বাংলাদেশি ১০টি SQUID GAME

১৯৯ পঠিত ... ১৭:৩৭, জানুয়ারি ১১, ২০২৫

14

বাংলাদেশে বাস করা আর স্কুইড গেম খেলাটা অনেক ক্ষেত্রেই সেম। বাংলাদেশে চলতে ফিরতে এমন অনেক ঘটনার মধ্য দিয়ে যেতে হয় আমাদেরকে যার প্রত্যেকটা ঘটনা একটা স্কুইড গেমে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। যেখানে পদে পদে বিপদ কিন্তু সফল হলেও সৌভাগ্যের গোল্ডেন টিকিট। এমন কিছু গেমের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই এখানে। 

১। দৌড়ে ট্রেনে ওঠা

ট্রেন চলে এসেছে প্ল্যাটফর্মে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে যাত্রী নিয়ে আবার ছুটবে। ভিড়-ভাট্টার কারণে অনেকেই সময়মতো ট্রেনে উঠতে পারেন না। দেখা যায় ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছে তখনও ট্রেনে উঠছে অনেকে। অনেক সময় চলন্ত ট্রেনের পেছনে দৌড়ে উঠতে দেখা যায় যাত্রীদের। উঠতে পারলে গোল্ডেন টিকিট, একটু ভুল হলেই… স্কুইড গেম।

২। চলন্ত বাসে ওঠা নামা

আমাদের এখানে বাসে চড়তে হলে কিংবা নামতে হলে আপনার কলিজা শুধু কলিজার মধ্যে থাকলে হবে না, আপনার কলিজা থাকতে হবে পুরো দেহজুড়ে। বাংলাদেশের বাসের রাজধানী ঢাকায় বাস কখনও ঠিকমতো থামেই না। বাসে উঠতে চান কিংবা নামতে চান, আপনার জন্য ড্রাইভার সর্বোচ্চ আস্তে করে চালাতে পারবে। বাস থামানো কী সেটা তিনি জানেনই না। চলন্ত অবস্থায় বাস থেকে উঠতে বা নামতে গেলে কেমন লাগে সেটা আমরা সবাই জানি। এক সেকেন্ড এদিক সেদিক হলে আপনি বাসে উঠতে বা নামতে গিয়ে নিজেকে হাসপাতালের মর্গে খুঁজে পাবেন।

৩। রাস্তা পার হওয়া 

রাস্তা পার হবার মতো ডেঞ্জারাস গেম আর কোনোটা আছে কিনা সেটা নিয়ে গবেষণা করা যেতে পারে। জেব্রা ক্রসিং বলে যে একটা বিষয় আছে, সেটা আসলে বই পুস্তকেই দেখা মেলে। রাস্তা পার হতে হলে আপনার চোখ হতে হবে শকুনের মতো, আপনার হাত-পা হতে হবে বাঘের মতো। আর আপনার ব্রেনকে কাজ করতে হবে সুপার কম্পিউটারের মতো গতিতে। আপনি যদি এসব করতে ব্যর্থ হোন তাহলে রাস্তার ওপারে না গিয়ে আপনাকে পৌঁছতে হবে জীবনের ওপারে। 
৪। ঝুলে ঝুলে রঙমিস্ত্রীর কাজ করা

বড় বড় বিল্ডিঙে যারা রঙ করেন তাদের জন্য প্রত্যেকটা মুহূর্তই যেন স্কুইড গেম। এখানে পদে পদে পা পিছলে যাবার ভয়, দড়ি ছেড়ার ভয়, সাথে ভয় থাকে উপর থেকে কন্সট্রাকশনের কোনো রড মাথায় এসে পড়ার। এখানে সার্ভাইভ করতে হলে যিনি কাজ করেন তাকে হতে হবে সদা জাগ্রত, কারণ যেকোনো সময় যেকোনো কিছু হয়ে যেতেই পারে ।

৫। মোহাম্মদপুরে চলাফেরা

মোহাম্মদপুরে চলাফেরাকে হালকাভাবে নেওয়ার কিছু নেই। এমনও হতে পারে, মোহাম্মদপুরে হাঁটতে হাঁটতে শীতকালে কেউ আপনাকে বরফ ঠেকিয়ে মোবাইল মানিব্যাগ রেখে দিচ্ছে। যদি আপনি ঠান্ডা পানিকে ভয় না পান তখন প্যান্টের পেছন থেকে বের হয়ে আসবে ছুড়ি কিংবা বন্দুক। মোহাম্মদপুরে হাঁটতে হলে আপনাকে স্কুইড গেমসের প্রত্যেকটা এপিসোড দেখে রাখতে হবে যেন যেকোনো সময় যেকোনো বিপদের জন্য প্রস্তুত থাকতে পারেন। 

৬। ওভারক্রাউডেড লঞ্চে ওঠা

বাংলাদেশের লঞ্চগুলোতে এমনিতেই ফিটনেসের সমস্যা আছে। এর সাথে আছে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করার প্রবণতা। লঞ্চে উঠে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাবেন কী পৌঁছাবেন না সেটা নিয়ে ভবিষ্যতবাণী করার কোনো উপায় নেই। শুধু আপনাদের লঞ্চ যে নদীতে যাচ্ছে এমন না। হতে পারে অন্য একটা লঞ্চ এসে ঠুস করে বাড়ি দিয়ে ডুবিয়ে দিয়ে গেল। লঞ্চ ডুবে গেলে সাতার কেটে পার হতে না পারলে নির্ঘাত পরকাল দেখার চান্স ১০০%। স্কুইড গেমসের উচিত এটাও তাদের গেমসে অ্যাড করা।  

৭। রাজনৈতিক সমাবেশ এড়িয়ে গন্তব্যে পৌঁছানো

আপনার অফিস কিংবা স্কুল কলেজ বা যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য বের হয়ে যদি দেখেন সামনে রাজনৈতিক কোনো সমাবেশ আছে, তাহলে আপনাকে হেঁটে হেঁটে অনেক দূর আগাতে হবে। কোনো যানবাহনে আপনি সমাবেশ পার করতে পারবেন না। হেঁটে হেঁটে এগিয়ে ঐপাশে গিয়ে অন্য কোনো যানবাহন পাবেন কিনা সেটাও একটা প্রশ্ন। একমাত্র আপনার পা কিংবা আপনার কোনো অভিনব বুদ্ধিইই পারবে আপনাকে আপনার গন্তব্যে নিয়ে যেতে। এরমধ্যে যদি চেয়ার ছোড়াছুড়ির মাঝে পড়েই যান, তাহলে আপনার জীবনটাই একটা স্কুইড গেম।

৮। সরকারি হাসপাতালে সিট পাওয়া

অসুস্থ হয়ে হাসতালে সীট পাওয়াটা অনেকটা স্কুইড গেমস জেতার মতো একটা বিষয়। আপনার মতো অনেকেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যায়, কিন্তু সিট পায় খুব কম মানুষই। স্কুইড গেমসে যেমন সবাই জেতে না, সরকারি হাসপাতালের সিটও সবাই পায় না। 

বাংলাদেশে কেউ কখনও সিলেবাস কমপ্লিট করে না। এই ফর্মুলা অনুযায়ী ধরে নিচ্ছি, বাংলাদেশে থাকতে থাকতে আপনি বাকি দুইটা গেমস এমনিতেই বুঝে গেছেন। 

 

১৯৯ পঠিত ... ১৭:৩৭, জানুয়ারি ১১, ২০২৫

Top