যে ১০টি কারণে আপনি একজন ইঞ্জিনিয়ারকে বিয়ে করবেন

১৩৩৭৩ পঠিত ... ১৬:২৭, জুন ০৫, ২০১৭

পাত্র হিসেবে আমাদের দেশে প্রবাসী, ডাক্তার এবং ইঞ্জিনিয়াররা যে শীর্ষে আছেন, তা মোটামুটি সবারই জানা আছে। তবে শুধু একটি সফল ক্যারিয়ারের কারণেই নয়, পাত্র হিসেবে একজন ইঞ্জিনিয়ারকে বেছে নেয়ার আছে আরও ১০১টি কারণ। বাকি ৯১টি নাহয় নিজেই আবিষ্কার করুন, eআরকি আপাতত ভেবেছে এমন দশটি কারণ, যে সব কারণে পাত্র-বাজারে একজন ইঞ্জিনিয়ার ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ হতেই পারেন! 

১। আপনি আপনার বাচ্চার লেখাপড়া নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে চান? বাচ্চার হোম টিউটর থেকে শুরু করে আরো নানা বিষয়ে? আপনার স্বামী তাহলে অবশ্যই একজন ইঞ্জিনিয়ারের হওয়া উচিত। ইঞ্জিনিয়ারদের ভার্সিটির চার বছর মূলত কাটে টিউশন করিয়ে। নিজের পড়ালেখার চেয়ে অন্যের পড়ালেখা নিয়েই তাদের চিন্তাভাবনা বেশি! তাই ইঞ্জিনিয়ার বিয়ে করলে আপনার বাচ্চার পড়ালেখা নিয়েও আপনাকে চিন্তা করতে হবে না, তাদের ঘাড়ে বিষয়টা চাপিয়ে দিয়ে একেবারে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন।

২। ইঞ্জিনিয়ারদের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, তারা অভিযোগ করতে জানে না বা করে না। কিংবা ব্যাপারটা এমন, ভার্সিটির চার বছরে তারা অভিযোগ করতে ভুলে যায়! এক সেমিস্টারে চব্বিশটা করে সিটি, পাঁচটা করে ল্যাব কুইজ দিতে দিতে অভিযোগ কীভাবে করতে হয়, তা তাদের আর মনেই পড়ে না! অভিযোগ করতে জানে না এমন একজনকে বিয়ে করার চাইতে বড় সুখ আর কী হতে পারে বলুন?

৩। একটি সুখী সংসারের জন্য একজন স্বামীর অবশ্যই উচ্চ পর্যায়ের মেনে নেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। আর ইঞ্জিনিয়ারদের মেনে নেবার ক্ষমতা লেভেল হলো, ওয়ার্ল্ড ক্লাস! প্রতি সেমিস্টারে অধিকাংশ সিটিতে দশের নিচে নাম্বার পাবার পর তারা এক সময় মেনে নিতে শুরু করে যে, এই পৃথিবী অনেক নিষ্ঠুর, তাদের জন্যে এখানে কিছু নেই। এক্সপেক্টেশন লেভেল আগেই শূণ্যের কোঠায় চলে যায়। ধরুন, আপনি তাদের সঙ্গে ঝগড়া তো ঝগড়া, রেগেমেগে দুয়েকটা চড় থাপ্পড়ই মেরে দিলেন, তাদের কিচ্ছু আসবে যাবে না। স্বামী হিসেবে এর চেয়ে বেশি যোগ্যতা আর কী লাগে? 

engineer3

৪। আপনি নিশ্চয়ই এমন কাউকে চান, যে বিয়ের পর ঝগড়া বিবাদ হলে আপনি যা বলেন তাই শুনবে, নিজ থেকে কিছু বলবে না। তাহলে দোহাই লাগে, ভুল পথে পা না বাড়িয়ে একজন ইঞ্জিনিয়ারকেই বিয়ে করুন। ভার্সিটির চার বছর এরা দৈনিক তিনবেলা খাবার খাওয়ার মত করে স্যারদের গালি খেয়ে অভ্যস্ত, ক্লাসে দেরি করে আসো কেন, ক্লাসে অমনোযোগী কেন, ল্যাবে বসে ঘুমাচ্ছ কেন, ক্লাস টেস্টে এত কম নাম্বার পেলে কেন... আরও হেনতেন নানা কারণে তারা খালি স্যারদের ঝাড়ি খেয়ে এসেছে, এবং এর উত্তরে তারা কখনো একটা কথাও বলে নি। অথবা, বলতে পারে নি! বিয়ের আগেই ‘কেউ ঝাড়ি দিলে খেতে হবে, উত্তর দেবার কিছু নেই’- এই ট্রেনিং তাদের বেশ ভালো হয়ে গেছে!

