবেলায় সিনেমাই চিনতেন না। স্কুলে নয়, শৈশব কৈশোর মাদ্রাসায় কাটানোয়, সেখানকার রক্ষণশীল পরিবেশের মাঝে বড় হয়ে সিনেমার সাথে পরিচয়ের সুযোগ হয়নি তার। তার দেখা প্রথম সিনেমাটি কিন্তু বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসের অন্যতম সেরা সিনেমা। সেটি ছিল আরেক গুণী চলচ্চিত্রনির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের প্রথম ছবি ‘পথের পাঁচালী’। 

৬# ১৯৮২ সালের শেষ দিকে তিনি তার প্রথম প্রামাণ্যচিত্র ‘আদম সুরত’ নির্মাণ শুরু করেন। প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের জীবনের উপর নির্মিত এই প্রামাণ্যচিত্রের নির্মাণ শেষ করতে সময় লেগেছিল দীর্ঘ সাত বছর।

৭# ২০১৮ সালে তারেক মাসুদের ৬২তম জন্মদিনে গুগল ‘মাটির ময়না’ থিমে ডুডল বানিয়ে সম্মাননা প্রদান করে। এর আগে যে গুণী বাংলাদেশিদের নিয়ে ডুডল হয়েছিল, তা শুধুমাত্র বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের জন্য ছিল। তবে এটি দেখা গিয়েছিল পুরো পৃথিবী থেকেই। 

৮# তার পরিচালিত ছবি ‘মাটির ময়না’ স্বদেশে দর্শক সমাদর পেয়েছে। আরও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো ছবিটি ফ্রান্সে চার মাস ধরে ৪৪টি সিনেমা হলে চলেছিল।

৯# সিনেমার লাইনে না আসলে কী করতেন? এই প্রশ্নের অকপট উত্তর ছিল, আমি চলচ্চিত্রকার না হলে লেখক হওয়ার চেষ্টা করতাম।

১০# দেশের দর্শক পরিচালক সম্পর্কে তার মন্তব্য, দেশের দর্শকেরা বরাবরই সুস্থ-সৃজনশীল ছবির পৃষ্ঠপোষক। মনে রাখতে হবে, আমাদের পরিচালকদের চেয়ে আমাদের দর্শকেরা হাজার গুণ শিক্ষিত। এই পরম সত্যটিকে আগে আমাদের স্বীকার করতে হবে। তাহলেই আমরা আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে পারব।

তথ্যসূত্র : চলচ্চিত্রযাত্রা, তারেক মাসুদ; উইকিপিডিয়া।

২৬০০ পঠিত ... ১৯:০০, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৯

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top