ছাব্বা কা আব্বা

২৩৯ পঠিত ... ১৬:৫৫, মে ০৪, ২০২৫

18

পুণ্ডি সালতানাতের শ্মশ্রুমণ্ডিত সম্রাট শাহবাজ তজবিহ টিপছে। চোখে তার সুরমা দেওয়া; আর গলায় তাবিজ। ভাতিঝি শাহজাদী বোটক্স মরিয়ম তার কালো নিকাব সরিয়ে বলে,

: চাচাজি শুণ্ডিরাজ্যের ছাব্বা কা আব্বা রাজা দামোদর এগিয়ে আসছে লাহোরের দিকে।

: সিপাহসালার মুনির কোথায়?

: যুদ্ধের দামামা বাজার পর থেকে তিনি আত্মরক্ষা সুড়ঙ্গে ঢুকে আর বের হচ্ছেন না।

: ইয়া আল্লাহ, আমাকে বেহেশতে যাবার আগে একবার দামোদরের মুখোমুখি করো; যাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারি।

ওয়াগাহ সীমান্তের কাছে শুণ্ডিরাজ্যের সিপাহসালার অর্ণব গোস্বামীর হুঙ্কার শোনা যায়, এবার পুণ্ডিরাজ্যকে গাজা বানিয়ে ছাড়ব।

শুণ্ডিবাহিনীর উপপ্রধান ময়ূখরঞ্জন তিনটি ডিগবাজি দিয়ে বলে, জয় শ্রীরাম; জয় রাজাধিরাজ দামোদরের জয়।

কামানের ওপর বসে রিভালবার রাণী কঙ্গনা রানাওত বলে, ঠায় ঠায় ঠায়।

পুণ্ডিরাজ্যের শান্তিদূত দাড়ি-টুপি-তাবিজ পরা হামিদ মীর একটি সাদা পতাকা হাতে আত্মরক্ষার জন্য একটি গোমাতা সামনে নিয়ে আসে। হাত জোড় করে বলে, হে আসমুদ্র হিমাচলের ত্রাণকর্তা কে পরমেশ্বর, ক্ষমো ক্ষমো এই ক্ষুদ্র তুচ্ছ পুণ্ডিরাজ্যকে।

সিপাহসালার অর্ণব বলে, খামোশ। পেহেলগামের প্রতিশোধ নেবো গুনে গুনে।

হামিদ মীর বলে, আমরা ও কাজ করিনি যে গুননায়ক।

অর্ণব চিৎকার করে, সেই সত্য যা রচি আমি; আমি এও স্বপ্নে দেখেছি লাহোরের বাদশাহী মসজিদের নীচে একটি শিবমন্দির ছিল।

জয়দেব পতঞ্জলি একটি পানপাত্রে শক্তিপানীয় নিয়ে আসে; তা পান করে অর্ণব বলে, নেহাত গোমাতা সঙ্গে এনেছ, তাই প্রাণভিক্ষা দিচ্ছি। ফিরে যাও হে মওলানা হামিদ।

এমন সময় একটা রথে উড়ে আসে অক্ষয় কুমার। আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর আগে এমন উড়ন্ত বাহন আবিষ্কৃত হয়েছিল শুণ্ডি সভ্যতায়।

ওদিকে কৈলাসে গেরুয়া বসন পরে ধ্যানস্থ মহারাজা দামোদর। নেচে নেচে তার ধ্যান ভাঙ্গাতে চেষ্টা করছে আদিত্য যোগী।

মহারাজা চোখ খুলে; তারপর চোখের পলকে ভারত সাগরের নীচে মন্দিরে গিয়ে মন্ত্রপাঠ করে। সূর্যস্নান শেষে উঠে এলে তাকে কপালে লাল তিলক এঁকে যুদ্ধসাজে সজ্জিত করে অমিত শাহ। চোখের পলকে একটি ঘুর্ণন দিয়ে ছাব্বা কা আব্বা পৌঁছে যায় ওয়াগাহ সীমান্তে।

পুণ্ডিরাজ্যে কান্নার হাহাকার পড়ে যায়, অমাত্য বর্গ একে অপরের পেছনে লুকায়; সবাই দাড়ি টুপি ও তাবিজ পরে। চোখে সুরমা দেওয়া। মন্ত্রী ইসহাক দার কেঁদে কেঁদে গান করে, মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ফিস ফিস করে বলে, শুণ্ডিরাজ্যের স্বপ্নরাজ অর্ণব স্বপ্ন দেখেছে বাদশাহী মসজিদের নীচে শিবমন্দির আছে। কাজেই অন্য কোথাও আমাদের কবর খুঁড়তে বলি।

মহারাজা দামোদর ঘোড়ায় চড়ে একের পর এক পুণ্ডিরাজ্যের দাড়ি টুপি সুরমা তাবিজ পরা সৈনিকদের হত্যা করতে থাকে। পেছন থেকে কঙ্গনা শব্দ করতে থাকে ঠায় ঠায় ঠায়।

অমিত শাহ ত্রিশূলের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত করে শত্রুসেনাদের, সেনা কোথায়, সবই তো তালপাতার সেপাই, যাদের ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া যায়।

শুণ্ডিরাজ্যের সেনারা কখনো গাছের পাতা পরে, কখনও গমের শীষ বেঁধে, কখনো হাতুড়ি ও ত্রিশূল হাতে গেরিলা যুদ্ধ করতে করতে এগিয়ে যায়। পুণ্ডি রাজ্যের সৈনিকেরা কাগজের সৈনিকের মতো উড়ে যেতে থাকে।

অর্ণব চেঁচায়, গাজা করে ফেল গাজা।

আদিত্য যোগী বুলডোজার নিয়ে এগিয়ে যায় বাদশাহী মসজিদের দিকে। ছাব্বা কা আব্বা মহারাজা দামোদর সম্রাট শাহবাজের প্রাসাদের সামনে এসে হুঙ্কার দেয়, সাহস থাকলে বেরিয়ে এসো কাপুরুষ।

চারিদিকে এক অলৌকিক ঘন্টা বাজতে থাকে; আবহে সমবেত রব ওঠে, ওম নমঃ শিবায় ওম নমঃ শিবায়

হর হর বোলে নমঃ শিবায়

রামেশ্বর শিব রামেশ্বরয়ে

হর হর বোলে নমঃ শিবায় ||

 

২৩৯ পঠিত ... ১৬:৫৫, মে ০৪, ২০২৫

আরও

পাঠকের মন্তব্য

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top