দুয়ারে দাঁড়িয়ে কড়া নাড়ছে ডাকসু নির্বাচন। প্যানেল কিংবা স্বতন্ত্র সবাই নিজের আসনটি পোক্ত করার জন্য লড়ছেন অফলাইন কিংবা অনলাইন উভয় জায়গায়। কেউ কেউ নিজে লড়ছেন আবার কারও রয়েছে নিজস্ব বট বাহিনী। কারও কারও পক্ষে দাঁড়িয়ে গেছে মিডিয়া হাউজগুলো।
এর মধ্যে ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে রিট মামলা করেছেন বাম জোটের প্রার্থী বিএম ফাহমিদা আলম।
রিট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানিয়েছেন, ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুইয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের স্পিরিটকে ধারণ করা এবং সেটি সমুন্নত রাখা। এসএম ফরহাদের বিরুদ্ধে প্রথম আলো এবং বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকাতেও তার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিভিন্ন খবর এসেছে। তারমধ্যে ছাত্রশিবির টিএসসিতে যে রাজাকারের ছবি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছিল এবং তাদেরকে জাতীয় বীর হিসেবে সম্মানিত করার যে প্রচেষ্টাটি ছিল সেটি আসলে এই ডাকসুর মূল উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্যের সাথে সরাসরি বিরোধিতা করে।
এস এম ফরহাদ তিনি আসলে বাংলাদেশ ছাত্র শিবিরের জিএস হিসেবে এখন পদে আছেন, সেই জায়গা থেকে তিনি আসলে ডাকসুর যে মূলমন্ত্র এবং মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য সেটি আমার রিটের অন্যতম বক্তব্য। এসএম ফরহাদের এ পদক্ষেপ এবং তার এই অবস্থান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং এছাড়াও আরও বিষয় তিনি আসলে নিষিদ্ধ দল ছাত্রলীগ, সেটির সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। তার কর্মকাণ্ড আমরা আসলে বিভিন্ন জায়গাতে দেখতে পাই।
এসবের মাঝে আজ জনকন্ঠ পত্রিকা থেকে ইচ্ছাকৃত বিভ্রান্তিমূলক ভূয়া খবর শেয়ার করা হয়েছে ফাহমিদা আলমের বিরুদ্ধে। তারা ফাহমিদা আলমের আপলোড করা একটা স্টোরি থেকে ভাঙা কাচের ছবি নিয়ে ফটোশপ দিয়ে আপ্লোডের তারিখ পরিবর্তন করে দাবি করেছেন ফাহমিদা জুলাই আন্দোলন মেট্রোরেলের ভাঙাকাচের ছবি শেয়ার করেছেন। তিনি আওয়ামী শোকের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। এটা নিয়ে তারা ফেসবুকে একটা ফটোকার্ড ও শেয়ার করেছে।
খবরে জনকণ্ঠ আরও লিখেছে জুলাই মাসে ফাহমিদা আলম নীরব ছিলেন এবং মেট্রোরেলের ভাঙা কাচের ছবি শেয়ার করেছেন। খবরের সাথে যে স্ক্রিনশটটি তারা ব্যবহার করেছেন সেখানে দেখা যাচ্ছে ফাহমিদা আলম ২০২৪ সালের জুলাই মাসের ৩০ তারিখ নিজের ফেসবুক প্রোফাইলের কভার ফটো আপডেট করেছে। সেই কাভার ফটোতে ভাঙা কাচের ছবি দেখা যাচ্ছে। যদিও জনকণ্ঠের ছবিটি এডিটেড ও ভূয়া। ফাহমিদা আলম মে মাসের ২ তারিখে একটা গাড়ির ভাঙা কাচের ছবি শেয়ার করেছেন তার ফেসবুক স্টোরিতে। সে ছবিকেই নিজেদের মতো করে এডিট করেছে জনকণ্ঠ পত্রিকা।
ফাহমিদা নিজের ফেসবুক স্টোরির আর্কাইভ থেকে একটা স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন কমেন্ট সেকশনে। সেখানে দেখা যাচ্ছে ভাঙা কাচের ছবির সাথে একটা গাড়ির ছবি আছে। যা দেখে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, এটি একটি গাড়ির ভাঙা কাচের ছবি।
ফাহমিদার কমেন্ট সেকশনে বট বাহিনী এসে ঘিরে ধরে বলছে যে ফেসবুকে স্টোরি ২৪ ঘণ্টা থাকে। ফাহমিদা এখন যে স্ক্রিনশট দিচ্ছে সেটাও নাকি ভুয়া। এদিকে ফাহমিদার এক বন্ধু তাকে বট বাহিনীর কথায় কান দিতে মানাও করে দিয়েছেন। বট বাহিনী হয়তো জানে না, ফেসবুকের স্টোরি গুলো ২৪ ঘণ্টা থাকলেও, ওগুলা আর্কাইভ নামের একটা সেকশনে সেভ হয়ে থাকে পরে দেখার জন্য।
জনকণ্ঠা যে ছবি দিয়েছে সেটা দেখে কোনো ভাবেই যেমন মেট্রোরেলের কাচের ছবি বলে মনে হচ্ছে না, তেমনি এটা জুলাই মাসের ৩০ তারিখও আপ্লোড করা হয়নি।
তবে, একটা ব্যাপার ভালো হয়েছে। বট আইডির রমরমা যুগের পর আমরা প্রবেশ করছি বট পত্রিকার যুগেও।
পাঠকের মন্তব্য