এক সময় ধান কাটার মৌসুম মানেই ছিল ছাত্রলীগের ‘শ্রমিক বেশে সেলফি’ উৎসব। তখন তারা ধানক্ষেতে নামত গামছা মাথায়, হাতে কাস্তে (অবশ্য সেটাও মাঝেমধ্যে ধরা হতো শুধু ক্যামেরার ফ্রেমে থাকার জন্য)। দুটো গোছা ধান কাটার পরই শুরু হতো বিশাল ফটোসেশন। এরপরে ধান বেচাকেনার খবর না থাকলেও ইনবক্সে তখন চাটুকারদের লাইন লেগে যেত।
কিন্তু সময় বদলেছে। এখন ছাত্রলীগ আর ক্ষমতায় নেই। ফলে ধানক্ষেতেও নেই তাদের ঝলমলে উপস্থিতি। শূন্য ধানক্ষেত আর একলা কৃষকদের দেখে এগিয়ে এসেছে এক নতুন শক্তি—ছাত্রশিবির। কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর মহান ব্রত নিয়ে শিবিরের তরুণ কর্মীরা মাঠে নেমেছে। তবে ছোট্টো একটা ‘মিস্টেক’ হয়েছে—তারা কাস্তে নয়, হাতে এনেছে ক্ষুর! কোনো এক অদ্ভুত বিপ্লবী কল্পনায় তারা ভেবেছে, ক্ষুর দিয়েই সহজে ধান কাটা যায়। ফলাফল? ক্ষেতে ঢুকতেই, একঝাঁক ক্ষুর হাতে মানুষ দেখে কৃষকরা ‘ডরে আমার রগ কাঁপতাছে বলে’ দৌড়ে পালাচ্ছেন।
বিষয়টিতে শিবির কর্মীরা প্রথমে মনোকষ্ট পেলেও পরে কৃষকদের বুঝিয়ে বলেছেন, এবার তারা ক্ষুর দিয়ে শুধু ধানই কাটতে এসেছেন। আত্মপ্রকাশ না করা শিবিরের এক নেতা আমাদের বলেন, কৃষক ভাইদের আমাদের পক্ষ থেকে চুমু চুমু চুমু। আমরা তাদের ভালোবাসি, অহেতুক আমাদের ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। ক্ষুর দিয়ে ধানকাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং হলেও বিষয়টিকে কিছুদিনের মাঝেই রপ্ত করে ফেলতে পারবেন বলে বিশ্বাস আছে তাদের।
তবে মাঠে কাজ করতে করতে দেখা দিয়েছে নতুন আরেক বিপদ। শিবিরের কিছু কর্মী অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় কিছু লোক তাদের কাটা ধানের ১০% ভাগ চেয়ে বসেছে। জিজ্ঞেস করা হলে তারা মুখ টিপে হেসে বলেন, ভাই, কোন দলের লোক বুঝতে পারতেছি না। তবে উনারা বলেছেন দ্রুত নির্বাচন দিলে তারাও ধান কাটতে নেমে যাবেন।