নদীমাতৃক বাংলাদেশের রাজধানী একসময় চারপাশ নদী বেষ্টিত নগর হিসেবে খ্যাত ছিল। অতিবৃষ্টিতে পানি সব সুরুত করে চলে যেত বিভিন্ন নদীতে। দীর্ঘদীন ধরে ঢাকায় অপরিকল্পিত নির্মানের দোষে ঢাকা এক আজব ধরনের নগরীতে রুপ নিয়েছে। ঢাকায় আসা যায়, এসে আর বের হবার জায়গা নেই। সেটা হোক মানুষ কিংবা বৃষ্টির পানি।
দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার জলাবদ্ধতা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মেয়র ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে। শহরের উত্তর ও দক্ষিণ উভয় সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, আতিকুল ইসলাম ও ফজলে নূর তাপস, তাদের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে জলাবদ্ধতার জন্য প্রায়ই জনগণের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তেন। সমালোচনা সহ্য না করতে পেরে তো একজন আহাজারি করতেন, আমাকেই কেন? বারবার আমাকেই কেন দোষারোপ করা হয়?
তারা কোথায় আছেন, কেমন আছেন খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য কল করা হলে খুব তাচ্ছিল্য করেই জিজ্ঞেস করেন, এখন তো আর দায়িত্বে নেই, এখনও কেন ঢাকার রাস্তায় পানি জমছে? নতুন কর্তৃপক্ষের সময়ে এমন ঘটনা কেন ঘটছে?
এছাড়া এটাও বললেন, দেখেন আমরা খুব ছোটো থাকতে নদীর সাক্ষাৎ পেয়েছিলাম ঢাকার আশেপাশে। সময়ের পরিক্রমায় ঢাকা জুড়ে বয়ে যাচ্ছে অংখ্য মৃত নদী। ছোটো বাবুদের থেকে শুরু করে অনেক কিশোর কখনও নদী দেখেনি। আমরা সবার কথা চিন্তা করেই এমন এক ড্রেনেজ সিস্টেম করেছিলাম, যাতে অন্তত বর্ষা কালেও যেন মানুষ নদী দেখতে পারে, নৌকা চড়ে একটু ঘুরতে পারে, ফটোশ্যুট করতে পারে।
আমরা কবিগুরুর একটা কবিতাকে একেবারে মনের ভেতরে স্থান করে দিয়েছিলাম। কবি বলেছিলেন,
আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে
বর্ষার কালে তার হাঁটু থেকে কোমড় জল থাকে।
পার হয়ে যায় গরু, পার হয় গাড়ি,
মাঝখান ঢালু তার, দুইপাশে বাড়ি।
কিছুটা অভিমান নিয়ে আরেক মেয়র বলেন, আমাদের সৃষ্টি করা সেই নদীকেই তো আপনারা ঢাকার মানুষ এখন আপন করে নিয়েছেন। অথচ আমাদের নামে কত সমালোচনা। এজন্যই কারও উপকার করতে নাই।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন