নেলসন ম্যান্ডেলা সম্পর্কে যে ৮টি তথ্য আপনি নাও জানতে পারেন

৯৪৭ পঠিত ... ১৮:৩২, ডিসেম্বর ০৫, ২০২০

১#

নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মগত নাম ছিল রোলিহলালা ম্যান্ডেলা (Rolihlahla Mandela)। ১৯২০ সালে ইংরেজদের রাজত্বকালে সবাইকে ইংরেজী নাম দেওয়া হয়, যাতে ইংরেজদের ডাকতে সুবিধা হয়। তখন তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তাকে নেলসন নামটি দেন। 

 

২#

বর্ণবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার কারণে ফোর্ট হেয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যান্ডেলাকে বহিষ্কৃত করা হয়। পরবর্তীতে তিনি গ্রামে ফিরে গেলে তেমবু গোত্রের প্রধান জঙ্গিনতাবা দালিনদিয়েবো ম্যান্ডেলাকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। বিয়ে এড়াতে ম্যান্ডেলা ইস্টার্ন কেপ থেকে পালিয়ে জোহানেসবার্গে চলে যান। সেখানে তিনি একটি খনিতে নৈশপ্রহরীর কাজ নেন। 

 

৩#

ম্যান্ডেলা ছিলেন ছদ্মবেশ ধরে পালিয়ে থাকায় ওস্তাদ। তিনি বহুবার পুলিশের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন নিজের ছদ্মবেশের কারণে। তিনি প্রধানত দিনমজুর, ড্রাইভার কিংবা রাঁধুনির ছদ্মবেশ বেশি ধরতেন। এমনকি তিনি যখন ধরা পড়েন তখনও তিনি ড্রাইভারের ছদ্মবেশে সহকর্মীর গাড়ি চালাচ্ছিলেন। 

 

৪#

ম্যান্ডেলার ট্রায়ালে তিনি বিচারকদের কাছে নিজের প্রাণ ভিক্ষা চাওয়ার বদলে ‘I am prepared to die’ সংলাপে একটি বক্তৃতা দেন। সেই বক্তৃতা সেসময় বেশ সাড়া ফেলে দেয় এবং নানা জায়গায় প্রকাশিত হয়। পরবর্তিতে সে বক্তৃতার কল্যানেই হোক কিংবা ভাগ্যের লিখনেই হোক, মৃত্যুর আদেশ পাওয়ার বদলে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। 

 

৫#

কারাগারে ম্যান্ডেলা সহ আরো অনেকে নিজেদের মধ্যে গোপনে চিরকুট পাচার করতেন। খালি ম্যাচবক্সের ভেতরে, ময়লা হাড়িপাতিলের সাথে, টয়লেটের ট্যাংকের নিচে টেপ দিয়ে চিরকুট আটকে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে তাঁরা নিজেরা একবার কারাগারে আমরণ অনশন শুরু করে দিয়েছিল। এর ফলে কারাগারে তাদের অবস্থার উন্নতি হয় এবং নানা সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়। 

 

৬#

কারাগার থাকাকালে সত্তরের দশকে ম্যান্ডেলা একটি স্মৃতিকথা লিখেছিলেন। তারই কিছু অনুলিপি তিনি প্লাস্টিকের কৌটায় মুড়িয়ে কারাগারের সবজির বাগানে লুকিয়ে রেখেছিলেন। সে সময় বন্দী ম্যাক মহারাজের মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। ম্যান্ডেলা ভেবেছিলেন, মহারাজকে দিয়ে সেই অনুলিপিগুলো বাইরে পাচার করবেন। তবে কারা কর্তৃপক্ষ ওই বাগানের মধ্যে দেয়াল তৈরি করতে গেলে ওই কৌটা তাদের হাতে পড়ে। এর শাস্তিস্বরূপ ম্যান্ডেলার পড়াশোনার সুযোগ-সুবিধা বাতিল করা হয়। 

 

৭#

নেলসন ম্যান্ডেলার ২৭ বছরের কারাগারের বন্দী জীবনের মধ্যে ১৯৬২ থেকে ১৯৮২ সাল তিনি কাটিয়েছিলেন রোবেন দ্বীপে। সেখানে তাঁকে দুই মিটার দৈর্ঘ্য ও আড়াই মিটার প্রস্থের কারাপ্রকোষ্ঠে বন্দী রাখা হয়। তাতে একটি মেঝেতে করা বিছানা আর প্রাকৃতিক কাজকর্ম সাড়ার জন্য একটি বালতি ছাড়া ছিল না কিছুই। বছরে তিনি শুধু একজন দর্শনার্থীর দেখা এবং প্রতি ছয় মাসে মাত্র একটি চিঠি দিতে বা নিতে পারতেন। এত বিধিনিষেধের বেড়াজালে থেকেও ম্যান্ডেলা নিজের আইন বিষয়ে পড়ালেখা চালিয়ে গেছেন কারাগারের ভেতরে।

 

৮#

ইতিহাসে ম্যান্ডেলার চাইতে বেশি পুরষ্কার কাউকে প্রদান করা হয়নি। ১৯৯৩ সালে নোবেলে শান্তি পুরষ্কার পাওয়া ছাড়াও তাঁকে ২৫০ টিরও বেশি পুরষ্কার প্রদান করেছে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং সংস্থা। এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ৬০ টিরও বেশি সম্মানসূচক ডিগ্রি লাভ করেছেন। তিনি পুরো বিশ্বের একমাত্র মানুষ যাকে কানাডা সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দিয়েছে এবং সর্বশেষ মানুষ যাকে সোভিয়েত ইউনিয়ন লেনিন শান্তি পুরষ্কার প্রদান করেছে। 

৯৪৭ পঠিত ... ১৮:৩২, ডিসেম্বর ০৫, ২০২০

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top