গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কাজ কিংবা বিশেষ কোনো স্থাপনা উদ্বোধন করতে মন্ত্রী কিংবা ভিআইপিরা আসতেই পারেন। কিন্তু তাই বলে এসি? এমন এক নজিরবিহীন ঘটনার দৃষ্টান্তই দেখা গেছে ফেসবুকের হোমপেজে খুঁজে পাওয়া এক ছবিতে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের এজলাসে 'শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র' অর্থাৎ সোজা বাংলায় (!) এসি উদ্বোধন করেন আইনমন্ত্রী জনাব আনিসুল হক। ফলকে উল্লেখিত তারিখ থেকে জানা যায়, গ্রীষ্মপ্রধান বাংলাদেশে এই অভূতপূর্ব ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ।

এই অসাধারণ ঘটনাটি নিয়ে বিস্তারিত জানতে eআরকির শীতাতপ বিশেষজ্ঞ দল দায়রা জজ আদালতে যায়। এজলাসে ঢুকতেই তারা আবিষ্কার করেন, বাংলার নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া ছেড়ে তারা যেন চলে এসেছেন তুন্দ্রার বরফ আচ্ছাদিত অঞ্চলে। এই শীতের উৎস খুঁজতে আমাদের দলটি দায়রা জজ আদালতের ইন্টেরিয়র ম্যানেজারের কক্ষে। ধোঁয়া ওঠা গরম কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে তিনি আমাদের বলেন, ‘আদালত জায়গাটা কেমন তা তো আপনারা বুঝতেই পারেন। বাদী আর বিবাদী পক্ষের উত্তপ্ত বাক্যালাপে আমাদের এজলাস সারাক্ষণ থাকে আগুন গরম। এমনিতেই আমাদের দেশে গরমটা একটু বেশি, তার মধ্যে এই গরম আদালতে যদি শীতাতপ নিয়ন্ত্রনের কোন ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে তো আমাদের নির্ঘাত সেদ্ধ হয়েই মরতে হবে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, এই শীতাতপ নিয়ন্ত্রন যন্ত্রটি আমাদের জন্যে কতটা দরকারি ছিলো!’
কিন্তু এই 'শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র' বা এসি উদ্বোধন করতে মন্ত্রীর ভূমিকা কী, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আরে ভাই, গরম আদালতের এজলাসে এই যে প্রাণ জুড়ানো শীতের ছোঁয়া পাচ্ছি, যখন প্রশ্ন করা হবে, ‘এই শীতের পরশ কে দিয়েছে?’ তখন কী উত্তর দিবো? তাই মাননীয় মন্ত্রীর উপস্থিতিতেই আমরা এই 'শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র উদ্বোধন করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের বাথরুমের হাত শুস্ককারী যন্ত্র বা হ্যান্ড ড্রায়ারটি বেশ কিছুদিন ধরেই কাজ করছে না। এতে করে বাথরুম থেকে বের হওয়ার পর কারো সাথে হাত মেলাতে গেলে অনেকেই বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচনের মৌসুম দেখে কোন মন্ত্রীর শিডিউল পাওয়া যাচ্ছে না দেখে আমরা হাত শুস্ককারী যন্ত্রের উদ্বোধন করতে পারছি না।’

