একবার এক মহিলা পিতলের পানের বাটা চুরি করে পালাচ্ছিল৷ পথিমধ্যে তার সাথে এক লোকের দেখা হয়ে গেল যার হাতে ছিল ফিলিস্তিনের শান্তির জন্য চুরি করে আনা বাটা জুতা৷
তারা দুজনে একটা গভীর অনুভূতি টের পেল ভেতরে। একে অন্যের চোখে চোখে তাকিয়ে মনে মনে বলল, তুই আর আমি তো একই৷ তারপর তাদের প্রেম হয়ে গেল। অতঃপর বিয়ে।
বছরখানেক পর তাদের কোলজুড়ে এক সন্তান এল। যেহেতু 'বাটা' হাতে তার মা-বাবার প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল সেহেতু সন্তানের নাম রাখা হলো বাটা আলি৷
কালের পরিক্রমায় ডাকতে ডাকতে এই নাম হয়ে গেল বাটালি৷ বাটালি কিছুটা বড় হয়ে ছুতার মিস্ত্রীর কাছে গেল কাঠের ফার্নিচার বানানোর কাজ শিখতে৷ সেখানে গিয়ে সে দেখল, কাঠকে চেঁছে চেঁছে সমান করার জন্য যে যন্ত্র সেটার নামও বাটালি।
বাটালি একদিন বাটালি হাতে কাঠ চাঁছার কাজ করছিল। সেই সময় পাশ দিয়ে একটি প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা যাচ্ছিলেন। কী ভেবে তিনি হঠাৎ থমকে দাঁড়ালেন। তারপর কাছে এসে বাটালিকে বললেন, তোমাকে আমার বড্ড আপন মনে হচ্ছে। তোমার শরীর থেকে আমার প্রিয় কারখানার ঘ্রাণ আসছে।
বাটালি বলল, আমিও একটা গেরান পাই মাজে মাজে। আমারে আপনার কারখানায় নিয়া চলেন, দেখি আসলেই এই গেরান কী না।
এরপর বাটালি যখন ওই লোকের কারখানায় এল, দেখল এটা মূলত বাটার ফ্যাক্টরি। পুরো কারখানা জুড়ে সবাই মাখন বানাচ্ছে। বাটালি বলল, ছার, আমার শইল থেইকা তো এই গেরান আহে না। অন্য গেরান আহে। জুতার মতো গেরান।
লোকটা বললো, শালা যা ভাগ! স্নেহ করে স্নেহজাতীয় কারখানায় আনলাম, আর তুই চিনলি জুতা!
লোকটাকে পাগল ভেবে বাটালি সেখান থেকে বের হয়ে এল। পরে দেখল, এক জায়গায় বাটারবন আর বাটালি গুড় বিক্রি হচ্ছে। সেটা ক্রস করে সামনে যেতে যেতে তার অনেক গরম লাগতে শুরু করল। পরে সে এসির বাতাস খেতে একটা শো রুমে ঢুকে পড়ল।
ঢোকামাত্রই সে আঁৎকে উঠে দেখল, সেখানকার সব জুতারা তার দিকেই ছুটে ছুটে আসছে। কিছুক্ষণের মধ্যে সব জুতা তার শরীরের সর্বত্র জড়িয়ে গেল। সে কিছুই বুঝতে পারছে না। কানের কাছে একটা জুতা ফিসফিস করে বলে উঠল, তোর শরীর থেকে আমার ছেলের ঘ্রাণ আসছে।
বাটালি বলল, আপনে কে?
পাশ থেকে আরেকটা জুতা কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বলল, ও শান্তি, আর তুই হচ্ছিস শান্তির ছেলে।
পাঠকের মন্তব্য