আজ ঢাকায় গ্ল্যাডিয়েটর; খুনোখুনির খেলা। গতকাল লীগের অন্তর্দ্বন্দ্বে একজনের মৃত্যু হয়েছে। শান্তি সম্মেলনে শান্তি কমিটির সদস্যরা চাপাতি নিয়ে এসেছিলো। সেই চাপাতির কোপাকুপিতে নিজ দলের মানুষকে হত করেছে আওয়ামী সদস্যরা। মানুষ খেতে খুব পছন্দ করে ক্ষমতার এই বারবি ডল। এই বারবি ডলের ছেলে-মেয়ে নাতি পশ্চিমের বেহেশতে থাকে। আর বাংলাদেশের অনাম্নী উপায়হীন মানুষের সন্তানদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরিয়ানি, উগ্রজাতীয়তাবাদের ওরস্যালাইন দিয়ে বারবি টেনে আনে গ্ল্যাডিয়েটরের নরভোজি জগতে।
যদি তুমি এই দুর্জয় মারন খেলায় জিতে উন্নয়ন ধারাপাতের শিখরে নগদ খোকন সোনা হতে পারো; তাহলে তোমারও সেকেন্ড গোলাপ বাগান হবে। এই স্বপ্নের ঘোরে; লীগের বারবির ডাকে চর দখলের লড়াইয়ে মাঠে নামে হ্যাভস নটের ছেলেরা। সামাজিক বৈষম্যের কারণে শিশুকালে পুষ্টি পায়নি; আয়োডিনের অভাবে যুক্তিহীন রাগের পশু হয়ে ওঠাদের পার্টির ফেনসিডিল মামারা ডেকে আনে, মরলে শহীদ বাঁচলে গাজি। মরলে সুবোধ বাঁচলে শিবাজি!
খুনোখুনিটা চলতে থাকে ৫২ বছর ধরে। কলাবতী শাড়ি পরে বারবি গ্ল্যাডিয়েটরের এম্ফিথিয়েটারের মসনদে বসে দেখে, ফিনিক দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসা চাপাতির কোপে বিখণ্ডিত ধড় থেকে। নরমুন্ডু নিয়ে তখন দেশপ্রেমের ফুটবল খেলা চলে।
বারবি টিভিতে ধারাবিবরণী দেয় প্লট সাংবাদিক, পদক কলামিস্ট, পদবী বুদ্ধিজীবী, চিড়িয়াখানার শিল্পকলা খাওয়া বানরেরা।
মৃতদেহ এম্বুলেন্সে তুলে দিতে চায়না দলদাসেরা। লাশের মিছিলের জন্য লাশ প্রয়োজন। ভোটের জন্য লাশ প্রয়োজন। ক্ষমতার সিঁড়ির ধাপে ধাপে লাশ প্রয়োজন।
লাশটাকে নিজদলের বলে দাবি তুলে মাতম তোলে দলান্ধরা। লাশের মা আহাজারি করে বলে, এই লাশ যদি তোদের দলের সম্মত্তি হয়; এই লাশ তাহলে আমার কে!
বারবি তখন কুমিরের অশ্রু চোখে মেখে ক্ষতিপূরণের চেক লাশের মায়ের হাতে তুলে দিয়ে বলে, ভোটের আগে আপনাকে এসে সাক্ষী দিতে হবে বোন। আপনি মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে বলবেন, বিএনপি হত্যা করেছিলো আপনার সন্তানকে।
বি বারবি সুন্দর করে গোলাপী শাড়ি পরে এম্পিথিয়েটারের গ্যালারিতে দেখতে থাকে বিএনপির লাশ সজীব ক্ষমতার সিঁড়ির ধাপে শুয়ে যেন ডাকছে।
সরকারি দেলোয়ার ক্যাডারের পুলিশেরা হাঁউ মাউ খাঁউ বলে ঘুরতে থাকে রক্তের নেশায়; ঐ সিঁড়িতে বিএনপির লাশ পড়বে কিন্তু বি বারবি যেন সিঁড়ি বেয়ে উঠতে না পারে।
বি বারবির ছেলে-নাতনি পশ্চিমের স্বর্গে থাকে। আর গরিব মানুষের ছেলেদের প্রলোভনের হিজবুল বাহারে চড়িয়ে স্বপ্ন দেখায়, গলির ধারের দুলু তো কী হয়েছে; যদি তুমি এই চর দখলের যুদ্ধে জিতে যাও তুমি রাজপ্রাসাদের আপেল হবে। মরলে শহীদ বাঁচলে গাজি। মরলে সজীব বাঁচলে বিন কাসিম।
গ্লাডিয়েটর যেন রক্তের হোলি খেলার সংগীতে এক অতীন্দ্রিয় মিউজিক্যাল চেয়ার হয়ে ওঠে। কে হবে উপনিবেশের মালিক। এ বারবির বাপের তালুক আর বি বারবির স্বামীর তালুক; কিচেনের রুটির বেলনা ক্ষমতার কালাশনিকভ হলে, অদৃশ্য সাবানে হাত কচলায় শিক্ষিত জন। দুর্নীতির চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দিলে, কে হবে কোটাল পুত্র, কে হবে টকশোর জাস্টিফিকেশন ভাঁড়, কে হবে ক্রসফায়ারের বেনজির কোহিনূর, কে হবে আয়নাঘরের গোয়েন্দা হাজির বিরিয়ানি বিক্রেতা।
ফকিরেরা করে রব রাতি পোহাইলো; এ বারবি ও বি বারবি ফকিরদের জমিদার বানানোর লাইসেন্স দেয়; সংসদের শেয়ার বাজারে; জলদস্যুরা আউলিয়া-দরবেশের বেশে ভিড় করে বারবি ভবনের সুরম্য বাগানে।
এ বারবির পিতার মাজারের পূণ্যস্থানে সেজদা দিলে খাদেমেরা ১০০ গুন সম্পদ বাড়াতে পারে পাঁচ বছরে। তাই দেখে বি বারবির স্বামীর মাজারের পূণ্যস্থানে সেজদা বাড়ে খাদেমের।
রাজপথে আজকের লড়াই দলদাস খুনেদের বাঁচামরার লড়াই। জনগণকে কখনো মজলুম কখনো প্রজা বলে; তাদের মুক্তির লিপসার্ভিসের কথা বলে দুটি ডাকাত দল; সংবিধানের কসম দেয়; যাত্রার আলকাপের নৃত্যের চেয়েও মনোহর এইসব থাগস অফ বেঙ্গলের রুমাল নৃত্য; যাতে ৫২ বছর ধরে ফাঁস দিচ্ছে অবরুদ্ধ জিম্মি জনগণের গলায়।
মাথার ঘায়ে কুকুর পাগল হয়ে ফেসবুকে বন বন করে ঘুরতে থাকে দলান্ধ ঘাতকেরা; রাজাকার ও রাজবদরেরা; ঠগীদের গুপ্তচরেরা। এও আবার জীবন লালবাতি এলাকার ঘিনঘিনে পিম্পের জীবন।
বি বারবি লাশের জন্য আকুল হয়ে সজীব স্যুপ খায় চুক চুক করে। এ বারবি লাশের জন্য ব্যাকুল হয়ে গয়েশ্বর কাবাব নিজ হাতে ভেজে একটু ভেঙ্গে স্বাদ নেয় ক্ষমতার অমৃতের।
নরভোজিদের এই হননযজ্ঞ চলতে থাকে অনাদিকাল ধরে; গ্ল্যাডিয়েটর; আহা মনোরম গ্ল্যাডিয়েটর।
পাঠকের মন্তব্য