৫। আপনি এমন কাউকে চান যার কাছে আপনি বিভিন্ন আকাশপাতাল অসম্ভব বস্তুও দাবি করতে পারবেন? তাহলে প্লিজ, ইঞ্জিনিয়ারদের দিকে ফিরে তাকান। ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে আপনি যা ইচ্ছা দাবি করতে পারবেন, আপনি যদি বলেন আমাকে ঐ সৌরজগতের সবগুলা গ্রহ দিয়ে একটা মালা বানিয়ে দাও দেখবেন তারা গাধার মত সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছে। এর পেছনেও তাদের একাডেমিক ট্রেনিং রয়েছে। অমুক প্রজেক্ট দুই ঘন্টার মধ্যে শেষ করো, অমুক এসাইনমেন্ট পাঁচ মিনিটের মধ্যে করো, তমুক মেশিন দেড় দিনে বানিয়ে দাও, স্যারদের এমন অসম্ভব চাওয়া তারা কীভাবে কীভাবে যেন চার বছরে একাধিক বার পুরণ করেছে। অসম্ভব সম্ভব করা, শুধুমাত্র একজন ইঞ্জিনিয়ারেরই কাজ! 

৬। আপনি কি আপনার সংসারের বিভিন্ন হিসাব নিকাশ এবং জটিলতা স্বামীর মাথায় ফেলে দিয়ে দিন দুনিয়ার সকল চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে চান? তাহলে চোখ বন্ধ করে যে কোন ইঞ্জিনিয়ার বিয়ে করে ফেলুন। এরা প্রতি টার্মে তিন ক্রেডিটের কোর্সে পাশ করতে তিনটা সিটির কোনটাতে কত পেতে হবে, এটেন্ডেন্সে কত পার্সেন্ট মার্ক্স পেতে হবে, আর সেই মার্ক্স পেতে হলে কয়দিন ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে, এসব হিসাব নিকাশ করতে করতে ইঞ্জিনিয়ারিং এর পাশাপাশি হিসাববিজ্ঞানেও মাস্টার্স করে ফেলে! কেউ কেউ তো পরীক্ষার হলে প্রশ্ন পেয়ে প্রথমে ক্যালকুলেটর দিয়ে হিসাব করে নেয়, পাশ করতে হলে কোন প্রশ্নে কত নাম্বার পাওয়া লাগবে... এরপর প্রশ্নের উত্তর করা শুরু করে। তাই জটিল সাংসারিক হিসাব নিকাশ যদি স্বামীর ঘাড়েই দিতে চান, একজন ইঞ্জিনিয়ারের চেয়ে ভালো পাত্র আর কে হতে পারে!

৭। যেই স্বামীকে পটানো যত সহজ, সে তত আদর্শ স্বামী! একজন ইঞ্জিনিয়ার এখানেও ফুল মার্ক্স পাচ্ছেন। তাদের পটাতে খুব কষ্ট হবে না, তার সঙ্গে আপনি একটু প্রেম প্রেম কথাবার্তা বললেই তারা একেবারে গলে যাবে। মূলত ভার্সিটির চার বছর তারা অনেক মেয়ের সঙ্গেই প্রেম করার চেষ্টা করে, কিন্তু কারও কাছেই তারা ‘কাঠখোট্টা’, ‘বেরসিক’ এসব ট্যাগ পেয়ে আর পাত্তা পায় না। তার মধ্যে পড়ালেখার চাপে পিষ্ঠ হয়ে গার্লফ্রেন্ডকেও সময় দেয়ার সময় কই! শেষমেশ তারা ধরেই নেয়, তাদের জীবনটা এমনিই হয়ত ফরেভার এলোনের মত কেটে যাবে! তাই বিয়ের পর বউ যদি একটু স্নেহ ভরা দৃষ্টিতেও তাকায়, তাতেই তাদের চোখে পানি চলে আসে, আবেগে তারা কেঁদে ফেলেন। সুতরাং, সময় থাকতে বুঝে নিন, ইঞ্জিনিয়ার বিয়ে করলে আপনাকে ইনপুট দিতে হচ্ছে কম, আপুটপুট পাচ্ছেন বেশি। 

