সাকিব আল হাসান নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে খাওয়ার টেবিলের কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন। সেখানে পোস্ট করা কয়েকটি ছবির মধ্যে একটিতে দেখা যায়, সবাই খাচ্ছে এবং গৃহকর্মী পাশে দাঁড়িয়ে আছে। ব্যস! বাঙালি ফেসবুকীয় বিপ্লবী এবং মুখোশ-মানবতাবাদী 'গুটিকয়েক' লোকজন সেই ছবি নিয়ে সমালোচনায় মেতে ওঠেন! সাকিব কী অমানবিক, কাজের মেয়েটাকে পাশে দাঁড় করিয়ে রেখে নিজেরা টেবিলে বসে খাচ্ছেন! (তারা তাদের ব্যক্তিগত জীবনে কী করেন, সেটা অবশ্য আমাদের জানা নেই!)
যদিও মূল ব্যাপারটি ছিল এমন, অন্য ছবিগুলোর মধ্যে এমন ছবিও আছে যেখানে সাকিব নিজের পরিবার এবং গৃহকর্মী মেয়েটির সাথেই একই টেবিলে বসেছেন। অর্থাৎ মেয়েটি পাশে দাঁড়িয়ে ছিল, ব্যাপারটি এমন নয়।
সাকিব আল হাসানের প্রতি কিছু 'ফ্রাস্টেটেড' মানুষের এমন দৃষ্টিভঙ্গী এবং অযথা অযৌক্তিক ছিদ্রানেষিতার কারণ আমাদের জানা নেই। তবে তারা যেহেতু ভুল ধরতেই চান, আরও বেশ কিছু ভুল ধরতে পারতেন সাকিবের সেই ছবিতে। আরও কী কী ভুল ধরা যেত, ভেবে বের করেছে eআরকি।
১. সাকিবের বউ মেয়েটা বড় হয়েছে বিদেশে, হয়েছেও বিদেশিদের মত! কোনো বাঙ্গালিয়ানা নেই। স্বামী বাংলার এত বড় গর্ব, অথচ বউ কিনা ফেসবুকে ছবি-টবি ইংরেজিতে ক্যাপশন লিখে পোস্ট দেয়! এই বাঙলা ভাষার জন্যে কত রক্ত যে আমরা ঢেলেছি সেই ইতিহাস কি এই মহিলা জানে? বিদেশে বড় হয়েছে বাংলা ভাষার মর্ম সে কি বুঝবে। ফেসবুকে বাংলা লিখে পোস্ট দিলে কি তার কি জাত থাকতো না? সাকিব আসলে সাফল্য পেয়ে অন্ধ হয়ে গেছে, নিজের ভাষাকে ভুলে গেছে...!
২. এক টেবিলে বসেছে ঠিক আছে, কিন্তু সাকিব তো ঠিকই তার বাচ্চারে তুলোতুলো করে মুখে তুলে খাওয়াচ্ছে। কাজের মেয়েটি গরীবের সন্তান বলে তাকে মুখে তুলে খাওয়ালে কী এমন পাপ হতো। জন্মই মেয়েটির আজন্ম পাপ...!
৩. ইশ! মেয়েটি কত আগ্রহ ভরে খাচ্ছে ছবিতে তাকালেই বুঝা যায়। আর শিশির যে বজ্জাত তা তো তারে দেখলেই বোঝা যায়, নিশ্চয়ই মেয়েটিকে সারাদিন খাটায়া খাটায়া মারে। তিনবেলা ঠিক মতো ভাত খেতে দেয় না, ও মনে হয় ওসব ভালো খাবার কোনো দিন খায় নি...!
৪. সাকিব আর শিশির কত দামি দামি জামা কাপড় পরে এসেছে, আর কাজের মেয়েটিকে সস্তা একটা জামা কিনে দিয়েছে। কেন, তোমার বউয়ের মত মেয়েটিকেও কি বিদেশি গাউন কিনে দেয়া যায় না? গরীবের ওপর এত অবিচার আল্লাহ সইবে না... আসলে সফল হলে মানুষ নিজের শেকড়কে ভুলে যায়...!
৫. যাও, করুণা করে মেয়েটিকে পাশে বসতে দিয়েছে ঠিকই, তাও একেবারে এক কোনায়! কোনায় পড়ে মেয়েটি কী খাচ্ছে না খাচ্ছে সেদিকে বিন্দুমাত্র খেয়ালই নেই কারো। কে জানে, কিছুক্ষণ পরে মেয়েটা হয়তো খাওয়া শেষ না করেই মেয়েটাকে উঠে গিয়েছিল কিনা...!
৬. আজকাল এসব ছবিতে টবিতে একদম বিশ্বাস নেই। সাকিব আর সাকিবের বউ যে অহংকারী, তারা তাদের পাশে বসাবে কাজের মেয়েকে? গিয়ে দেখুন এটা ফটোশপ কিনা। আরেক জনের মুখের ওপর কাজের মুখ লাগিয়ে দিয়েছে হয়তো।
৭. সাকিব আর শিশির তাদের বাচ্চাকে নিয়ে কত সুন্দর সুন্দর পোজ দিয়ে ছবি তুলছে। অথচ মেয়েটাকে একবারে কোনায় বসিয়ে রেখেছে যাতে করে তার কোনো ছবি না ওঠে। প্রোফাইলে কাজের মেয়ের সাথে তো একটি ছবিও নেই। নিজের মেয়ের সাথে তো হাজার হাজার ছবি...!
৮. দেখেন আবার এই ছবি মিডিয়াকে দেখানোর জন্যই তুলছে কিনা... কত যে এক টেবিলে বসে খায়, জানা আছে...!
৯. খেলা রেখে সাকিবের এত পরিবার নিয়ে খাওয়া দাওয়া কিসের?
১০. আইপিএল খেলে দামি দামি রেস্টুরেন্টে খাওয়ার টাকা কামায় শুধু। মাঠে তো খেলার কিছু দেখি না...!