৮। আপনার রান্না ভাল না? রান্নাবান্নায় একদম আগ্রহ নেই বলে সারাদিন মায়ের কাছ থেকে শুনতে হয় ‘সংসার করবি কীভাবে?’। চিন্তা নেই, আপনার জন্য আছে সহস্রাধিক ইঞ্জিনিয়ার পাত্র! ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটির হোস্টেলগুলোতে তারা খাবার সময় মাঝেমাঝে ডাল ভেবে হাত ধোয়ার পানি দিয়ে ভাত খেয়ে ফেলে, আর হাত ধোয়ার পানি ভেবে মাঝেমাঝে ডাল দিয়েই হাত ধুয়ে এসেছে। প্লেটের মাঝে আবিষ্কার করেছে তেলাপোকার পা সহ আরও অনেক কিছু। দুনিয়ার সব অখাদ্য খেয়ে (এমনকি মাঝে মধ্যে সারাদিন না খেয়েও!) তারা আসলে ইঞ্জিনিয়ার হয়। তাই আপনার রান্না যতই খারাপ হোক, তরকারিতে  যদি নিয়মিত চুল আরও অনেক কিছু পাওয়া যায়, ইঞ্জিনিয়ার স্বামী সেটাকেই অতি সুখাদ্য বলে ধরে নেবেন!

৯। পুরুষ মাত্রই দিন তারিখ দিবস মনে রাখতে অক্ষম। যে স্বামীর দিন তারিখ সব মনে থাকে, তার চেয়ে আদর্শ স্বামী তো পরের কথা, আদর্শ প্রেমিকও হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের ওপর কেউ যেতেই পারবে না। হাজার হাজার সূত্র, লাখ লাখ পরীক্ষার তারিখ আর ল্যাব-সেশনালে মান ভ্যালু হাবিজাবি মনে রাখতে রাখতে, তাদের স্মৃতিশক্তি চলে যায় অন্য পর্যায়ে। আপনার জন্মদিন, ম্যারেজ ডে এসব তো বটেই, আপনার বান্ধবীদের জন্মদিন ম্যারেজ ডে এসবও সে ঠিকঠাক মনে রাখতে পারবে!

১০। আপনি এমন কাউকে তো নিশ্চয়ই চান, যাকে আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন? যে জীবনের সর্বোচ্চ খারাপ পরিস্থিতিতেও আশাবাদী হতে পারে! তাহলে আপনি আর কারও কথা চিন্তাই করবেন না, বিয়ে করুন একজন ইঞ্জিনিয়ারকে। তারা ভার্সিটি লাইফের চার বছর কোন পড়ালেখার ধারে কাছে দিয়ে যাবে না, ক্লাসে গিয়ে ঘুমাবে, পরীক্ষা টরীক্ষাও দেবে না ঠিকমত, তবু পরীক্ষার আগে তারা আশাবাদী হতে পারে, পাশ তারা করবেই! হয়ও তাই, কেমন করে যেন তারা প্রতিটা সেমিস্টারে পাশ করে যায়! D পেয়ে হোক, পাশ তারা করবেই! একটা প্রশ্ন কমন না পড়লেও তারা আশা রাখতে পারে, এদিক ওদিক থেকে জোগাড়যন্ত্র করে ঠিকঠাক পাশ মার্ক তুলে হল থেকে বেরোতে পারবেই! তাই ইঞ্জিনিয়ার বিয়ে করুন, কেমন করে সকল নিরাশা আর খারাপ সময় কাটিয়ে জীবনটা পার হয়ে যাবে, নিজেই বুঝতে পারবেন না।

১৩৩৭৩ পঠিত ... ১৬:২৭, জুন ০৫, ২০১৭

Top